ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সোশ্যাল মিডিয়া

ফেসবুক থেকে পাওয়া

আলোচনায় যখন বাবা-মাকে দেওয়া রাফসানের গাড়ি

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ | প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, ০৯ মে ২০২৪

সবাই সফল হতে চান। প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাবা-মাকে সুখে রাখতে চান। মাঝে মাঝে চমকেও দিতে চান। তবে সেটি যদি হয় বিশ্বের দামি গাড়ি। তাহলে তো একটু বেশি চমকে যাওয়ার কথা। ঠিক তেমনই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাফসান দ্য ছোট ভাই এবার চমকে দিয়েছেন বাবা-মাকে। তাদের উপহার দিয়েছেন জার্মান কোম্পানি আউডির একটি গাড়ি। যে গাড়ি ইউরোপ-আমেরিকায় বিলাসবহুল বা সবচেয়ে দামি হিসেবে দেখা হয়। বাংলাদেশে খুব কম মানুষের কাছে এ গাড়ি আছে।

রাফসান দ্য ছোট ভাই—এই সময়ের আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন একজন ইনফ্লুয়েন্সারও। তার মূল নাম ইফতেখার রাফসান। বয়স ২৬ বছর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। ইদানীং সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বাবা-মাকে উপহার দেওয়া তার দামি গাড়িটি। যা দেখে অনেক তরুণের মনে হতাশা-নৈরাশ্য ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ নিজেদের ধিক্কারও দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ অনুপ্রাণিতও হচ্ছেন। নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন।

চলতি বছরের ৫ মে রাফসান দ্য ছোট ভাই তার বাবা-মাকে গাড়িটি উপহার দেন। সেই মুহূর্তটি তিনি ভিডিও ধারণ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, আবেগে আপ্লুত হয়ে তাদের চোখে আনন্দ অশ্রু ঝরছে। এটি নিঃসন্দেহে বাবা-মায়ের জন্য অনেক বড় স্মৃতি। অনেক বড় প্রাপ্তি। এই ঘটনা হয়তো অনেক সন্তানকে অনুপ্রাণিত করবে। আবার ব্যর্থতার গ্লানিতে লজ্জিতও করবে। তবে সবার ভাগ্যে এমন ঘটনা তৈরি করা খুব সহজ কাজও নয়। রাফসানের মতো ক’জন তরুণই এমন করতে পারবেন? বা এমন দৃষ্টান্তইবা কয়টি আছে?

আলোচনায় যখন বাবা-মাকে দেওয়া রাফসানের গাড়ি

রাফসানের বয়সের অনেকেই এখনো পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। পড়াশোনার খরচ জোগাতেও অনেককে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে টাকা এনে পড়তে হচ্ছে। টিউশনি কিংবা পার্টটাইম চাকরি করে চলতে হচ্ছে। কেউ কেউ দিনের পর দিন চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে শুধু ফুড রিভিউ, ট্রাভেল ভ্লগিং বা কনটেন্ট বানিয়ে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে বিত্তশালী হওয়া চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। এর জন্য দরকার ধৈর্য, চেষ্টা আর কৌশল। রাফসান দ্য ছোট ভাই ২০১৭ সালে ফুড রিভিউয়ের মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি ধীরে ধীরে বর্তমান অবস্থানে এসে পৌঁছেছেন।

রাফসানের পরিবারের জন্য এটিই প্রথম গাড়ি নয়। তাদের আগেই তিনটি গাড়ি রয়েছে। সুতরাং তিনি উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারেরই সন্তান। পরিবারের সহযোগিতায় বা অনুপ্রেরণায় আজকের অবস্থান আসতে পেরেছেন। তবে কনটেন্টের মান ভালো হওয়ায় তার ফলোয়ার বা ভক্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়েছে। তার কনটেন্ট কখনোই হিংসা, মারামারি বা অশ্লীল বিষয়কে প্রমোট করেনি। ফলে সব মহলে সমান গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কনটেন্ট নির্মাণের ক্ষেত্রে তার পছন্দকেও বেছে নিয়েছেন দর্শক।

আরও পড়ুন

আলোচনায় যখন বাবা-মাকে দেওয়া রাফসানের গাড়ি

তাই বলে সবাই তো আর কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে চাইবেন না। একটি রাষ্ট্রে সব পেশার মানুষই প্রয়োজন। তবে শিক্ষক চাইলে শিক্ষা বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। চিকিৎসক চাইলে অবসরে চিকিৎসা বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। কৃষককে দিয়ে কৃষি বিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করানো যায়। যেমন দোয়েল এগ্রো কৃষি বিষয়ক কনটেন্ট দিয়ে মানুষের মন জয় করেছে। অর্থাৎ আপনার লক্ষ্য ঠিক থাকতে হবে। এমনকি ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে।

রাফসানের গাড়ি উপহার দেওয়া দেখে যারা হতাশ হয়েছেন, তাদের উচিত হবে নিজের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সফল হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। কেননা সবাই ‘রাফসান দ্য ছোট ভাই’ হতে পারবেন না। চাইলেও সবাই তৌহিদ আফ্রিদি, তাসরিফ খান বা ব্যারিস্টার সুমন হতে পারবেন না। কেননা সফলতার সংজ্ঞা আসলে নির্দিষ্ট নয়। সফলতা একটি আপেক্ষিক বিষয়। নিজের মেধা এবং চেষ্টাকে কাজে লাগাতে পারলেই সফল হওয়া সম্ভব।

আলোচনায় যখন বাবা-মাকে দেওয়া রাফসানের গাড়ি

মনে রাখতে হবে, কে সফল হলো আর কে ব্যর্থ হলো সেটা ধর্তব্য নয়। রাফসান যে কাজটি করতে পেরেছেন, তার জন্য শুভ কামনা জানাতেই হবে। ব্যর্থরাও একদিন সফল হবেন। আসলে সফলতা বা ব্যর্থতার কোনো সীমারেখা নেই। রাফসান সফল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক কার্যক্রমেও নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। মানুষের ভালোবাসা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যেহেতু মানুষের ভালোবাসা পাওয়াটাই মুখ্য। অনেক বিত্তশালী আছেন, যাদের কখনো মানুষের মাঝে পাওয়া যায় না। তারা মানুষের কাছে পৌঁছাতেও পারেন না।

সবশেষে বলবো, যে কোনো বিষয় নিয়েই তর্ক-বিতর্ক হতে পারে। হিংসা-প্রতিহিংসা থাকতে পারে। মানুষের সফলতায় ঈর্ষা তৈরি হতে পারে। দিনশেষে নিজের লক্ষ্যে অটল থাকা, মানুষের পাশে থাকা, ভালো কাজ করে যাওয়া খবুই জরুরি। যারা আজ রাফসানকে ঈর্ষা করছেন, একদিন তারাও হয়তো সফল হবেন। কেননা পৃথিবীতে সফল লোকের সংখ্যা বাড়লে পৃথিবী সুখী হবে। মানুষ ভালো থাকবে। পরিবার ভালো থাকবে। বাবা-মা নিশ্চিন্তে আরামে ঘুমাতে পারবেন।

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন