ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়নে আলাদা বাজেট

প্রকাশিত: ১১:৩০ এএম, ৩০ মে ২০১৬

আসন্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকা ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ প্রকল্প বাস্তবায়নে নজরদারী বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য অর্থায়নে যেন কোনো সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করা হবে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বিষয়ে আলাদা বাজেট দেবেন বলে জানা গেছে। আগামী ২ জুন জাতীয় সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করবেন তিনি।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অবকাঠামো খাতের দশটি বড় প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পে অগ্রাধিকার পেয়েছে। প্রথমবারের মতো এসব প্রকল্পে আলাদা বাজেট দেয়া হচ্ছে।

যেসব প্রকল্প এই বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে- পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, মেট্রোরেল, এলএনজি টার্মিনাল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ, পায়রা সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ ও চট্টগ্রামের দোহাজারী হতে গুনদুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। এসব প্রকল্পের সার সংক্ষেপ তুলে ধরা হলো।

পদ্মা সেতু :  ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৩৩ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হবে ৬ হাজার ৬২ কোটি টাকা।

মেট্রোরেল: ঢাকায় ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরে এ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৩৪০ কোটি টাকা।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র : রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন প্রকল্পের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। ভারত এবং বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩০ ভাগ টাকা জোগান দেবে সরকার। বাকি ৭০ ভাগ ভারতীয় কোম্পানি। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।

এলএনজি টার্মিনাল : তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির জন্যই এ টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানির জন্য টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অর্থায়ন এখনও নিশ্চিত হয়নি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র : সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ের এ প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৬১৮ কোটি টাকা।

গভীর সমুদ্রবন্দর : কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে ৬টি দেশ। এ প্রকল্পটিও কাগজে-কলমে রয়ে গেছে। অর্থায়ন কিংবা একনেকে অনুমোদন কোনোটিই হয়নি।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ : ঢাকা-ভাঙ্গা ও ভাঙ্গা-যশোর রেললিংক বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। এ রেলপথটি সম্পন্ন হলে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত দূরত্ব হবে ১৬৬ কিলোমিটার। আগামী অর্থবছরে এ প্রকল্পে ৪ হাজার ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

দোহাজারী গুনদুম রেল প্রকল্প : দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের কাছে গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পটি এরই মধ্যে একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আসন্ন ২০১৬-১৭ বাজেটে এ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৬৩২ কোটি টাকা।

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র : মাতারবাড়ী প্রকল্পের অধীনে মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৬০০ মেগাওয়াট করে ১২শ` মেগাওয়াটের দুটি আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার পল্গান্ট নির্মাণ হবে। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।

পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর : পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২০২৩ সাল নাগাদ। এ জন্য চীন, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক এবং ভারত অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। প্রায় ১৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা) ব্যয়ের প্রকল্পটি অর্থায়ন অনিশ্চয়তায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। বাড়বে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি। এজন্য বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব দেয়, সেজন্য আলাদা বাজেট করা হচ্ছে। পাশাপাশি অর্থ খরচের ক্ষেত্রে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে অর্থ বিভাগ যাতে নজরদারী করতে পারে, সে বিষয়টি বিবেচনায় আনতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এমএ/একে/আরআইপি

আরও পড়ুন