ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

দেশেই আত্মগোপনে মেজর জিয়া ও মারজান

প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ৩ মাস্টারমাইন্ডকে শনাক্ত করেছিল পুলিশ। এরা হলেন- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া, তামিম আহমেদ চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম ওরফে মারজান। এদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। বাকি দুজন এখনো পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশের দাবি, দুজনই দেশেই আত্মগোপনে আছেন। যেকোন সময় তাদের গ্রেফতার করা হবে।  

গত ১ জুলাই গুলশানের আর্টিসান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন নিহত হন। পরদিন সেনাবাহিনীর অপারেশন থান্ডার বোল্টে নিহত হয় ৬ জঙ্গি। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তের দায়ভার দেয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটকে।

দীর্ঘদিন তদন্তের পর মাস্টারমাইন্ডদের শনাক্ত করে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া ও তামিম আহমেদ চৌধুরীর সন্ধানদাতার জন্য ২০ লাখ টাকা করে পুরষ্কারও ঘোষণা করা হয়। পুলিশের অপারেশনে তামিম মারা গেলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন মেজর জিয়া ও মারজান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি ইউনিটের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেজর জিয়া ও মারজান বাংলাদেশেই আছেন। ঢাকার বারিধারা-বসুন্ধরার মতো ভিআইপি ও অভিজাত এলাকায় অবস্থান করছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।’

সূত্র জানায়, জিয়া গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন। তাকে আটক সময়ের ব্যাপার মাত্র। যে কোনো সময় গোয়েন্দা জাল গুটিয়ে আনা হতে পারে।

তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মারজান দেশেই আছেন। তাকে অচিরে গ্রেফতার করা হবে।’

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জঙ্গি তামিম চৌধুরীর মতো মেজর জিয়ার চ্যাপ্টারও অচিরেই শেষ হবে। প্রশাসন তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

কে এই মেজর জিয়া?

মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা। ২০১১ সালে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয় তাকে। এরপর থেকেই তিনি আত্মগোপনে আছেন।

২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সঙ্গে জিয়াউল হকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় পুলিশ। জিয়া জঙ্গিদের যুদ্ধ ও বোমা তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন বলে তথ্য আসে তাদের কাছে।

পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালে এবিটি প্রধান মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানী গ্রেফতার হওয়ার পর এই নিষিদ্ধ সংগঠনের অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে জিয়ার নাম বেরিয়ে আসে। তখন জেএমবির একাংশের সঙ্গে এই বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার তথ্য প্রমাণ পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকায় সর্বশেষ মিরপুর সেনানিবাসের ভবন পলাশের ১২ তলায় থাকতেন।
 
মারজানের পরিচয়
 
মারজানের প্রকৃত নাম নুরুল ইসলাম ওরফে মারজান। আনুমানিক বয়স ২২-২৩ বছর। পুলিশের তদন্তে গুলশান হামলার ‘অপারেশন কমান্ডার’ হিসেবে মারজানকে শনাক্ত করা হয়েছে। সে গুলশান হামলার কয়েকদিন আগেও তামিমের সঙ্গে সশরীরে দেখা করেছে বলে প্রমাণ আছে গোয়েন্দাদের কাছে।

মারজানের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আফুরিয়ায়। মো. নাজিম উদ্দিন ও সালমা খাতুনের ১০ সন্তানের মধ্যে মারজান চতুর্থ। সে গত কয়েকমাস ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন।

মারজান আফুরিয়া পাটকিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাস করার পর পাবনার আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। এরপর তিনি দীর্ঘদিন পাবনার বাঁশবাজার মসজিদে মক্তব বিভাগে ছাত্রছাত্রী পড়াতেন। পরে ২০১৪ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগের ভর্তি হন।

এআর/জেএইচ/আরআইপি