মা হারা দুই সন্তানকে নিয়ে কেমন আছেন বাবুল আক্তার
বিপদে পড়লেই সাধারণ মানুষ দ্বারস্থ হতো তার দরজায়। সহযোগিতা চাইতেন, পেতেনও। কাউকে নিরাশ করতেন না। তিনি সবসময় সর্বাত্মক সহযোগিতার চেষ্টা করতেন এমনটাই জানিয়েছে চট্টগ্রামের মানুষ। তবে এ মানুষটি এখন আর দৃশ্যপটে নেই। নিজেকে রেখেছেন আড়ালে। নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন আলোচিত পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার।
এসপি পরিচয়ের বাইরে বাবুল আক্তার এখন কেমন আছেন? কি করছেন তিনি? কীভাবে কাটছে তার সারাটা দিন তা জানার আগ্রহ অনেকেরই।।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ায় ২২০/এ নং বাসায় গিয়ে জানা যায়, পুলিশ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া এসপি বাবুল আক্তার বাসায় নেই। মা হারা দুই সন্তান মাহির ও তাবাসসুম টাপুরকে নিয়ে বাড়ির বাইরে ঘুরতে গেছেন।
বাবুল আক্তারের শাশুড়ি শাহিদা মোশাররফ জাগো নিউজকে বলেন, মেয়ে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার পর জামাই বাবুল আক্তারের যত ব্যস্ততা সন্তানদের নিয়ে। ওদের খাওয়ানো, গোসল, স্কুলে আনা নেয়া বাবুল আক্তারই করছে। ওদের সাজুগুজু পর্যন্ত করিয়ে দেয় সে।
গতকাল বুধবার ছিল টাপুরের জন্মদিন। তাই ওদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে বাবুল আক্তার। তাছাড়া ছেলে মাহিরের গলা ব্যথা। ফেরার পথে ডাক্তার দেখাবে ওকে- বলছিলেন শাহিদা মোশাররফ। তিনি বলেন, মাহিরের এবার ক্লাস ওয়ানে এডমিশন। বনশ্রী আইডিয়াল স্কুলে ভর্তির চেষ্টা চলছে। মেয়ে টাপুর নার্সারিতে।
‘আর কি খবর নিবে বাবা! বাবুল তো আর এসপি নাই। মেয়ে মিতু হত্যার বিচারের কোনো খবর নাই। আর কি খবর থাকবো? ’
বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে কথা হয় বাবুল আক্তারের সঙ্গে। কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কেমন আর থাকবো। আল্লাহ ভালই রেখেছে। ঢাকার বাইরে আছি। ঢাকায় আজই ফিরবো।
সময় কীভাবে কাটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সময় বেশি দিচ্ছি ছেলে-মেয়েকে। ওরা একটা সময় অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। আমি আর ওইসব নিয়ে ভাবতে চাই না। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চাই।’
বাবুল আক্তার বলেন, গতকাল মেয়ে টাপুরের জন্মদিন ছিল। টাপুর ও মাহিরকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছি। সন্ধ্যায় ওদের মুভি দেখিয়েছি। ওদের নিয়েই এখন আমার ভালো থাকা, খারাপ থাকা।
চাকরি নিয়ে কিছু ভাবছেন কিনা জানতে চাইলে বাবুল আক্তার বলেন,‘শ্বশুরের বাসায় বেশি সময় কাটে। ছেলেমেয়ে আছে। জীবন তো আর থেমে থাকে না। কিছু একটা তো করা অবশ্যই উচিত। দেখছি। সুইটেবল প্লেস পেলে অবশ্যই কিছু করার চিন্তা রয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রী হত্যার পর বাসার বাইরে খুব একটা যেতেন না বাবুল আক্তার। চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর অনেকটা ভেঙেপ ড়েন তিনি। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও আত্মীয়স্বজনের চাপাচাপি, ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের চিন্তায় বাবুল আক্তার ইদানিং বের হচ্ছেন ঘরের বাইরে।
শ্যালিকা শায়লা মোশাররফ বলেন, ‘ভাইয়া বেশিরভাগ সময় বাসাতেই থাকেন। কাজ না থাকলে ওপর থেকে নিচেও নামেন না। খাওয়া-দাওয়া, কথাবার্তা, ছেলেমেয়ের সঙ্গেই। গ্রামের বাড়িতেও যাওয়া হয় না তার। টিভি দেখা, পত্রিকায় খবর পড়া এসবই নিয়ে আছেন তিনি।’
জেইউ/ওআর/পিআর