ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

বিদেশি পর্যটক টানতে ব্যবসায়ীদের ১২ প্রস্তাব

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:৩৪ এএম, ১২ আগস্ট ২০১৬

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা শঙ্কায় প্রায় ২৫ হাজার বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে তাদের ভ্রমণ বাতিল করেছেন। এ অবস্থায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করে আগামী ৪ বছরের জন্য সুদমুক্ত লোনের দাবিসহ সরকারের কাছে ১২টি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন দেশের পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
 
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে বিদেশি হত্যাসহ সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে যে আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে সরকারের সহায়তা চেয়েছে দেশের পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ের মন্দা কাটাতে ট্যুর অপারেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পক্ষ থেকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ১২টি প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সরকারিভাবে ২০১৬ সালকে পর্যটনবর্ষ ঘোষণা করা হলেও পর্যটকদের আস্থা না ফেরাতে পারলে লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এতে দেশের পর্যটন খাতে উল্লেখযোগ্য ধস নামবে।
 
সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো টোয়াবের সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে পর্যটন শিল্পের যে কোনো সংকট মোকাবেলায় পাবলিক-প্রাইভেট স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি অথবা ন্যাশনাল ট্যুরিজম টাস্কফোর্স গঠন করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।

পাশাপাশি ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ইন বাউন্ড ট্যুর অপারেটরদের ব্যবসায়িক ক্ষতি পূষিয়ে নিতে ৩ থেকে ৪ বছরের জন্য সুদমুক্ত ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টোয়াবের যে সমস্ত ইন বাউন্ড ট্যুর অপারেটররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে তালিকা প্রস্তুত করে তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। যেমনটি মার্স ভাইরাসের সময় সিঙ্গাপুর করেছিল।

এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ইন বাউন্ড ট্যুর অপারেটররা (কমপক্ষে ৫ জন) আগামী ২-৩ বছর আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলায় সরকারি খরচে সৌজন্যমূলকভাবে অংশ নিতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর বিদেশি পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি ও স্বাভাবিক রাখতে তারকা হোটেলগুলোতে ভাড়া হ্রাস করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও পড়ুন

এ প্রসঙ্গে টোয়াবের পরিচালক (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিকেশন) এবং ইন বাউন্ড ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান মার্কেট এস-ট্রেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সাফাত উদ্দিন আহমেদ তমাল জাগো নিউজকে বলেন, দেশের ভাবমূর্তি ঠিক করার পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক আনতে হলে এখন থেকেই আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ভারত, নেপাল, ভূটান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশসমূহে নিয়মিত রোড শো, দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে হালনাগাদ বিফ্রিং ও প্রমোশনের কার্যক্রম নিতে হবে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক হামলায় যেসব দেশের নাগরিক মারা গেছেন; সেই সব দেশের ট্যুর অপারেটরের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও আনার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। যাতে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাগুলো কেটে যায়।

টোয়াবের প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়েছে, আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকাতে ২-৩ দিনব্যাপী ‘শো-কেস বাংলাদেশ’ আয়োজন করা যেখানে সকল স্টেক হোল্ডার ও বিদেশি কাউন্টার পার্টদের বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে হবে। একইসঙ্গে ট্যুরিস্ট জেনেরেটিং দেশগুলোয় বাংলাদেশ মিশন ও দূতাবাসগুলোতে নিয়মিতভাবে ব্যবসা, পর্যটন ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড থেকে প্রতি সপ্তাহে একটি হালনাগাদ বিজ্ঞপ্তি টুরিস্ট জেনেরেটিং দেশগুলোর বোর্ড, সংবাদমাধ্যম, দূতাবাস ও অ্যাসোসিয়েশনসমূহে পাঠানো। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড থেকে নিউজ লেটার প্রকাশের ব্যবস্থা করা, ৪ বছরব্যাপী ট্যুরিস্ট জেনেরেটিং দেশগুলোতে রোড-শো, বিটুবিসহ অন্যান্য মার্কেটিং ও প্রমোশনের ব্যবস্থা করা।

প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়েছে, দেশীয় খাবার, গান, কারুশিল্পকে উৎসাহিত করতে ট্যুরিস্ট জেনেরেটিং দেশগুলো থেকে মিডিয়া, সেলিব্রেটি, পেইন্টার ও শেফদের নিয়ে ফেম ট্রিপের আয়োজন করা, যাতে তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করতে পারেন।


আরএম/একে/আরআইপি