ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

বঙ্গবন্ধুর অন্ধভক্ত বঙ্গপাগল শফিকুল

প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ০৬ মার্চ ২০১৭

বিকেল ৫টা। মগবাজার মোড়ে যানজটে গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় আটকে আছে অসংখ্য বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। কোনো যানবাহন যেন লাইন ভেঙে যেতে না পারে অদূরে দাঁড়িয়ে ডানে-বায়ে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখছিলেন ট্রাফিক পুলিশ।

মৌচাকগামী রাস্তার মোড়ে মাইকে তখন বাজছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ মিনিট দুয়েক পরে সবুজবাতি জ্বলে উঠতেই সব গাড়ি এগিয়ে যায়। কিন্তু একটি অটোরিকশার চালককে একপাশে গাড়ি সাইড করে বসে থাকতে দেখা যায়। এ সময় অটোরিকশার ভেতর বসে থাকা যাত্রী তখন বারবার যাওয়ার তাগাদা দিচ্ছিলেন। এ দৃশ্যে দেখে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবলও খেঁকিয়ে উঠে বলে,... পাগল নাকি?? এ সময় চালককে বলতে শোনা যায়, ‘ঠিকই কইছেন, আমি পাগল, নাম আমার বঙ্গপাগল শফিকুল, বঙ্গবন্ধুর ভাষণটা আর দুই একটা লাইন হুইন্যাই চইল্লা যামু।’

কৌতূহলবশত এ প্রতিবেদক এগিয়ে যেতে দেখতে পান আর দশটা সিএনজিচালিত অটোরিকশার চেয়ে তার অটোরিকশা ও তিনি নিজেই ব্যতিক্রম। তার অটোরিকশাটির ছাদে ওপরে একটি স্টিলের তৈরি ছোট নৌকা লাগানো হয়েছে। নৌকাটির গায়ে লাল সবুজে লেখা নেত্রীর নৌকা। সামনের গ্লাসের দুই পাশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি ছবি। অটোরিকশার পেছনে একটি ডিজিটাল ব্যানারের দুই পাশে বঙ্গবন্ধু ও শেখ  হাসিনার ছবি। তার নিচে লাল কালিতে লেখা বঙ্গবন্ধুর গানের লিস্ট। এক-দুই-তিন ক্রমানুসারে ৬০টি গান লেখা।

একটু খেয়াল করতেই চোখে পড়লো অটোরিকশার মতো শফিকুলের পোশাক অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম। তার পরনে লাল সবুজ রঙয়ের ফতুয়া। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ওই অটোরিকশাচালক জানান, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও দেশ- এই তিনের প্রচারণায় অটোরিকশা নিয়ে রাজপথে নিরন্তর ছুটে চলেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সে শুনেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ আজও তার মনে গেঁথে আছে।  তিনি বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আজ তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছেন।

বঙ্গপাগল শফিকুল বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও দেশকে নিয়ে এ পর্যন্ত ৬০টি গান লিখেছেন। কোনো কিছু পাওয়ার আশায় নয়, তাদের ভালোবেসে গান লেখেন ও তাদের প্রচার করেন।

gg

তার ভাষায়, বঙ্গবন্ধু কন্যার আপনজন বলতে কেহ নাই। অটোরিকশা চালিয়ে আয়-রোজগার করাটা তার কাছে মুখ্য নয়, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রচারণা তার বড় শখ। এখনও পর্যন্ত শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পাননি, সাক্ষাৎ পেলে স্বরচিত গান গেয়ে শোনাতে চান।

তিনি এ প্রতিবেদককে তার লেখা একটি গান মুখে কথার আকারে শোনান।

দেখ, জয় বাংলার পতাকা ওড়ে শেখ মুজিবের নায় (নৌকায়)
কতো সুন্দর দেশ গড়েছে জয় পুতুলের মায়
মন ভালো যার কাজ ভালো তার বলতেছে সবাই
কতো সুন্দর দেশ গড়েছে জয় পুতুলের মায়
তেজগাঁওয়ের পাশে বানাইছে হাতিরঝিল
সিঙ্গাপুরের সাথে ভাইরে আছে কাজের মিল
মন ভালো যার কাজ ভালো তার বলতেছে সবাই
কতো সুন্দর দেশ গড়েছে জয় পুতুলের মায়
সেদিন আমি যাইয়া দেহি কুড়িল বিশ্বরোড
ওপর দিয়া চলে গাড়ি চতুর্দিকে রোড
গাড়ি কোনদা ওঠে কোনদা নামে
বোঝা বড় কঠিন দায়
কতো সুন্দর দেশ গড়েছে জয় পুতুলের মায়
জয় বাংলার পতাকা ওড়ে শেখ মুজিবের নায়
ক্যান্টনমেন্টে যাইয়া দেখি পথের ওপরে পথ
মিরপুরে হইয়া গেছে সকলে একমত
মন ভালো যার কাজ ভালো তার বলতেছে সবাই
কতো সুন্দর দেশ গড়েছে জয় পুতুলের মায়
যাত্রাবাড়ি যাইয়া দেহি রাস্তার ওপর রাস্তা
সর্বশ্রেণির জন্য নেত্রী করছে সুব্যবস্থা
বঙ্গপাগল শফিকুল কয় জাতি তারে চায়
কত সুন্দর দেশ গড়েছে জয় পুতুলের মায়।

এমইউ/বিএ