ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

নতুন মুদ্রানীতিতে গুরুত্ব পাবে বিনিয়োগ কৌশল

প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ২৮ জানুয়ারি ২০১৭

স্থিতিশীল রয়েছে রাজনৈতিক পরিবেশ। ধারাবাহিকভাবে কমছে সুদহার। তারপরও ঋণ নিচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ মন্দা থাকার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন। তাই বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশলকে গুরুত্ব দিয়ে রোববার ঘোষণা করা হবে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি।

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য (জানুয়ারি-জুন) রোববার বেলা ১১টায় এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নতি করতে না পারলে চলতি অর্থবছরে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপি প্রবৃদ্ধির অর্জন দুরূহ হয়ে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে কীভাবে বিনিয়োগে গতি ফেরানো যায়, সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাই নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি বিনিয়োগে জোর দিয়ে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জনের স্পষ্ট ঘোষণা থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

নতুন মুদ্রানীতি সম্পর্কে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, জাতীয় বাজেটের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, মুল্যষ্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও তারল্যের ভারসাম্য রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করে থাকে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণাতেও তার প্রতিফলন থাকবে। আমরা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিবো।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। সরকার মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয় ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ। ওই সময় আগামী জুন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়। তবে নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে প্রকৃত ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। ডিসেম্বর শেষেও ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের আশপাশে থাকবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। নতুন মুদ্রানীতিতেও ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ বা কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতির মতোই দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিও সংকুলানমুখী থাকবে বলে জানা গেছে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের নভেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ২৭ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে নভেম্বরে ব্যাংকিং খাতে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা ছিল অতিরিক্ত তারল্য জমে রয়েছে।

নতুন মুদ্রানীতি বিষয়ে সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগে একটা মন্দাবস্থা চলছে। অন্যদিকে মুল্যস্ফীতি কিছুটা নিম্নমূখী রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত হবে সম্প্রসারণমূলক মূদ্রানীতি প্রণয়ন করা। ফলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়লেও ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে মানুষের। এতে করে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে। তবে ঋণ যেন উৎপাদনশীল খাতে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

 ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, অর্জিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি সুসংহত করার লক্ষ্য থাকতে হবে। একই সঙ্গে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এসএমই খাতসহ ব্যক্তি বিনিয়োগ বান্ধব মুদ্রানীতির পরামর্শ দিয়েছি।

তিনি বলেন, ঋণের উচ্চ সুদহারসহ অবকাঠামোগত কিছু সমস্যার কারণে বিনিয়োগ কিছুটা কম হয়েছে। বর্তমানে সুদহার নিম্নমুখী ছাড়াও বিগত কয়েক মাসে আমাদের মূলধনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়েছে। বিনিয়োগ বান্ধব মুদ্রানীতির ঘোষণা আসলে আগামীতে এর ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

প্রসঙ্গত, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে প্রণয়ন করা হয়। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ ও বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

এসআই/এআরএস/এমএস

আরও পড়ুন