টাকা পেয়ে রাসেলের দারুণ অনুভূতি
মেডিকেলে ভর্তির টাকা হাতে পেয়ে দারুণ অনুভূতি প্রকাশ করেছেন জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান রাসেল মাহমুদ।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাসেলের বিকাশ নম্বরে কুমিল্লার জাগো নিউজের সাংবাদিক কামাল উদ্দিন ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাঠিয়েছেন। অার সেই টাকা হাতে পাওয়ার পর রাসেল জাগো নিউজের অফিসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুপুরে রাসেলের ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে কল করলে বরিশাল যাওয়ার জন্য সদরঘাটে অবস্থান করছেন বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, ২৪ অক্টোবর ভর্তির শেষ তারিখ তাই অাজ (রোববার) বরিশাল যাচ্ছি।
রাসেল বলেছেন, অামার ভর্তি সংক্রান্ত নিউজটি জাগো নিউজে প্রকাশের পর অনেকেই ফোন করেছিলেন টাকা দেয়ার জন্য। অনেকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন কোথাও টাকার ব্যবস্থা না হলে যেন তাদের ফোন করি। তখন তারা টাকা দেবেন। কিন্তু তার অাগেই কুমিল্লার কামাল নামে এক সাংবাদিক ভাই অামার নম্বরে টাকা বিকাশ করে দিয়েছেন। এখন সেই টাকা নিয়েই বরিশাল যাচ্ছি।
তিনি বলেন, টাকার অভাবে মেডিকেল ভর্তি হতে পারবো না এটি ভাবতেই কষ্টে বুক ভেঙে অাসছিল। যাহোক অাল্লাহরই এই দুনিয়ায় অসংখ্য ভালো মানুষ অাছেন। অার তাদের কারণেই হয়তো অামার মতো রাসেলরা নিভতে নিভতে জ্বলে উঠছে। স্যালুট ওই সকল মানুষকে যারা নিভু নিভু প্রদীপটিকে রক্ষা করছে।
রাসেল বলেন, কামাল ভাই শুধু টাকা দেননি, দিয়েছেন মানবতার শিক্ষাও। দোয়া করবেন অামি যেন এসব মানুষের ঋণ শোধ করার সুযোগ পাই। কথা দিচ্ছি জীবনে সফল হয়ে ফিরলে একইভাবে অামার মতো দরিদ্র মেডিকেল ছাত্রদের পাশে দাঁড়াবো।
রাসেল অারো বলেন, অামার এলাকাটি দেশের অন্যসব এলাকার চেয়ে এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। অাল্লাহ যদি সফল ডাক্তার বানায় এলাকার মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছে অাছে। অাপনারা শুধু দোয়া করবেন।
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে রাসেলের বাবা মোতালেব মিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, সামান্য ফেরি করে সংসার চালায়। ভেবেছিলাম ছেলেটাকে মেডিকেলে বুঝি অার ভর্তি করাতে পারছি না। এই কয়েক দিন টাকার জন্য খুব ছুটেছি। কিন্তু অামাদের এলাকাটি অভাবী হওয়ায় কেউ সহযোগিতা করতে পারেনি।
তিনি বলেন, যে মানুষটি রাসেলকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তার কাছে শুকরিয়া।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার মেডিকেলে ভর্তির টাকা যোগাড় হয়নি রাসেলের শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম এ সংবাদ প্রকাশের পর অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
রাসেল মাহমুদের বাড়ি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার আলীরপাড়া গ্রামে।
২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় রাসেল আলীরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এরপর মেধাযুদ্ধে স্থান পেয়ে যায় গাজীপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখানে পড়ালেখার সব দায়িত্ব নেন শিক্ষকরাই। ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় রাসেল আবারো গোল্ডেন জিপিএ ৫ পায়।
এফএ/এমএস