ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

খালাস পাওয়ার ১৮ মাস পর ‘আসামি’ গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৬

স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলা থেকে খালাস পাওয়ার ১৮ মাস পর বুধবার গ্রেফতার হয়েছেন হাজারীবাগের বাসিন্দা নাসির মিয়া (৬৫)। গ্রেফতারের পর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে মামলাটির বর্তমানে কোনো কার্যক্রম না থাকায় তাকে ছেড়ে দেন ট্রাইব্যুনাল।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মামলার পর থেকে বাদী ও আসামি আদালতে হাজির হননি একদিনও। ট্রাইব্যুনাল আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন। এরপর কোনো সাক্ষী হাজির না হওয়ায় আসামিকে খালাস দেন আদালত। খালাসের বিষয়ে কিছুই জানতেন না মামলার বাদী ও আসামি। উভয়পক্ষ অসচেতন ছিল বলেই এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৫ মে স্ত্রী রুবিনা বেগমের (৪৫) কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করেন নাসির মিয়া। যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর করেন তিনি। মারধরের ঘটনায় রুবিনা বেগম আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০০৯ সালের ২১ জুন ঢাকা মহানগর হাকিম ফয়সল আতিক বিন কাদের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর নাসির মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

এরপর ২০১২ সালের ২ এপ্রিল নাসির মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০১৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর হাজারীবাগ থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠান আদালত।

২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল আসামি নাসির মিয়াকে খালাস প্রদান করেন ঢাকার ৫ নং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তানজিলা ইসমাইল।

রায়ে বিচারক বলেন, অভিযোগ গঠনের ১০ ধার্য তারিখেও রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। ভবিষ্যতে মামলাটির অগ্রগতির কোনো সম্ভাবনাও নেই। তাই মামলার দায় থেকে আসামিকে খালাস প্রদান করা হল।

সেই মামলায় ১৮ মাস পর বুধবার নাসির মিয়াকে গ্রেফতার করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ। এরপর তাকে ঢাকার ৫ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। বর্তমানে মামলাটির কোনো কার্যক্রম না থাকায় এবং আসামি খালাস পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেন ট্রাইব্যুনাল।

মামলার আসামি নাসির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, খালাস হওয়া মামলায় ১৮ মাস পর পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। মামলাটির কোনো কার্যক্রম না থাকায় ট্রাইব্যুনাল আমাকে ছেড়ে দেন। মামলার খালাসের বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। গ্রেফতার করায় আমাদের মানসম্মানের ক্ষতি হয়েছে।

মামলার বাদী রুবিনা বেগম বলেন, আমাদের দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তা মীমাংসা হয়েছে। তাই আদালতে মামলাটির খবর নিতে আসিনি। আজ আমার স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালত তাকে ছেড়ে দেন। এতে আমাদের মানসম্মানের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

তাদের আইনজীবী মাকসুদ বলেন, মামলাটি থেকে ১৮ মাস আগেই আসামি নাসিরকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তাকে আগের গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাদী ও আসামি জানেন না মামলাটিতে আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বাদী ও আসামির অসচেতনার জন্য আজকের এ হয়রানি।

জেএ/এসএইচএস/এমএফ/এবিএস

আরও পড়ুন