ইয়াহুদিরাও বিশ্বনবীর অপেক্ষায় ছিলেন!
ইয়াহুদি ও আরব মুশরিক কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধ বাধতো তখন ইয়াহুদিরা কাফিরদের বলতো, অতি সত্তরই একজন বড় নবি আল্লাহর সত্য কিতাব নিয়ে আবির্ভূত হবেন। আমরা তার অনুসারী হয়ে তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করবো যে, তোমাদের নাম নিশানাও দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাবে। নবি আগমনের পর তারাই আবার তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। আল্লাহ তাআলা কুরআনের ইয়াহুদিদের এ কথার উল্লেখ করে বলেন-
আর এখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের কাছে যে একটি কিতাব এসেছে তার সাথে তারা কেমন ব্যবহার করছে? তাদের কাছে আগে থেকেই কিতাবটি ছিল যদিও তারা সত্যতা স্বীকার করতো এবং যদিও এর আগমনের পূর্বে তারা নিজেরাই কাফেরদের মোকাবেলায় বিজয় ও সাহায্যের দোয়া চাইতো, তবুও যেখন সেই জিনিসটি এসে গেছে এবং তাকে তারা চিনতেও পেরেছে তখন তাকে মেনে নিতে তারা অস্বীকার করেছে। আল্লাহর লানত এই অস্বীকারকারীদের ওপর। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৮৯)
এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা ইয়াহুদিদের মনোবাসনার কথা তুলে ধরেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পূর্বে ইয়াহুদিরা তাদের পূর্ববর্তী নবিগণ যে নবি-রাসুলের আগমন বার্তা শুনিয়ে ছিলেন, তাঁর জন্য তারা প্রতীক্ষারত ছিলেন।
একদা হজরত মুয়ায বিন জাবাল, বাশার বিন বারা এবং দাউদ বিন সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাইন মদিনার ঐ ইয়াহুদিদেরকেই বলে ফেলেন যে, তোমরাই তো আমাদের শিরকের অবস্থায় আমাদের সামনে বিশ্বনবির নবুয়তের আলোচনা করতে এবং আমাদেরকে ভয়ও দেখাতে। তাঁর যে গুণাবলী তোমরা বর্ণনা করতে, তা সবই তাঁর মাঝে রয়েছে। বরং তোমরা তাঁর প্রতি ঈমান আনছো না কেন? তখন সালামা বিন মুশকিম উত্তর দেয়, ‘আমরা তাঁর কথা বলতাম না।’
এ আয়াতের মধ্যেই ইয়াহুদিদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথাই আল্লাহ তাআলা তুলে ধরছেন যে, তারাই নবির আগমনের পর তার সাহায্য কামনার অপেক্ষায় ছিল, পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পর হিংসা ও অহংকারের কারণে তাঁরা বিশ্বনবির আগমনের বিষয়টি ইয়াহুদিরা অস্বীকার করে।
এ আয়াত মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত শিক্ষণীয়। কোনো মুশরিক ও বেঈমান যাতে মুসলমানকে ধোঁকায় ফেলতে না পারে, সে জন্য আল্লাহ তাদের স্বরূপ উদঘাটন করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা সবাইকে কুরআনের সুশীতল ছায়া তলে আশ্রয় লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস