ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

পরিবারের দাবি হত্যা : ডিবি বলছে আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০১:৫৬ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০১৬

চারদিন ‘নিখোঁজ’ থাকা পর ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হাসান খালেদের লাশ উদ্ধারের ঘটনার কোনো কূল কিনারা হয়নি। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কাজ চললেও বিশেষ কোনো ক্লু পায়নি ডিবি পুলিশ।

এদিকে পুলিশ বলছে, হতাশাজনিত কারণে তিনি নদীতে লাফ দিয়ে আত্মহত্যাও করে থাকতে পারেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর ঘটনার আসল মটিভ সম্পর্কে জানা যাবে। তবে পরিবারের দাবি, হাসান খালেদকে অপহরণ করে হত্যা করা হতে পারে। ওই ঘটনায় রাতেই ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার শ্যালক শরীফুল আলম।

চলতি বছরের গত ২৬ জুলাই দুপুরে স্থানীয়দের দেয়া খবরে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গার খোলামোড়া ঘাট এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার পুলিশ। এর ৪ দিন আগে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে নিখোঁজ হন তিনি। গত ২৩ জুলাই সকালে ধানমন্ডির ৪/এ রোডের ৪৫ নম্বর বাসা থেকে ওষুধ কেনার উদ্দেশে বের হয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস শরিফ জানান, বুড়িগঙ্গাতে মরদেহ ভেসে উঠার খবরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে হাসান খালেদের ভাই এসে পরিচয় নিশ্চিত করেন।

অন্যদিকে ধানমন্ডি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ জানান, প্রথমে পরিবারের পক্ষ মর্মে জিডি করে। পরে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

তিনি আরো জানান, খালেদকে খুন করা হয়েছে দাবি করে ৮ দিন পর ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন নিহতের শ্যালক। মামলার তদন্তভার এখন ডিবিতে। ডিএমপি’র ডিবি দক্ষিণ বিভাগের ধানমন্ডি জোনের এসআই শাহনেওয়াজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের সহকারি কমিশনার (এসি) রেজাউল আলম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এখনো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাইনি।  রিপোর্ট পেলে তদন্তে গতি আসবে। আপাতত পারিবারিক ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ জাগো নিউজকে বলেন, হাসান খালেদের মৃত্যুর ঘটনায় ব্যবসায়িক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, তবে এখন পর্যন্ত তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন কোনো ক্লু মেলেনি। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও এখনো আমরা রিপোর্ট পাইনি বলে জানান ডিসি।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, ময়নাতদন্তে খুন বা হত্যার কোনো আলামত মেলেনি। নিহতের শরীরে হত্যা সংশ্লিষ্ট কোনো চিহ্ন ছিল না। তবে মুখভর্তি বালি ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে, আশাহত হয়ে কিংবা দীর্ঘদিনের পারিবারিক কোনো হতাশা থেকে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন তিনি।

তবে হত্যার বিষয়টিকেই অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। ক্লুলেস এ ঘটনায় কাউকে গ্র্রেফতারও করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে নিহতের শ্যালক শরীফুল আলম বলেন, ঘটনার আড়াই মাস অতিবাহিত হতে চললেও এখনো ঘটনার কোনো কূল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি অনতিবিলম্বে জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের দাবি জানান।

উল্লেখ্য, হাসান খালেদ কেমিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গত ২৫ বছর ধরে তিনি আমদানি-রফতানি ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবসায় জড়িত। নিউ ইস্কাটনের হাসান হোল্ডিংয়ের আট তলার অফিসে বসতেন তিনি। এছাড়া ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ গঠনে উদ্যোক্তাদের মধ্যেও একজন তিনি। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে ট্রেড ফ্যাসিলিটেটর হিসেবেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

জেইউ/জেএইচ/আরআইপি

আরও পড়ুন