ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কি বন্ধ হবে?
ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত ১৫ মে দুপুরে বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৭’-এর অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
সভায় বলা হয়, ‘সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আমরা ২২টি মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধ করেছি। এখন থেকে ব্যাটারিচালিত কোনো অটোরিকশা বা গাড়ি যেন ঢাকা শহরে না চলে। তবে শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ এখন জনগণের প্রশ্ন হলো, এই নির্দেশনা কি সবাই মানবেন? আসলেই কার্যকর হবে? তাহলে চালকদের কী হবে? অনেকে এমনই প্রশ্ন তুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে সবারই দাবি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করা উচিত।
আওয়ার চিটাগং-চট্টগ্রাম লিখেছে, ‘ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম শহরে কি বন্ধ করা উচিত?’
এইচএম আমিনুল ইসলাম রকি ও বৃষ্টি হাওলাদার লিখেছেন, ‘আজ থেকে রাজধানীতে চলবে না ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ব্যাটারিচালিত রিকশা হলো এলাকা-মহল্লার জন্য একটা ভয়ংকর আতঙ্কের নাম। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করার জন্য আমিও একমত। কিন্তু এই চালকদের অন্য একটা ব্যবস্থা করা উচিত। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করার আগে পার্টস আমদানি বন্ধ করা দরকার।’
নূর জামান লিখেছেন, ‘ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো আরও অনেক আগেই বন্ধ করা উচিত ছিল। এরা বিদ্যুৎ বিল দেয় না এবং শ্রমিক সংকটে ফেলেছে রাষ্ট্রকে।’
আরও পড়ুন
ফাতেমা তুজ জোহরা লিখেছেন, ‘বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করা হলো কেন?’
কেউ কেউ আবার ভিন্নমতও পোষণ করেছেন। যদিও তারা পক্ষ নিয়েছেন চালকদের। এ প্রসঙ্গে রুদ্র দাস লিখেছেন, ‘অটোরিকশা হলো গরিবের দুমুঠো আহারের প্রধান কারণ। অটো তুলে দিলে এত লক্ষ মানুষের পেট কেমনে চলবে? বেশিরভাগ পঙ্গু মানুষেরা এই অটোরিকশা চালিয়ে আয়-রোজগার করে। এটা বন্ধ হলে তাদের আয় বন্ধ হয়ে যাবে। কয়কজন মহিলাও দেখি অভাবের তাড়নায় এই রিকশাগুলো চালায়।’
এরপর তিনি লিখেছেন, ‘এগুলো বন্ধ হলে তারা তো বাংলারিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমে আয় করতে পারবে না, তাই না? অনেকগুলো মানুষের কষ্ট হয়ে যাবে। বন্ধ করে দিলে সিএনজির প্রচলন না হয় বাড়বে। তখন গ্যাস খরচ বেশি হবে। এবার বন্ধ করবেন সিএনজি? তাহলে কি আগের কালের মতো গরুর গাড়ি নিয়ে চলবেন? প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যারা চলাফেরা করে, যাদের কালো টাকার পাহাড় আছে; তারা এর পক্ষে!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘হ্যাঁ জানি, এগুলোর জন্য অনেক অ্যাক্সিডেন্ট হয়। তবে এগুলো বন্ধ না করে সরকারের উচিত এগুলোকে নিয়ে কাজ করা। বড় বড় প্রকৌশলীদের সাহায্য নিয়ে এগুলোর গতিকে সীমিত করে ফেলা। এটি সরকারের পক্ষে অসম্ভব কোনো কাজ নয়। চাইলে সম্ভব। যদি এগুলো বন্ধ করে ফেলা হয়, তবে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে তাদের দুমুঠো খাবার কেড়ে নেওয়া হবে।’
এসইউ/জিকেএস