ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: ফেসবুকে নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড়
ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চুরির অপবাদ দিয়ে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল শিক্ষার্থী। কয়েক দফায় তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি তাকে ডাল-ভাত খাওয়ানোর পরও মারধর করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে একজন যুবককে এভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে সব মহলে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা এ নৃশংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। এ ঘটনার নিন্দা-প্রতিবাদে ফেসবুকে রীতিমতো ঝড় উঠেছে। দ্রুত এ ধরনের মব জাস্টিসের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ এবং তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে সরব তারা।
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর এ তালিকায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইছেন।
ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাজিদ হাসান। নিজের ফেসবুকে এক বছর আগে মারা যাওয়া ছোট ভাইয়ের ছবি শেয়ার দিয়ে লেখা এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘বিশ্বাস করেন, গত বছর কলিজার টুকরা ছোট ভাইটা মারা যাওয়ার পর আর কারও মৃত্যুতে এতটা কষ্ট পাইনি। যতটা তোফাজ্জল ভাইয়ের মৃত্যুতে পাচ্ছি। শরীরটা জাস্ট কেঁপে উঠছে। আহা! মানুষ হয়ে মানুষকে কেউ এভাবে মারতে পারে..? যে মানুষটা তার ভালোবাসা হারিয়ে, পরিবারের সবাইকে হারিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে বেঁচে ছিলেন, তাকে এভাবে মেরে ফেলা হলো! ইশ...। এমন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবও ঢাবি ও জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘গত ৫ আগস্ট আমরা হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি। এই হাজারো শহীদদের প্রতি যদি আমাদের এতটুকু শ্রদ্ধাবোধ থাকে তাহলে মব-(ইন)জাস্টিস থামাতেই হবে। এই ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সুন্দর একটা বাংলাদেশ নির্মাণের এই সুযোগ হারানো যাবে না।’
সাংবাদিক আজিবুল হক পার্থ লিখেছেন, ‘ঢাবিতে মারপিটের সময় ও আগে-পরের অনেক ফুটেজ আছে। তাই দ্রুত চিহ্নিতদের বিরুদ্ধে নিতে হবে। না হলে এ ঘটনাই হবে ক্যাম্পাসে ফ্যাসিবাদ জেঁকে বসার ভিত্তি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জি কে এম মেশকাত চৌধুরী লিখেছেন, ‘মবজাস্টিস বলে কিছু নাই। এটা অবিচার, অবিচার, অবিচার। যারা অবিচার করেছে তাদের বিচার করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাংবাদিক জসিম মজুমদার তোফাজ্জলের শেষবার ভাত খাওয়ার ছবিটি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে ভাত খাওয়ানোর পর গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হলো এক যুবককে।’
রায়হানুল রানা নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘বুয়েটের আবরারকে যারা মেরেছিল তারাও খুনি। আজ ঢাবি/জাবিতে যারা দুজনকে পিটিয়ে মারলো তারাও খুনি। সব খুনিদের বিচার চাই।’
এএএইচ/এমএইচআর/জেআইএম