ডিশ কর্মচারী সেজে রিশার এলাকা রেকি করেছিল ওবায়দুল
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে হত্যার কয়েকদিন আগে এলাকা রেকি করেন টেইলার্স কর্মচারী ওবায়দুল। নিজেকে ডিশ কর্মচারী পরিচয় দিয়ে রাজধানীর বংশালের সিদ্দিকবাজার ফায়ার সার্ভিসের গলি রেকি করেন তিনি।
এভাবে রিশা ও রিশার বাবার নম্বর সংগ্রহ করে নিয়ে যান তিনি। এরপরই শুরু হয় উত্ত্যক্ত করা। রিশার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বংশালের সিদ্দিকবাজার ফায়ার সার্ভিসের গলির ১০৪ নং বাসায় গিয়ে দেখা যায় মা তানিয়া হোসেনের কোলে শুয়ে নিহত রিশার ছোট বোন রোদেলা আক্তার তৃষা।
তৃষা তার মাকে বলে, ‘একটা ছেলে কয়েকদিন আগে আমাদের এলাকায় এসেছিল। আমাকে ও ভাইয়া রবিকে খুঁজে বের করে ডিশ ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে কথা বলে। ছেলেটা বলে, আমি ডিশ কর্মচারী তোমার আব্বু ও আপুর নম্বর দাও। ফোনে যোগাযোগ করে নেব। মুখস্ত থাকায় নম্বর দিয়েছিলাম।’
তৃষা বলছিল, ‘ছেলেটা আমার ভাইয়া রবি ও আমার সাথে ছবিও তুলেছিল। তবে আপুর সাথে দেখা করতে চাইলে আমরা চলে আসি।’
ছোট্ট তৃষার কথা শুনে মা তানিয়া বলেন, ‘এমন কথা আমি নিজেও জানতাম না। এর মানে ওই ওবায়দুলই আমার মেয়েকে খুন করার আগে পুরো এলাকা রেকি করেছে। বাবা-মেয়ের নম্বর নিয়ে ডিস্টার্ব করেছে।’
তিনি বলেন, আমার ১৪ বছর বয়সী রিশা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। ওর বাবা মো. রমজান হোসেন পেশায় পুরান ঢাকার ক্যাবল (ডিশ) ব্যবসায়ী। ডিশ কর্মচারী সেজে কথা বললে সহজ হবে ভেবেই ওবায়দুল নামে ওই ‘বখাটে’ এলাকায় আসার সুযোগ নিয়েছিল।
তিনি বলেন, গত ৮/৯ মাস আগে ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সে একটি জামা বানাতে দিয়েছিলাম। তখন থেকে যোগাযোগের জন্য দেয়া মোবাইল ফোন নম্বরে রিশাকে বিরক্ত করছিল ওবায়দুল। রিশার বাবা ওই ছেলেকে ফোন করে পরিচয় জানতে চাইলে ওবায়দুল পরিচয় দেয়। বলে রিশাকে ভালো লেগেছে। সে কথা শুনে রিশার বাবা ফোনে ধমক দেয়। পর দিন ওই টেইলার্সের মালিককে অভিযোগ করলে তিনি এর একটা বিহীত করার আশ্বাস দিয়ে রিশার বাবাকে ফিরিয়ে দেন। পরিবারের অভিযোগ ওবায়দুলই রিশাকে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার কাকরাইলে ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনদিন পর মারা যায় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা।
স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের উপরে রিশার পেট ও হাতে ছুরি মেরে পালিয়ে যায় টেইলার্স কর্মচারী ‘বখাটে যুবক’ ওবায়দুল।
রিশা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা মো. রমজান হোসেন পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার এলাকার ক্যাবল (ডিশ) ব্যবসায়ী। গত দুদিন ধরে রিশা হত্যার ঘটনায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
জেইউ/এআরএস/আরআইপি