ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

২২৮ বছর পর তালা ঝুললো কারা ফটকে

প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৬

রাত তখন আনুমানিক সাড়ে ১০টা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে থেকে সর্বশেষ ১৮৪ জন বন্দীকে নিয়ে পাঁচটি প্রিজনভ্যান কেরানীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। সেই সঙ্গে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী স্থানান্তর প্রক্রিয়া শেষ হয়। এর খানিক পরেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এতে পরিসমাপ্তি ঘটে ২২৮ বছরের ইতিহাসের।

কারা অধিদফতরের সহকারী মহা পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন রাত ১১টায় জাগো নিউজকে জানান, ১৭৮৮ সালে একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড চালুর মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি চালু হয়। সেই থেকে কোনো দিন এই কারাগারের প্রধান ফটকে তালা ঝুলেনি।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) ভোর ছয়টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৫১১ জন বন্দীকে কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে নাজিমউদ্দিন রোডে কারাগারে কর্মরত আট শতাধিক কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বদলি হয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, সকাল থেকে ৮টি প্রিজনভ্যানের প্রতিটিতে ৪০ জন করে প্রতি ট্রিপে ৩২০ জন বন্দী পাঠানো হয়। সর্বশেষ ট্রিপে ১৮৪ জন বন্দীকে স্থানান্তর করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শীর্ষ দায়িত্বশীল কারা কর্মকর্তা জানান, আজ (শুক্রবার) ও আগামীকাল (শনিবার) দুইদিনে বন্দী স্থানান্তরের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা একদিনেই বন্দীদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শেষ করতে সমর্থ হয়েছেন।
 
বিশ্বের কোনো দেশে একদিনে এতো বন্দী স্থানান্তর রেকর্ড রয়েছে কি না তা নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, কোনো প্রকার অঘটন ছাড়া নির্বিঘ্নে বন্দী স্থানান্তর সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় এটা সম্ভব হয়েছে।

আসামি স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে নাজিমউদ্দিন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চারদিকের রাস্তা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকেই বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কারাগার এলাকায় প্রবেশের চারদিকের রাস্তা অর্থাৎ চাঁনখাঁরপুল, বংশাল, চকবাজার, বেগম বাজারের সড়ক থেকে কারাগারের দিকে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়।

কারা সূত্রে জানা গেছে, নাজিমউদ্দিন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার আপাতত বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার স্মৃতি জাদুঘর নির্মিত হবে। এলাকাবাসীর বিনোদনের স্থান হিসেবে কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থানে পার্ক হবে। ঐতিহাসিক মূল্য আছে -এমন ভবন সংরক্ষণ করা হবে, যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

২২৮ বছরের এ কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে ১৭ একর জমি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় কারাগারের স্থানে মানুষের বিনোদনের জন্য পার্ক হবে। প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে কারাগারের কিছু ভবন সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান একাধিক কারা কর্মকর্তা।

এমইউ/আরএস

আরও পড়ুন