সাক্ষী খুঁজে না পাওয়ায় ঝুলে রয়েছে তাজরীন ফ্যাশনস মামলা
চার বছর আগে আজকের এইদিনে (২৪ নভেম্বর) সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন নিহত হন। আহত ও দগ্ধ হন আরো দুই শতাধিক শ্রমিক। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির বিচারকাজ গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর শুরু হলেও আদালতে সাক্ষী না আসায় ঝুলে রয়েছে আলোচিত এ মামলা।
১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র পাঁচজন। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে সাক্ষীদের নির্ধারিত ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আলোচিত মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে আসামিপক্ষ বলছে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে সাক্ষী হাজির করতে না পারায় ঝুলে রয়েছে মামলা। রাষ্ট্রপক্ষ ইচ্ছা করলে মামলাটি দ্রুত শেষ করতে পারে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) কাজী শাহনাজ ইয়াসমিন জাগো নিউজকে বলেন, তাজরীন ফ্যাশনের মামলায় ১০৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।এ পর্যন্ত ১৪ মাসে পাঁচজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলায় যাদের সাক্ষী করা হয়েছে তাদের দেয়া নির্ধারিত ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের খুঁজে না পাওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে না।তিনি আরো বলেন, সাক্ষীদের বিভিন্নভাবে খোঁজার চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি মামলাটির কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে পারবো।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এটিএম গোলাম গাউস জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য রয়েছে। পরপর আটটি নির্ধারিত তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বহুল আলোচিত মামলাটি ঝুলে আছে।তিনি আরো বলেন, আমরা চাই মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ হোক। মামলার রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে কে দোষী, কে নির্দোষ।
অগ্নিকাণ্ডের পরদিন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় নাশকতার পাশাপাশি অবহেলাজনিত মৃত্যুর দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারা যুক্ত করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক এ কে এম মহসিনুজ্জামান খান ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিজিএম) আদালতে তাজরীন ফ্যাশনসের এমডি দেলোয়ারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ১০৪ জনকে।
চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- তাজরীন ফ্যাশনসের চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনারুল, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল-আমিন, স্টোর ইনচার্জ আল-আমিন ও লোডার শামীম মিয়া।
২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান। অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৩ ধার্য তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। প্রথম পাঁচ ধার্য তারিখে আদালতে মামলার বাদী এসআই খায়রুল ইসলামসহ পাঁচজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। এরপর থেকে আট ধার্য তারিখে কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ জানুয়ারি।
জেএ/ওআর/বিএ