গুলশান হামলা : ১৬ দিনেও জঙ্গিদের মরদেহ নেয়নি পরিবার
গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে ছয় জঙ্গি নিহত হন। ময়নাতদন্তের পর নিহত জঙ্গিদের মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) মর্চুয়ারিতে রাখা হয়েছে। তবে এ ঘটনার ১৬ দিন পরও লাশ নিতে আসেনি জঙ্গিদের পরিবারের কেউ।
পুলিশের পক্ষ থেকে ছয়জনের পরিবার ও ঠিকানা শনাক্ত করা হলেও তাদের কেউই মরদেহ নিতে আসেননি। তাদের মরদেহগুলো এখনো সিএমএইচেই রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম শাম্মী জাগো নিউজকে বলেন, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মরদেহগুলো নিতে আসেনি। মরদেহগুলো আপাতত এখানেই রয়েছে। তবে কতদিন এগুলো এভাবে অথবা তারা মরদেহ না নিলে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, বিষয়গুলো সরকারের উপর নির্ভর করে।
সাধারণত হাসপাতাল থেকে মরদেহ বুঝে নিতে স্থানীয় পুলিশের কাছে যেতে হয়। তারাই মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তবে গুলশান থানায় ফোন করে জানা গেল এ পর্যন্ত কোনো জঙ্গির পরিবার তাদের কাছে মরদেহ নিতে যোগাযোগ করেনি।
মরদেহ না নিলে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের গুলশান বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, একজনের পরিবারের সঙ্গে পুলিশ স্বেচ্ছায় যোগাযোগ করলে তিনি মরদেহ নিতে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে মরদেহগুলো অনন্তকাল মর্গে রাখা সম্ভব নয়। কেউ আগ্রহী না হলে সে ক্ষেত্রে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হতে পারে।
এ বিষয়ে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে নিহত জঙ্গি খায়রুল ইসলাম ও নিবরাসের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা মরদেহ নেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই (শুক্রবার) রাত পৌনে ৯টায় গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ২০ জনকে খুন করে জঙ্গিরা। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানি ও একজন ভারতের নাগরিক। বাকি তিনজন বাংলাদেশি।
এছাড়া সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে ছয় জঙ্গি নিহত হন। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এদের মধ্যে পাঁচজনের নাম আকাশ, বিকাশ, রিপন, বাইক হাসান ওরফে ডন ও বাঁধন। তবে পরিবারের দাবি, তাদের নাম খায়রুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, রোহান ইমতিয়াজ, নিবরাস আহমেদ ও মীর সামীহ মোবাশ্বের।
এআর/জেএইচ/এবিএস