ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সালতামামি

বছরজুড়ে আলোচিত ছিল ব্লগার হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬ এএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫

বিদায়ের পথে ২০১৫ সাল। নানা কারণেই ২০১৫ ছিল আলোচিত সমালোচিত। বছর জুড়ে জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্রধান টার্গেটে ছিল মুক্তমনা লেখক ও ব্লগাররা। জঙ্গি হামলায় এ বছরটিতে নিহত হয় ৫ জন ব্লগার। একে একে ৫ ব্লগার ও লেখকের হত্যার পর নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টিও জোর আলোচনায় ওঠে আসে।

ব্লগার হত্যার বেশ কয়েকটিতে দায় স্বীকার করে ঘটনায় বিবৃতিও দেয় জঙ্গি সংগঠনগুলো। তবে ব্লগার হত্যাকাণ্ডে জঙ্গি হামলার পাশাপাশি একটি ছাত্র সংগঠনকেও দায়ী করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

অভিজিৎ রায়
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বই মেলা থেকে বাসায় ফেরার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে বিজ্ঞান মনষ্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী অভিজিৎ রায়কে। একই সময় আহত হন অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী ও ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যা।

হত্যার পরদিনই দায় স্বীকার করে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। হত্যাকাণ্ড তদন্তে বাংলাদেশে আসে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) সদ্যরা। ১১টি আলামত পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র

অভিজিৎ রায়কে হত্যার হুমকি দেয়ায় ফারাবি শফিউর রহমান নামে এক যুবককে গত ২ মার্চ যাত্রাবাড়ী থেকে আটক করে র‌্যাব। পরে র‌্যাব দাবি করে, অভিজিৎ রায় হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে ফারাবী। চট্রগাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছিল ফারাবি।

ওয়াশিকুর রহমান
অভিজিৎ রায়কে হত্যার পর ধর্মীয় মতাদর্শগত কারণে গত ৩০ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার বেগুনবাড়িতে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা। পালানোর সময় এলাকার কয়েকজন হিজড়া দুই হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সন্দেহ প্রকাশ করে, ‘ওয়াশিকুরের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে আনসারুল্লাহ।’

এরপর অবশ্য গ্রেফতারকৃত দু`জনকে কয়েক দফায় রিমান্ডে নেয়ার পর তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য তথ্য পায়নি বলে দাবি করে পুলিশ।

তবে ডিএমপি’র মুখাপাত্র যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ‘স্লিপার সেল-এর সদস্য`।

অনন্ত বিজয় দাস
একইভাবে মে মাসের ১২ তারিখ সিলেটে খুন হন ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস। ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার আগে অনন্তের রক্তমাখা দেহের ছবি তোলার কারণে একজন ফটো সাংবাদিককে সন্দেহ করে পুলিশ। আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেদিনই ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন মনিরুল। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের স্লিপার সেলের কাজ।`

নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়
গত ৭ আগস্ট রাজধানীর খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ গোড়ানে ভাড়া বাসায় ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (২৭) দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন। সেদিন রাতেই তার স্ত্রী আশা মনি বাদি হয়ে খিলগাঁও থানায় অজ্ঞাত দুর্বিত্তদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের দুই জঙ্গি নাহিয়ান ও মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করে ডিবি।

গত ১৫ মে ইসলামের সৈনিক সত্যের লড়াকু নামক আইডি থেকে নিলাদ্রীকে ‘আইতাছি, তোরে কোপামু চাপাতি দিয়া’ এমন হুমকি দেয়া হয়। আর এই হত্যাকাণ্ডের ৭ দিন আগে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে জঙ্গিকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। পরে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করার কথা স্বীকার করে সাইফুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।

তবে গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লগার নিলাদ্রী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্র শিবির জড়িত বলে জানায় পুলিশ। শিবির নেতারাই হত্যাকাণ্ডের পর আনসার আল ইসলামের নামে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

অন্যদিকে নিলয়ের স্ত্রী আশামনি বলের, ‘পুলিশ খুনিদের ধরতেও পারে না, আবার নিরাপত্তা চাইলে নিরাপত্তাও দিতে পারে না। এমন পুলিশ রেখে লাভ কী?’

জেইউ/আরএস/এমএস