ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সালতামামি

ফিরে দেখা আশুলিয়া

প্রকাশিত: ০৬:১২ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫

আশুলিয়ার কাঠগড়ায় ভরদুপুরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ও বাড়ইপাড়া নন্দন পার্কের সামনে পুলিশ চেক পোস্টে শিল্প পুলিশের এক কনস্টেবলকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা চলতি বছরের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম আলোচিত। ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতের গুলিতে ব্যাংক কর্মকর্তা-স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে এক ডাকাত সদস্যসহ মোট আটজন নিহত হন।

ফিরে দেখা- ২১ এপ্রিল ২০১৫
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিশমাইল-জিরাবো আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে পাঁচ কিলোমিটার গেলেই আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার। বাজারের ভিতর দিয়ে ২০০ মিটার হেটে গেলেই পাওয়া যাবে মসজিদ। ঠিক মসজিদ ঘেষেই নজুমুদ্দিন সুপার মার্কেট। ওই মার্কেটের ২য় তলায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শাখায় চলতি বছরের ২১ এপ্রিল দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ ও দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘঠিত হয়।


কী হয়েছিল সেদিন?
সবেমাত্র দুপুরের খাবার শেষে করে ব্যাংক কর্মকর্তা ও গ্রাহকরা লেনদেন শুরু করেছেন। ঠিক এমন সময়ই গ্রাহক বেশে ব্যাংকের ভিতরে প্রবেশ করে তিন ডাকাত সদস্য। এবং আরও তিনজন ব্যাংকের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। ভিতরে প্রবেশ করা ডাকাত সদস্যরা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিরাপত্তাকর্মী বদরুল ইসলামকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে

এসময় ডাকাত দলের বাকি সদস্যরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ওয়ালিউল্লার কক্ষে প্রবেশ করে একটি বোমা রেখে ভল্টের চাবি চায়। ব্যাংক কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ ভল্টের চাবি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ডাকাতরা তাকেও কুপিয়ে ও গুলি করে ক্যাশে থাকা টাকা লুট করে নেয়।


ডাকাতির এক পর্যায়ে স্থানীয়রা স্থনীয় একটি মসজিদে মাইকিং করে ডাকাত প্রতিহত করতে গেলে ডাকাতরা তাদের জীবন বাচাতে ব্যাংকের ভিতরে ও বাহিরে এলোপাতারি গুলি ও বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যেতে থাকে।

এসময় ডাকাতদের ছুড়া গুলি ও বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই ব্যাংক ম্যানেজার ওয়ালিউল্লাহ, নিরাপত্তাকর্মী বদরুল আলম, ব্যাংকের নিচে চটপটির দোকানদার মনির হোসেন, স্থানীয় ছাপাখানার মালিক পলাশ, ওয়ার্কসপ মালিক জিল্লুর রহমানসহ স্থানীয় মিজান মারা যান।

অপরদিকে, পালানোর সময় তিন ডাকাতকে জনতা আটক করে গণপিটুনি দিলে অজ্ঞাত পরিচয় এক ডাকাত সদস্য ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এছাড়া ডাকাতদের হামলায় গুরুত্বর আহত বাজারের দর্জি দোকানের কর্মচারী জমির উদ্দিন ও নুর মোহাম্মদ সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।


ফিরে দেখা- ৪ নভেম্বর ২০০১৫
চলতি বছরের ৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া নন্দন পর্কের সামনে পুলিশ চেক পোস্টে সকাল বেলা প্রকাশ্যে শিল্প পুলিশের দুই কনস্টেবকে ছুড়িকাঘাত ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে শিল্প পুলিশের কনস্টেবল মুকুল নিহত এবং অপর কনস্টেবল নূর আলম গুরুত্বর আহত হন।

কী হয়েছিল সেদিন?
সকাল পৌনে ৮টা। আশুলিয়া থানার আওতাধীন শিল্প পুলিশের একটি দল নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া নন্দন পার্কের সামনের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিল। এসময় গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে আশুলিয়ার নবীনগরগামী একটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা শিল্প পুলিশের কনস্টেবল মুকুল ও নুর আলম।


মোটরসাইকেলটির গতিরোধ করার সঙ্গে সঙ্গেই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা শিল্প পুলিশের ওই দুই কনস্টেবলকে এলোপাতারি ছুড়িকাঘাত করতে থাকে। এসময় দুর্বৃত্তের ছুড়িকাঘাতে গুরুতরভাবে আহত হন মুকুল ও নুর আলম। এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পরে স্থানীয়রা মুকুল ও নুর আলমকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভার এনাম মেডিকেলে পাঠানো হলে পথিমধ্যে মুকুল মারা যান এবং উন্নত চিকিসাসেবা পেয়ে বর্তমানে নুর আলম সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

আল-মামুন/বিএ