শহীদ ইয়ামীন নতুন একটি বাংলাদেশ
অধ্যাপক রকিবুল হাসান
‘এমনভাবে গুলি কর, যেন না বাঁচে’। এ কথার প্রতিবাদ করে ইয়ামীন একাই সাঁজোয়ার ট্রে নামিয়ে ফেলতে চেষ্টা করে, যাতে গুলি করতে না পারে। আর তখনই নিকট সামনে থেকে তাঁকে রাবার বুলেটে ঝাঁঝরা করে দেয়। এ কথাগুলোই আজ সাভারে শুনছিলাম অনেকের কাছে।
ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ ইয়ামীনের বাড়িতে দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি আজ (২৪ আগস্ট) সপরিবারে আমরা। ইয়ামীন আমার ছোট-ভাই (চাচাতো ভাই)। বাসায় ইয়ামীনের বই খাতা কাপড়চোপড় শূন্যতায় কাঁদছে। হাহাকার করছে। একই সঙ্গে গর্ব ইয়ামীন এখন নতুন একটি বাংলাদেশ।
ইয়ামীনের বাবা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন চাচা কত কত স্মৃতিচারণ করলেন। চোখভরা পানি আর বেদনার্ত কণ্ঠে। বুকভাঙা আর্তনাদ। আমি, মিলি, কাব্য, ইকবাল চাচা, মতিয়ার ভাই-সারাটা সময় ইয়ামীনের স্মৃতির ভেতর ডুবে ছিলাম। ডুবে আছি।
- আরও পড়ুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও শহর পরিষ্কারে প্রশংসিত শিক্ষার্থীরা
ইয়ামীন ঘুমিয়ে আছে সাভার ব্যাংক টাউন কবরস্থানে। তাঁর কবরে লাল সবুজের পতাকা, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের নতুন ইতিহাস, নতুন ঠিকানা।
বাবার ইচ্ছা ছিল, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুরে, নিজের গ্রামে ইয়ামীনকে নিয়ে যাবে। সেখানেই চিরঘুমে ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিবে। বাবার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। ভয়ংকর বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে। পরে বাধ্য হয়ে সাভার ব্যাংক টাউন কবরস্থানে বীর-সন্তানকে দাফন করেন। সেখানে এখন জাতীয় পতাকাশোভিত হয়ে ঘুমোচ্ছে আমাদের পরম স্নেহের ইয়ামীন, শহীদ ইয়ামীন।
শহীদ ইয়ামীন, ছোট ভাইটি, তুমি নিজেই এখন নতুন একটি বাংলাদেশ। তোমার গর্বে মাথা উঁচু করি। স্যালুট, ছোট ভাইটি।
লেখক: প্রধান, বাংলা বিভাগ, প্রাইম ইউনিভার্সিটি।
এসইউ/জেআইএম