ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

সঞ্চয়পত্রের সুদহার ফের কমছে

প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭

সঞ্চয়পত্রের সুদহার আবারও কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রের সুদহার সার্বিক বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা ও করণীয় ঠিক করতে কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার ও ব্যাংকমুখী করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, নীতিনির্ধারণী ঠিক করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

সূত্র জানায়, কমিটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছে। তবে ওই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আরও কয়েকটি বৈঠকের কথা রয়েছে।

অপর এক সূত্র জানায়, সরকার সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার চায় পেনশনার, নারী ও বয়স্ক জনগোষ্ঠী যারা সঞ্চয়ের ওপর নির্ভরশীল তাদের সুবিধা অব্যাহত রাখতে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয় পর্যালোচনা করবে কমিটি। পাশাপাশি সুদহার কমালে এর প্রভাবসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে কাজ করবে কমিটি।

Saveউল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জুনে পাঁচ ও তিন বছর মেয়াদি পারিবারিক ও পেনশনসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রের সুদহার প্রতিক্ষেত্রে দেড় থেকে ২ শতাংশ কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রজ্ঞাপনের আগে পাঁচ বছর মেয়াদি পারিবারিক ও পেনশন সঞ্চয়পত্র কিনলে সরকার ১৩ দশমিক ৪৫ ও ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ হারে সুদ দিত।

প্রজ্ঞাপন অনুসারে পাঁচ বছর মেয়াদি পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১৩ দশমিক ৪৫ থেকে কমিয়ে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সুদহার ১৩ দশমিক ১৯ থেকে কমিয়ে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং তিন বছর মেয়াদি তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৫৯ থেকে কমিয়ে ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।

অন্যদিকে তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের ক্ষেত্রে ১৩ দশমিক ২৪ থেকে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১৩ দশমিক ১৯ থেকে কমিয়ে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।

এনবিআর সূত্র আরও জানায়, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের (পাঁচ বছর মেয়াদি) ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা প্রিমিয়াম সমন্বয়পূর্বক মুনাফার হার ১২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। ফলে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের সুদহার অপরিবর্তিত ছিল। একই সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কর্তনের বিধানও বহাল রাখা হয়।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতর সূত্র জানায়, অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে সরকার। জুলাই-নভেম্বর প্রান্তিকে বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার ৩১৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। বাজেটে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকিংব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয় সরকার। বর্তমানে সরকারের তেমন ঘাটতি নেই। এর প্রধান কারণ আমানতের সুদহার অনেক কম। তাই বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে না। এছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকারের ভর্তুকির পাশাপাশি আমদানি ও রফতানি খরচ কমে গেছে। তাই সরকার ঋণ না নিয়ে উল্টো পরিশোধ করছে।

এদিকে বিনিয়োগ মন্দার কারণে ব্যাংকগুলোতে জমছে অলস টাকার পাহাড়। এ সময় সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ না নেয়ায় ব্যাংকিং খাতে অলস টাকার পরিমাণ বেড়েই চলছে। তাই আমানতের বিপরীতে কয়েক দফা সুদ কমিয়েছে ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত তিন বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের আমানতে সুদহার কমেছে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ। এ কারণে অনেকেই উচ্চ সুদের আশায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন। এছাড়া শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা না থাকায় বিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতেও ভয় পাচ্ছেন।

এমইউএইচ/এএইচ/জেআইএম