জেএমবিকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা আসছে ভারত থেকে
ঝিমিয়ে পড়া নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশকে (জেএমবি) শক্তিশালী করার নির্দেশনা আসছে ভারত থেকে। ভারতে বসে এ নির্দেশনা দিচ্ছেন ত্রিশাল থেকে ছিনতাই হওয়া জঙ্গি সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি।
কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির প্রধান মাওলানা সাঈদুর রহমান হলেও বর্তমানে সানি সংগঠনটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশালে প্রিজনভ্যানে বোমা হামলা চালিয়ে জেএমবির তিন সদস্যকে ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এদের একজন হচ্ছেন সানি। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ৪০টির বেশি মামলা রয়েছে। তিনটি মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সানির বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায়।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সানি ভারত থেকেই চালাচ্ছেন জেএমবি।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি মো. রিয়াজ ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ওরফে রাকিব নামে এক জঙ্গি ভারতে সানির কাছ থেকে নির্দেশনা নিয়ে আসে। সানি তাকে পুনরায় জেএমবিকে সংগঠিত করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কারাবন্দি নেতাদের ছিনতাইয়ের মতো পরিকল্পনা তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি। তবে আর্থিক সংকটের কারণে রিয়াজ জেএমবিকে এখনই সংগঠিত করতে পারছেন না। তাই সে জেএমবির ডাকাতি সেলকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে।
সংগঠিত হওয়ার বিষয়ে পুলিশের সিটি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, জেএমবি শক্তিশালী হতে অস্ত্র ও বিস্ফেরক, অর্থ এবং কর্মী দরকার। আর এ কাজ করতেই তারা ডাকাতিসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটির এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশের তৎপরতায় দেশে জেএমবির অস্তিত্ব সংকটে আছে। নতুন করে সংগঠিত হয়ে প্রথমেই তারা কারাবন্দি নেতাদের মুক্ত করতে ত্রিশালের মতো চেষ্টা করবে। নেতাদের ছিনিয়ে নেয়ার পাশাপাশি যেসব নেতার বিচার এখনো শুরু হয়নি কিংবা রায় হয়নি তাদের জামিন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সানি।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, রিয়াজ ভারতে সানির সঙ্গে দেখা করে তার পরামর্শেই দেশে তৎপরতা শুরু করেছে। সানি তাকে ত্রিশালের মতো প্রিজনভ্যান থেকে জেএমবি সদস্যদের ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করতে বলেছে। জিজ্ঞাসাবাদে জেএমবির কয়েকজন সদস্য একথা স্বীকার করেছে।
এদিকে সব ধরনে ঝুঁকি মাথায় রেখে দুটি হাইটেক প্রিজনভ্যান কিনছে কারা কর্তৃপক্ষ। প্রিজনভ্যানগুলোয় এয়ার কন্ডিশনার (এসি), ওয়েববেইজড ক্যামেরা, বন্দির ফোন রেকর্ডার, জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইসসহ সার্বক্ষণিক মনিটরিং সহায়ক সবকিছুই রয়েছে। শিগগিরই হাইটেক প্রিজনভ্যানগুলো কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এআর/এএইচ/আরআইপি