কুড়িগ্রামের ১১ মেধাবীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
দারিদ্রতা তাদের জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। নিজেদের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা জয় করে নিয়েছে সকলের হৃদয়। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় তারা জিপিএ-৫ পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে। কিন্তু এই তরুণদের জীবন এখন অনিশ্চয়তায় ভরা। পারিবারিক দৈন্যতাকে জয় করলেও সামনের কঠিন পথ তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা শঙ্কিত!
নিশাত আক্তার ঐশী
নানা প্রতিকূলতার মধ্যে অভাবকে জয় করে চলতি বছর নাগেশ্বরী দয়াময়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে নিশাত আক্তার ঐশী জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে। পরিবারে অভাব ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতিকূলতা বাধা হতে পারেনি তার মেধা বিকাশে। নিশাত জেএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। নিশাত ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়।
কিন্তু স্বপ্ন পূরণে বড় বাধা দারিদ্রতা। তার বাবা আতাউর রহমান ২০০২ সাল থেকে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ। ফলে চারজনের সংসারের ঘানি টানছেন মা শামসুন্নাহার বেগম। তাদের মানবেতর জীবনযাপন চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
দুই বোনের মধ্যে নিশাত সবার বড়। ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। ভবিষ্যৎ অন্ধকার তারপরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার দুর্বার সাহস নিয়ে সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে তার পরিবার।
সাথী সরকার
কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের তালুক কালোয়া এলাকার কৈয়া পাড়ার রতন সরকারে মেয়ে সাথী সরকার এবার এসএসসি পরীক্ষায় দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে পরিবারে হাসি ফুটিয়েছে।
তিন বোনের মধ্যে সাথী সরকার দ্বিতীয়। বড় বোন অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। আর ছোট বোন পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাবা কৃষি শ্রমিক আর মা গীতা সরকার গৃহিণী। ৫ জনের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা।
সাথী সরকার জানায়, প্রায় উপোস করে থাকতে হতো তাদের। ছিল না প্রয়োজনীয় বই খাতা কলম। মা বাড়িতে হাঁস-মুরগী পালন করে এবং বড় বোন টিউশনি করে আয় করে। এভাবে চরম কষ্টে দিন কাটে আমাদের। অভাবের মধ্যে বেড়ে ওঠা সাথী স্বপ্ন দেখে একজন প্রকৌশলী হওয়ার। হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতা ছাড়া সাথী সরকারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
লিপি আক্তার
উলিপুর উপজেলার রামেশ্বর শর্মা গ্রামের কৃষি শ্রমিক নূর ইসলামের মেয়ে লিপি আক্তার চলতি এসএসসি পরীক্ষাায় মন্ডলের হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। দুই ভাই বোনের মধ্যে লিপি সবার বড়।
অভাবের সংসার তিন বেলা খাবারই জোটে না। পড়ালেখা খরচ জুটবে কিভাবে। তাই বাবা চায় মেয়ের বিয়ে দিতে। কিন্তু মা রোকেয়া বেগম চায় মেয়ে লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে।
কারণ নিজের বাল্যবিয়ে, লেখাপড়া না জানা এবং বর্তমান কষ্টের সংসার জীবনের জন্য নিজের ভাগ্যকে মেনে নিলেও মেয়ের ভাগ্য বদলাবার ইচ্ছা তার। লিপি পড়ালেখা করে ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু সে ইচ্ছা পুরণে বড় বাধা দারিদ্রতা।
সাফিয়া আক্তার
তিন ভাই বোনের মধ্যে সাফিয়া আক্তার সবার বড়। উলিপুর উপজেলার মন্ডলেরহাট এলাকার সাদী গ্রামে তাদের বাড়ি। বাবা মমিনুল ইসলাম সাভারে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিক। মাসিক বেতন ৭ হাজার টাকা। ৩ হাজার টাকা পাঠায় বাড়িতে। এ টাকায় মা আলেয়া বেগম ৪ জনের সংসার টানে। ভিটেবাড়ি মিলে ১০ শতক জমি আছে। এতেই সবজি চাষ ও হাঁস-মুরগি পালন করেন মা।
সাফিয়া আক্তার জানায়, পড়ালেখা চালিয়ে নিতে তার সীমাহীন কষ্ট করতে হয়েছে। এনজিও আরডিআরএস থেকে ঋণ নিয়ে করতে হয়েছে ফরম পূরণ। এখনও সে ঋণের টাকা পরিশোধ হয়নি। নেই খাবার, নেই বই-খাতা, নেই ভাল কোনো পোশাক।
কেরোসিন কেনার সামর্থ্য না থাকায় পড়ালেখা করতে হয়েছে দিনের আলোয়। আমি দুঃখের এ জীবনের অবসান ঘটাতে চাই। আর তা উচ্চ শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে। চিকিৎসক হয়ে চাই পরিবারের ভাগ্য বদলাতে চাই। সেই সঙ্গে নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই গরিব-অসহায় মানুষের সেবায়।
স্বপ্না খাতুন
দরিদ্র মুদি দোকানদার শামসুল আলমের কন্যা স্বপ্না খাতুন চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে আঁধার ঘর আলোকিত করেছে। পরিবারে অভাব অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। এরপরও শত প্রতিকূলতা বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি ।
স্বপ্না খাতুন পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেয়ে শিক্ষকদের দৃষ্টি কেড়েছে। স্বপ্না খাতুন ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু এ স্বপ্ন পূরণের মাঝে দেয়াল অর্থনৈতিক সংকট।
স্বপ্না খাতুন জানায়, তার বাবা শামসুল আলম মুদি দোকান করলেও ২০০৬ সাল থেকে চোখে ঠিকমতো দেখতে পায় না। টাকার অভাবে চিকিৎসাও হয়নি। ফলে মুদি দোকান দেখভাল করেন মা জুলেখা বেগম। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে স্বপ্না দ্বিতীয়।
বড় বোন শেফালী খাতুন কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। দুই ভাই ছোট। টিউশনি করে বড় বোন লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছেন। স্বপ্নার মনে এখন শঙ্কার পাহাড়! তার চিকিৎসক হবার স্বপ্ন পূরণ হবে তো?
ইমানা আক্তার ইমু
চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে ইমানা আক্তার ইমু। সে চলতি বছর দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভাল ফলাফল করেও তার মনে আনন্দ নেই। কারণ বাবা নেই। আয় রোজগারের কেউ নেই। পড়াশুনা বন্ধের উপক্রম। দু’চোখে শুধু অন্ধকার।
মোটরসাইকেল মেকানিক বাবা ইউসুছ আলী প্রায় ৩ বছর আগে আকস্মিকভাবে হার্টঅ্যাটাকে মারা যায়। তখন থেতে শুরু কষ্টের অনিশ্চিত জীবন। মা সামছুন নাহার বেগম ব্রাকের আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশনে তৈরি পোশাকে হাতের কাজ (কারচুপি) করেন। এতে মাসে আয় হয় মাত্র ২হাজার টাকা। তাই বাধ্য হয়ে মায়ের কাজে সহযোগিতা করে ইমু। এতে লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়।
ইমানা আক্তার ইমু জানায়, বাবার কোনো জমিজমা ছিল না। কাঁঠালবাড়ীর হরিশ্বর কালোয়া গামে দাদুর বাড়িতে একটা টিনের ঘরে আশ্রিত। পড়াশুনা করতে গিয়ে কষ্টের কোনো শেষ ছিল না। নাই আর নাই। বাই, খাতা, কলম, ড্রেস, কেরোসিন কোনো কিছু কেনার টাকা নেই। সব কিছুর জন্য অন্যের কাছে হাত পাততে হয়। পরীক্ষার ফরম পূরণও করেছি একইভাবে। কিন্তু আগামী দিনগুলো কিভাবে চলবে এ দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে আমাকে।
মাফিকুল ইসলাম
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের মুক্তারাম গ্রামের মৃত. নুরুল আযমের ছেলে মাফিকুল ইসলাম চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সাফল্য অর্জন করে। সে স্বপ্ন দেখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার।
বড় বোন আফসানা অনার্সে পড়েন। মা মুক্তা বেগম সন্তানদের নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন। দু’ভাই বোনের টিউশনির টাকায় চলে টানাটানির সংসার। কষ্টের জীবন শুরু হয় ৫ বছর আগে। শ্রমিক বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর থেকে।
মাফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মতো কষ্টের জীবন যেন আর কারো না হয়। দিনের পর দিন না খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে। কখনও কখনও খাতা-কলম কেনারও টাকা ছিল না। কেনা হতো না কেরোসিন। ফলে দিনের আলোয় পড়তে হতো আমাকে। স্কুল ড্রেস ছিঁড়ে যাওয়ায় অন্যের পোশাক পড়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে।
৫ম শ্রেণি থেকেই ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করলেও এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছনি মাফিকুল। সে হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান।
তৌফিকুল ইসলাম তুষার
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের ভেরভেরী গ্রামের হতদরিদ্র আব্দুল বাতেনের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে তৌফিকুল ইসলাম তুষার মেঝ। কৃষি শ্রমিক বাবার ৫ জনের সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। তাই ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। লাগিয়ে দেয় শ্রমিকের কাজে।
মেধাবী তুষারের কষ্টের কথা বিবেচনা করে দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোকেয়া সিদ্দিকা নিজের বাসায় রেখে দেয়। ৭ম শ্রেণি থেকে এসএসসি টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত স্কুলে টানা প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে তুষার। চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তুষার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু প্রধান বাধা অর্থ।
তৌফিকুল ইসলাম তুষার বলেন, ফরম পূরণের টাকা বাবা যোগাতে পারেনি। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পরীক্ষা দেয়া। এ অনিশ্চয়তার সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েদেন মিজানুর স্যার, নয়ন স্যার ও রিজু স্যার। বড় বোন অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আর ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। বড় বোন টিউশনি করে লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছেন। অর্থের যোগান দিতে ব্যর্থ বাবার কালো মুখ দেখলেই নিজেরই কান্না বের হয়। আল্লাহ কেন আমাদের গরিব করে পাঠালো? এ জীবন খুব কষ্টের।
জাহিদ হাসান চৌধুরী
কাঠালবাড়ীর হরিশ্বর কালোয়া এলাকার উৎসাহীপুর গ্রামের মা হারা জাহিদ হাসান চৌধুরী ৫ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট। জাহিদের ১০ বছর বয়সে মা মিনা বেগম নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাবা জহিরুল হক স্থানীয় একটি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে সল্প বেতনে পিয়নের চাকরি করে।
তার সামান্য আয়ে সংসার চলে না। বোন হামিদা বেগম ও হালিমা বেগমের বিয়ে হয়েছে। হেনা বেগম বিএ পাস করে বসে আছে। টাকার অভাবে বিয়ে হচ্ছে না। আর এক বোন জেসমিন চৌধুরী টিউশনি করে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে। জমিজমা যা ছিল তা বিক্রি করে বাবা এখন নিঃস্ব। জাহিদ চলতি এসএসসি পরীক্ষায় দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
জাহিদ হাসান চৌধুরী জানায়, সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশনি করে এতদিন লেখাপড়া চালিয়ে এসেছে। কেরোসিন কেনার টাকা ছিল না। এজন্য পার্শ্ববর্তী মসজিদের বারান্দায় বৈদ্যুতিক আলোয় পড়ালেখা করতে হতো।
তিনি আরও জানান, ভাল কোনো পোশাক ছিল না। বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী এক বড় ভাইয়ের শার্ট,প্যান্ট ও সেন্ডেল ধার নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেই। এসব কষ্টের কথা কাউকে বলতেও নিজের ভাল লাগে না। আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন এখন কচুর পাতার পানির মতো টলোমলো।
সামিউল ইসলাম সুমন
পিতৃহারা সামিউল ইসলাম সুমন নানা প্রতিকূলতার মধ্যে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে আধার ঘর আলোকিত করেছে। সামিউল ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়।
সুমনের জন্মের আগে তার বাবা ইসমাইল হোসেন ২০০০ সালের ২৯ নভেম্বর নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন। এরপর মা সুফিয়া বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানে জন্ম হয় সুমনের। ২ ভাই ২ বোনের মধ্যে সামিউল ইসলাম সুমন সবার ছোট। বড় ভাই সুজন ইসলাম বগুড়া আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নরত।
সামিউলের বাবার জমিজমা না থাকার কারণে তারা বর্তমানে নানার বাড়িতে আশ্রিত। নিজেরা টিউশনি করে যা আয় করে আর অন্যের সহায়তায় কোনো রকমে চলে সংসার। তাই ভবিষ্যৎ লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় সুমন।
মনসুর আলী
মনসুর আলী দারিদ্রতাকে জয় করে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। তার বাবা দিনমজুর আব্দুল মতিন অন্যের বাড়িতে শ্রম বিক্রি করে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মনসুর আলী পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেয়ে আধার ঘরে আলো ছড়িয়েছে। মনসুর ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হতে চায়। কিন্তু এ স্বপ্ন পূরণের মাঝে দেয়াল দরিদ্রতা। ২ ভাই ১ বোনের মধ্যে মনসুর দ্বিতীয়। মা মোহসীনা বেগম একজন গৃহিণী। বড় ভাই মোস্তফা মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও অভাবের কারণে লেখাপড়া ছেড়ে বাবার দিনমজুরের কাজে নিযুক্ত হয়েছেন।
মনসুর নিজেও বিদ্যালয়ের খরচ যোগাতে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করেছে। একমাত্র ভিটে ছাড়া কোনো সম্পদ নেই।
এসএস/এমএস