ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সোশ্যাল মিডিয়া

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:২১ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

‘উই আর নাহিদ’ ও ‘উই আর উইথ নাহিদ’ হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে সামাজিক যোগোযোগমাধ্যম ফেসবুক। লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর #WeAreNahid #WeAreWithNahid লিখে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতা নাহিদ ইসলামের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন দল ও মতের লোকজন।

এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ‘উই আর নাহিদ’, ‘উই আর আসিফ’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করা হয়েছে৷ আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ, আগের কমিটির সমন্বয়ক সারজিস আলম, আবদুল কাদের, মো. আবু বাকের মজুমদারসহ অনেকে নাহিদকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

তারা বলছেন, নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মূলত এ কারণেই ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক মাধ্যমে এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন তার অনুসারী, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা।

সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক পদের নিয়োগপত্রে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সুপারিশসহ সই করা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নাহিদ ইসলাম এ বিষয়টিকে অসত্য এবং বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।

এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘১৫ই অক্টোবরের নিয়োগ ২২শে অক্টোবরই বাতিল করা হয়েছিল। সুপারিশকৃত গোপন নথির ছবি যারা পেয়ে যায় তাদের কাছে বাতিলকৃত প্রকাশ্য নোটিশটি অজানা থাকার কথা না। তারপরও যেকোনো মূল্যে অসত্য প্রচার করে বিতর্কিত করাটা এই সময়ের রাজনীতি।’

‘মূলত আওয়ামী বিরোধী ও আন্দোলনের পক্ষের একটি গ্রুপ এই ব্যক্তির সুপারিশ করেছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা উনার একাডেমিক এক্সেলেন্সি দেখে এনআইবি পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু ঐ ব্যক্তির রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড জানার পরে সাথে সাথেই উনার নিয়োগ বাতিল করা হয়।

গত মাসের ঘটনা। বাতিল করার ঘোষণাটিও সকলে অবগত আছে।’ বলে উল্লেখ করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আবু সাদিক কায়েম তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমরা জুলাইয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলাম। নাহিদ ইসলাম, Asif Mahmud যেহেতু ফ্রন্টলাইনে ছিলো ফ্যাসিস্টের প্রথম টার্গেটও তারাই এবং এখনো আছে। তাদের নিবেদিত লড়াই— নিশ্চিত কাঠগড়া কিংবা মৃত্যু জেনেও আপোষহীন রাজপথ আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত করেছে। নাহিদ শুধু রাজপথের সহযোদ্ধাই নয়, বন্ধুও বটে। ক্যাম্পাসে আমরা দীর্ঘ সময় যাবৎ পাশাপাশি থেকে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন করে আসছি।

হ্যাঁ, মানুষ সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয় না। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ছাত্র নেতৃত্ব এমন কোনো সিদ্ধন্ত নেয়নি যেটার জন্য হেনস্তার শিকার হতে হবে। আমরা চাই— রাষ্ট্রের ইতিবাচক সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক মীমাংসা। ছাত্র নেতৃত্ব আস্থা হারানোর মতো কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি। মনঃপূত সিদ্ধান্ত না নিলে আমরা গঠনমূলক সংশোধনী দিব আর তারা গ্রহণ করার মানসিকতাও দেখায়, দেখাচ্ছে, দেখাবে।’

যারা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে চায় তাদের সতর্ক করে সাদিক কায়েম লেখেন, ‘রাজপথে নামার অভ্যাস ও মানসিকতা হারাইনি। আমরা জানি কীভাবে বিপ্লব করতে হয়, বিপ্লবকে ধারণ করে সামনে এগুতে হয়। চিন্তাগত পার্থক্য থাকলেও জুলাইয়ের প্রশ্নে আমরা এক কাফেলাতেই আছি। ইনকিলাব জিন্দাবাদ, আজাদী জিন্দাবাদ।’

ভিডিও ভাইরাল করে অপপ্রচার

শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত ১১ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির সময় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেওয়া একটি স্লোগান নিয়ে নাহিদ ইসলামকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সচিবালয়ের সামনে ছিলেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা এই স্লোগান দিয়ে আসছিলেন। মূলত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে উদ্দেশ করে এই স্লোগান দেওয়া হয়েছে, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চান তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন হোক। এ জন্যই ‘আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলা হয়েছে।

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম #WeareNahid হ্যাশট্যাগ লিখে তার ফেসবুকে লিখেছেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আন্দোলন শুরু হওয়ার পর, মিছিলের জন্য শ্লোগান তৈরির একটা কর্মসূচি ছিলো।

তার অংশ হিসেবে আমি নিজেও একটা শ্লোগান যোগ করি, ২ নভেম্বর।
‘আর্মি হবে ঠিকাদার,
সব শালারাই বাটপার।’

সেদিন থেকেই এটা জবি আন্দোলনের শ্লোগান হিসেবে স্থান পায়। যা আমি সম্পূর্ণ টেন্ডার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও আর্মির হাতে জবি ক্যাম্পাসের ঠিকাদারি দেওয়ার মাধ্যমে দ্রুত ও স্বচ্ছ কাজের অগ্রগতির জন্য তৈরি করেছিলাম।

কাজেই লীগাররা নাহিদ ভাইয়ের বিরুদ্ধে এ শ্লোগান দাঁড় করিয়ে জলঘোলা করার চেষ্টা করবা না। তোমাদের বিষবৃক্ষ নির্মূল করতে আমরা সর্বদাই এক কাতারে।

তবুও যদি এসব করে বুকে আশা পাও তবে শুনো-
‘সাঈদ, নাহিদ দূর্বার,
আমরা হবো খুঁটি তার।’
#WeareNahid”

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

সমাজচিন্তার সম্পাদক আকরাম হোসাইন রাজ তার ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লিখেছেন, “সরাসরি সম্মুখে উচ্চস্বরে ‘সব শালারা বাটপার’ বলার স্বাধীনতা আনার জন্যই নাহিদরা বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের নাহিদ ইসলাম ভাই।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আশরেফা খাতুন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘শোনেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন আর্মি হবে ঠিকাদার স্লোগান দিয়েছে, সেই স্লোগানের মানে আর্মিকে রাষ্ট্রের ঠিকাদারি দেওয়া না। ওদের নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে ওদের প্রশাসন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বহু টালবাহানা করছে, সেজন্য ওরা চায় এই ঠিকাদারি আর্মিকে দেওয়া হোক। অথচ সেই স্লোগান নিয়ে লীগের বটগুলো গুজব ছড়াচ্ছে। অবশ্য লীগের এই স্বভাব বহু পুরোনো।’

আরেকটি পোস্টে আশরেফা খাতুন লিখেন, ‘বড় ভাই নাহিদ ইসলামকে ভরসা করি। ভাইয়ের ভুলত্রুটির সমালোচনা আমরাই করবো, কিন্তু ষড়যন্ত্র করতে দেব না কাউকে। আমি যদি এই আন্দোলনে কাউকে সামনে থেকে দেখে সাহস পেয়ে থাকি সেটা নাহিদ ভাই। পূর্ণ আস্থা রাখছি ওনার উপর।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী তরুণ লেখক রায়হান আহমেদ #WeAreNahid হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নাহিদ ইসলাম আমাদের ইমাম। আমাদের ভাই। ভুল হলে ইমামকে আমরা লোকমা দেবো। লোকমা দেয়া আমাদের অধিকার। কিন্তু নাহিদ ভাইকে আমরা একশ্রেণীর উগ্র নাগরিকের রোষানলে পড়তে দেবো না! এটা আমাদের ওয়াদা।’

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ তার ফেসবুকে #WeAreNahid_Asif হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লিখেছেন, ‘আজকে দেখছি নীতিহীন একটা মানুষ টকশোতে গিয়ে গলাবাজি করে গেলেন। উনি বা ওনাদের বিষয়ে আমি মাসুদ কথা বলা শুরু করলে ল্যাংটা হয়ে যাবেন।

বিপ্লব ক্যাম্নে হয়েছে আমি আব্দুল হান্নান মাসউদ, আব্দুল কাদের, রিফাত রশিদ আর মাহিন সরকারের চেয়ে ভালো কেউ ব্যাখ্যা করতে পারবে না।

নাহিদ ভাই, আসিফ ভাইকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবেন? এই নাহিদ ভাই, আসিফ ভাইয়ের ১৬, ১৭ জুলাই থেকে শুরু করে ২৫ তারিখ আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ভূমিকাই পরবর্তীতে বিপ্লবে আমাদের পথনির্দেশনা দিয়েছে।

আটকাবস্থা থেকে বেরিয়ে যে নেতৃত্ব ওনারা দিয়েছেন, তার ফলাফলস্বরূপ আজকে আপনাদের এসব গলাবাজি।

আমরা কথা বলা শুরু করলে তখন মুখ চেপে ধরতে আয়সেন না৷ পরিষদের ইতিহাসও জানানো হবে।

#সাধু_সাবধান
আমাদের ভাইদের ইঙ্গিত করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করবেন আর আমরা চুপ থাকবো তা আর হবে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের লিখেছেন, ‘নাহিদ ভাই, একজন আপোষহীন বীর! শত হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন, ভয়-ভীতির পরেও নাহিদ-আসিফ ভাইদের আপোষহীন, সুচতুর কৌশলের কাছে অপশক্তিরা হার মানতে বাধ্য হয়েছে। শহীদদের স্বপ্ন পূরণে আমাদের আপোষহীন লড়াই জারি থাকবে...।’

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারুফ মল্লিক তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নাহিদ, আসিফ, সারজিস, হাসনাত, মাসুদরা জুলাই বিপ্লবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। এদের অনেককেই গুম করা হয়েছিল। পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। ছিলো নানা প্রলোভন। চাপ ও প্রলোভনকে প্রত্যাখ্যান করে এরা শেষ পর্যন্ত অটল ছিল। এদের টলানো যায়নি। সামনে থেকে সাহসের সঙ্গে বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় এদের ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। ভুল করলে শোধরাতে তারা বিলম্ব করছে না।’

‘কিন্তু এদের পেছন থেকে ছুরি মারা মানে বাংলাদেশকেই মারা। এরাই এখন বাংলাদেশ। এদের উপর কোনো আঘাত আসলে পুরো বাংলাদেশ একসঙ্গে প্রতিবোধ করবে বলে আমার বিশ্বাস।’ বলে উল্লেখ করেন মারুফ মল্লিক।

যা বললেন হাসনাত-সারজিস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ফেসবুক আইডিতে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের দুইটি ছবি শেয়ার করেছেন। ছবি দুটি আন্দোলন চলার সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নাহিদকে তুলে নেওয়ার পর নির্যাতনের৷ ছবিতে দেখা যায় আঘাতের কারণে নাহিদ ইসলামের উরু এবং হাত কালচে আকার ধারণ করেছে। ছবির ক্যাপশনে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের অবস্থা এমনই। যারা হাসিনা পুনর্বাসন প্রকল্পকে সমর্থন করে তারা দেশকে সেই একই পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে আনবে; রক্তপাত, জোরপূর্বক গুম, হত্যা এবং আরও অনেক কিছু। হাসিনা শাসনের পুনর্বাসনকে সমর্থন করলে শেষ পর্যন্ত একই বিধ্বংসী পরিণতি ঘটবে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশই নাহিদ।
আমরা নাহিদ।
জুলাই ১৩৬, ২০২৪।’

ফেসবুকে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ, আসলে কী ঘটেছিল?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আগের কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম তার ফেসবুকে লিখেছেন, “নাহিদ আসিফরা জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই রাজপথে নেমেছিল। DGFI, DB'র পাশবিক অত্যাচার, কোনো কিছুই এদের টলাতে পারেনি। হাসনাতরা আরো ৩ মাস আগেই বলেছিলো ‘we are open to be killed’।

মাহিন সরকার, আবু বাকের মজুমদার, রিফাত রশিদ, হান্নান মাসুদদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই ৷ শেখ হাসিনার পুরো রেজিমের ভয় এদেরকে লক্ষ্য থেকে সরাতে পারেনি।”

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম আরও লেখেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লোগান ওদের পূর্ববর্তী করাপ্টেড সিস্টেম নিয়ে ছিল সেটা বুঝেছি। সহযোদ্ধাদের মধ্যে মান-অভিমান থাকতে পারে সেটা নিয়েও সমস্যা নেই। ন্যায়ের পক্ষে রাজপথের লড়াই সংগ্রাম মিনিটের মধ্যে আবার অমাদের ঐক্যকে শক্তিশালী করবে এটা আমরা বিশ্বাস করি। যখনই সংকট এসেছে আমার এই সহযোদ্ধারাই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে এসেছে। কিন্তু এজেন্ট হিসেবে ভেতরে ঢুকে এদের কাউকে প্রশ্নবিদ্ধ করার নোংরা প্রচেষ্টা যদি করা হয়, তবে সেটা কখনো সফল হবে না। এই বন্ধন এমনি এমনি তৈরি হয়নি। হতে হাত রেখে রাজপথে ঘাম ঝড়িয়ে, রক্ত ঝড়িয়ে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে একসাথে লড়াই করে এই বন্ধন তৈরি হয়েছে। সাবধান!’

পাশে আছেন সালমান মুক্তাদিরও

জনপ্রিয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করে #WeAreNahid হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এই যে যা ইচ্ছা তাই বলতে পারছো, কমপ্লেইন করতে পারছো, নিজের প্রফাইল থেকে সব শেয়ার করতে পারছো! কোয়েশ্চেন করতে পারছো। এটা ভুলে যাইও না। লাইফে কোনো দিন পারো নাই। এই ফার্স্ট পারছো। ভুলে যেও না।

কমপ্লেইন করো। অবশ্যই করবা। কেনো করবা না। কিন্তু তুমি এই রেভ্যুলুশনকে কোনোদিন ইগনর করতে পারবা না। অস্বীকার করতে পারবা না। ইন অল অনেস্টি, আমি নাহিদকে চিনিও না, জানিও না। বাট আমি খুব ভালো করে জানি আমি অর আমরা কয়েকশ মানুষ আজকে এখনো বেঁচে আছি ওদের মতো মানুষের স্যাক্রিফাইসের জন্য। তাদের ছাড়া আমাদের অর্ধেকই এখন ভ্যানিস হয়ে যাবে। এইটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’

এমএমএআর/এএসএম