ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সোশ্যাল মিডিয়া

আগামী প্রজন্মের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ | প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ৩০ মে ২০২৪

সকাল থেকেই একটি খবর ঘুরছে চোখের সামনে। দেশের একটি জাতীয় দৈনিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদন ঘিরে শিক্ষিত তরুণরা হাহাকার করছেন। সকার-বেকার বা চাকরিপ্রত্যাশী সবাই এমন ঘটনায় হতবাক হয়েছেন। কেউ আবার কটাক্ষ করছেন। তবে এমনটি ঘটা কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। পরিস্থিতি এমনটিই জানান দিচ্ছে।

আমাদের প্রথম পরিচয়েই প্রশ্ন করা হয়, ‘তুমি কী করো? একটা সরকারি চাকরি পেলে না?’ এই সরকারি চাকরির পেছনে ছুটতে গিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেও অনেকে নিচু গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশ করছেন। কিংবা উপরি আয়ের পথ খোঁজেন। কেননা এই প্রতিযোগিতা তাদের মধ্যে আমরাই ঢুকিয়ে দিয়েছি।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ইমেজ পোস্ট করে রাজিব খান সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘এই প্রতিবেদন দেখে আগামী প্রজন্মের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যারা অত্যন্ত মেধাবী তাদের হিসাব আলাদা।’ আগামী প্রজন্ম কী সিদ্ধান্ত নেবে? মানসম্মত একটি চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে করতে যদি চাকরির বয়সই চলে যায়?

মাহফুজ রহমান লিখেছেন, ‘কর্মকে মূল্যায়ন দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের শ্রমজীবীরা।’ তার এই শ্লেষেও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। আসলে চাকরিই কেন করতে হবে? উদ্যোক্তা হওয়া যায় বা কৃষিকাজ করা যায়। কিন্তু তাতে তো সমাজের নাক উঁচু ভাব কাটে না। তাদের তো একটা সরকারি চাকরিই চাই। তবে সমাজকে আমলে না নিলেই আপনি সৎভাবে উপার্জন করতে পারবেন।

তাই তো মো. কামরুজ্জামান রাজা লিখেছেন, ‘কিছু বলার নেই। সাপের কই মাছ গিলতে যাওয়ার মতো অবস্থা। আর এটা মাত্র একটা উদাহরণ, এরকম প্রতিকূল আরও হাজার হাজার উদাহরণ আছে।’ ফলে বোঝাই যাচ্ছে, আমাদের তরুণরা কতটা অসহায়, কতটা হতাশ। তা কেবল একটি নিয়োগেই বোধগম্য হওয়া উচিত।

আরও পড়ুন

কামরুজ্জামান রাজার পোস্টের মন্তব্যে এস্তেমা আলম হাসিব লিখেছেন, ‘আমি নিজেই ভাইবা দিয়েছিলাম ডিয়ার। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাকে ডিরেক্ট বলেছিল আমাকে চাকরি তারা দেবে না। মানে হলো এই চাকরি আমি নাকি করবো না। আল্টিমেটলি তাই, রেজাল্ট দেওয়ার পর নিজের রোল খুঁজেই পেলাম নাহ। ইহা চরম বাস্তব এবং সত্য।’

আদনান সোহাগ একটু সবিস্তারে বলেছেন, ‘রেলওয়ের সর্বশেষ নিয়োগে ১৯তম গ্রেডে (ওয়েম্যান) যোগদান করা সবাই মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। এই পদের ভাইভায় একজনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল‚ ‘আগে চিন্তা করে দেখেন পাথরের বস্তা মাথায় নিয়ে ঘুরতে পারবেন কি না! নয়তো এই চাকরিতে আসার দরকার নেই।’ এর জন্যই হয়তো ঋষী সুনাক বলেছেন‚ ‘You don’t have to go to university to succeed in life.’ নয়তো পড়াশোনা এবং ক্যারিয়ারের পেছনে ২০-২৫ বছর ব্যয় করার পর কেন হাজারো শিক্ষার্থীকে ৮,৫০০ টাকা বেসিকের চাকরি করতে হবে?’

তিনি আরও বলেছেন, ‘এই টাকা তো সে আরও দশ বছর আগে কেবল এসএসসি পাস সার্টিফিকেট দিয়েই আয় করার যোগ্য ছিলেন। কিংবা অন্য পেশায় আরও অধিক আয়ের সম্ভাবনা ছিল। তাহলে কেন এই উৎসব করে উচ্চশিক্ষার পেছনে ছুটে বেড়ানো? চাকরির বাজার সম্প্রসারণ না করে উচ্চশিক্ষিতের হার পাহাড়ে নিয়ে ঠ্যাকালে হতাশা বা বিড়ম্বনা বাড়বে। অতঃপর একদিন মানুষ শিক্ষার মর্ম ভুলে টিকটকার হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামবে। শিক্ষা অর্জন যদি পেট চালানো এবং সম্মান কোনোটাই বয়ে না আনে, তাহলে নামমাত্র এই শিক্ষাগ্রহণের সার্থকতা শূন্য।’

এই হতাশার চিত্র শুধু আজকেরই নয়। চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। ভবিষ্যতেও হয়তো থাকবে। তবে যুবসমাজ চাইলেই এই সিস্টেম বদলে দিতে পারে। সরকারি চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে। একদিন হয়তো সরকারি চাকরিই তাদের খুঁজবে। হবে কি কখনো এমন? ছোটবেলায় শোনা গল্পের মতো? বাড়ি থেকে ধরে চাকরি দিয়ে দিলো। তাহলে তো ভালোই হতো।

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন