ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সোশ্যাল মিডিয়া

ফেসবুক থেকে পাওয়া

আসিম জাওয়াদের জন্য শোক ও শ্রদ্ধা

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ | প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ১০ মে ২০২৪

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ নেওয়ার সময় বিধ্বস্ত হয়। ৯ মে সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল সংলগ্ন নদীতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার আগে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এসময় দুই পাইলট প্যারাসুট নিয়ে বিমান থেকে লাফ দেন।

স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিএনএস পতেঙ্গায় নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে, বাবা-মা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এ ঘটনার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নেটিজেনরা। শহীদ আসিম জাওয়াদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তার দেশপ্রেমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সবাই। একটি পোস্ট প্রায় সবার আইডিতে লক্ষ্য করা গেছে। পোস্টটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো-

‘একবার চিন্তা করুন তো, এই বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্য, যতটুকু ফুটেজে দেখেছেন। একটা YAK-130 অ্যাডভান্স জেট প্রশিক্ষণ বা যুদ্ধ বিমান আকাশে থাকা অবস্থায় ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। সেই বিমানকে রানওয়েতে ল্যান্ড করানো মোটেও সম্ভব নয়। যার কারণে পাইলট চাইলেই কিন্তু আকাশে থাকা অবস্থায় ইনজেকশন করে নিজেরা বের হয়ে আসতে পারতেন। এতে তারা সহজেই বেঁচে যেতেন। কিন্তু তারা সেই কাজটি করেননি। কেন করেননি তা জানেন? কারণ তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বিমানটিকে বাঁচানোর জন্য।

আকাশে থাকা অবস্থায় বিমান থেকে যদি তারা বের হয়ে আসতেন। তাহলে বিমানটি যে কোনো জায়গায় গিয়ে বিধ্বস্ত হতে পারতো। হয়তো কারো ঘরের ওপর অথবা আশেপাশে ইস্টার্ন রিফাইনারি, পদ্মা, মেঘনা, কাফকোর ওপর অথবা কোনো লোকালয়ে লোকজনের ওপর। সে ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো। সেই চিন্তা করে তারা নিজেদের জীবনের চাইতে দেশের সম্পদ এবং দেশের মানুষ তথা আপনার-আমার কথা বেশি ভেবেছেন। সেই কারণে তারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজের জীবনকে পরোয়া না করে দেশের সম্পদ রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন।

আরও পড়ুন

খেয়াল করে দেখুন, আগুন ধরা বিমানটিকে পাইলট নদীতে নিয়ে আসতে সক্ষম হন এবং বিমানটি ক্রাশ করার ১-২ সেকেন্ড আগে তারা ইনজেকশন করে বের হয়ে আসেন। কতটুকু চেষ্টা করেছেন তারা বিমানটিকে বাঁচানোর জন্য, ভাবা যায়।

এটা কেমন নেশা? ইঞ্জিনে আগুন লাগার পরেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমান বাঁচানোর লড়াই। নতুন বউ, শিশু সন্তানদের মায়া কীভাবে ভুলে যায় মুহূর্তের মধ্যেই।

আজকের দুর্ঘটনায় শহীদ হয়েছেন একজন পাইলট। আর পাইলট কতটুকু দক্ষ হলে অন এয়ারে একটা ইঞ্জিনে আগুন ধরা বিমানকে রানওয়ের ওপর দিয়ে নিয়ে এসে নদীর ওপরে ফেলে নিজেরা বের হয়ে আসেন। সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, দুইজন পাইলটের মধ্যে একজন পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ আসিম জাওয়াদ শহীদ হন। তাদের এ ঋণ দেশ ও জাতি আজীবন মনে রাখবে। শ্রদ্ধা ও সম্মান।’ (সংগৃহীত)

এ ছাড়া অনেকেই নিজের আইডিতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্ট করেছেন। সারাদেশের মানুষ শোকস্তব্ধ হয়েছেন। বিশ্বজিৎ কুমার বিশ্বাস লিখেছেন, ‘মৃত্যুকে কতো সহজে মেনে নেয় এঁরা। আর কতো সহজে ভুলে যাই এঁদের।’

কাজী বিল্লাল হোসাইন লিখেছেন, ‘বিধ্বস্ত বিমানে নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদ কত কিছুই বিজয় করেছেন। কিন্তু মৃত্যুর কাছে এত অল্প বয়সে হেরে গেলেন। তবে দিয়ে গেলেন এই জাতিকে এক বড় শিক্ষা। এক সাহসী সন্তানকে জাতি হারালো! আগুন ধরা বিমানটি লোকালয়ে পড়তে না দিয়ে জনমানবহীন এলাকায় নিতে গিয়ে মানুষটা নিজের জীবন উৎসর্গ করল। যে বিরল দৃশ্য পতেঙ্গার মানুষ দেখেছে, তা হয়তো কেউ দেখেনি। দেশপ্রেমিক পাইলট তার জীবন উৎসর্গ করে অন্যদের নিরাপদে রাখলেন।’

জনপ্রিয় লেখক ও উপস্থাপক ইকবাল খন্দকার লিখেছেন, ‘বৈমানিক আসিম জাওয়াদ আমার কেউ না। তবু তাঁর বীরত্বপূর্ণ মৃত্যুর খবর যতবার টিভিতে দেখছি, চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। তাঁর আত্মা শান্তিতে থাকুক।’

এসইউ/এএসএম

আরও পড়ুন