প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের নিয়ে চারদিকে হইচই
বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় বিতর্কের মুখে পড়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এরই মধ্যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির দুজন উপ-পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। খবরটি প্রকাশের পর সারাদেশ যেন নড়েচড়ে বসেছে। সবাই নিন্দা জানাচ্ছেন বিভিন্ন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন অনেকেই।
কাজী বিল্লাল হোসাইন লিখেছেন, ‘আমরা কিন্তু জানি আমাদের সমাজে কে কে ঘুস খায়, কার কার বেতনে হাত দিতে হয় না। কোন, কোন ব্যক্তি সরকারি চাকরি পাওয়ার পর হঠাৎ বড়লোক বনে গিয়েছেন। এটাও জানি, ঘরে ঘরে চাকরি দিয়ে জনপ্রিয় মানবদরদী তকমা কে পেয়েছে? কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সবাই তাকে সম্মান করে। মসজিদ কমিটির সদস্য বানায়। কেউ ঘৃণা করে না। সুতরাং আমরা সবাই অপরাধী। আমি একজনকে চিনি; যিনি একজন সামান্য তহশিলদার। কিন্তু হোটেল রেডিসনে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করেছে ১ কোটি টাকা খরচ করে। ওই দাওয়াতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সবাই যোগদান করেছেন। বাসায় গল্প করেছেন ১ কোটি টাকা খরচ করে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করেছে। অথচ এত নামাজি লোক থাকতে কেউ প্রশ্ন করেনি, তোমার বেতন কত? এত টাকা কোথায় পেলে?’
বায়েজিদ হাওলাদার লিখেছেন, ‘সমাজে চোর বাটপার বেড়ে গেলে ধর্মচর্চাও বেড়ে যায়! আবেদ আলী জীবন এই কথার একজন আস্ত উদাহরণ। সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ ‘লালসালু’ উপন্যাসে বলেছেন, ‘সর্ষের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি।’
রফিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘প্রশ্নকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে শুধু ড্রাইভার ভাইরাল হলো। বাকিরা কী দোষ করলো?’
যুবাইর আহমাদ সাব্বির লিখেছেন, ‘প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক হয়েছেন ১৭ জন। কিন্তু সবাই আবেদ আলী চাচাকে নিয়ে কথা বলছেন কেন?’
কে এম ইউসুফ লিখেছেন, ‘আবেদ আলীরা খারাপ। আর যারা তাদের থেকে প্রশ্ন কিনে চাকরি করছেন তারা ভালো।’
হাসান হামিদ লিখেছেন, ‘পিএসসি বিবৃতি দিয়েছে, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। সাবেক ড্রাইভার বলছে, ফাঁস করে যা কামিয়েছি আল্লাহর রাস্তায় খরচ করছি।’
তৌহিদুজ্জামান তন্ময় লিখেছেন, ‘বিসিএস তৈরির কারিগর তারা! গুনে গুনে ১৭ জন। সবাই এখন ফুলেফেঁপে একাকার। হয়েছেন সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ কিংবা কোটি টাকার ব্যবসায়ী। যারা বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চাকরি পান, তারা সত্যিকারের মেধাবী। কিন্তু সেই জায়গা যদি সংকুচিত, কলুষিত হয়ে যায়, তাহলে তরুণ প্রজন্ম কোথায় যাবে? হ্যাঁ, আজকে তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই নিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে পাড়ি জমাচ্ছেন দেশের বাইরে। জাতি হয়ে যাচ্ছে মেধাশূন্য।’
এসইউ/এএসএম