সুস্বাস্থ্য লাভের উপায়
আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। এ দিবসে রোগমুক্ত জীবন লাভে ইসলাম কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থনীতি ও উপায় অনুযায়ী চলা একান্ত কর্তব্য। সুস্থ জীবন-যাপনে ১১টি উপায় তুলে ধরা হলো-
০১. মানুষের রোগ-ব্যাধির অন্যতম কারণ হচ্ছে খাদ্য-পানীয়। এ জন্য অতিভোজন ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য থেকে বিরত থাকা। হাদিসের এসেছে, ‘পেট সকল রোগের কেন্দ্রস্থল।’ আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা খাও ও পান কর এবং অপচয় কর না।’ (সুরা আরাফ)
০২. খাবার গ্রহণে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, ‘পেটের এক তৃতীয়াংশ খাদ্য দ্বারা, এক তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে।’ (ইবনে মাজাহ)
০৩. খাদ্যদ্রব্য সর্বদা ঢেকে রাখা ও কিছু পান করার সময় তাতে ফুঁ দেয়া নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এতে রোগ-ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘সাবধান! তোমরা পানিতে ফুঁ দিবে না।’ (তিরমিজি)
০৪. খাওয়ার আগে ও পরে উত্তমরূপে উভয় হাত ধৌত করার প্রতি ইসলামের নির্দেশ রয়েছে। কারণ হাতে বিষাক্ত জীবাণু থাকার কারণে রোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
০৫. শরীরকে সুস্থ্য, সবল ও সতেজ রাখার জন্য খেলাধুলা, ব্যায়াম ও সাঁতারের প্রতি উৎসাহিত করা। নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম ও বিশ্রাম সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
০৬. রোগমুক্ত থাকতে অলসতা ত্যাগ করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি উৎকণ্ঠা থেকে, মনোকষ্ট থেকে, অলসতা থেকে, কাপুরুষতা থেকে, কৃপণতা থেকে, ঋণগ্রস্ততা থেকে এবং মানুষের কর্তৃত্বাধীন হয়ে যাওয়া থেকে।’ (বুখারি)
০৭. মানসিক উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতার পরিবর্তে মানসিক ও দৈহিক সুস্থতা রোগমুক্ত থাকার পূর্বশর্ত। কারণ মানসিক প্রশান্তি ও উৎফল্লতা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই ইসলাম মনোদৈহিক সুস্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে বৈবাহিক জীবন ব্যবস্থার প্রতি খুব গুরুত্ব দিয়েছে।
০৮. ইবাদাত-বন্দেগি, নামাজ-রোজা ও জিকির-আজকারের দ্বারাও মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। যাতে মানুষ রোগমুক্ত জীবন লাভ করতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘জেনে রাখ! আল্লাহ তায়ালার জিকির দ্বারা অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।’ (সুরা রাদ)
০৯. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও রোগমুক্ত থাকার অন্যতম উপায়। হাদিসে এসেছে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।
১০. পরিবেশ দূষণ রোধ করা। পরিবেশ দুষনের মাধ্যমে রোগ-ব্যধি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা বাড়ির আঙ্গিনা সব দিকে থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। ইহুদিদের অনুকরণ করবে না। তারা বাড়িতে আবর্জনা জমা করে রাখে। (তিরমিজি)
১১. স্যানেটারি ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। কারণ মল-মূত্র ত্যাগের কারণে রোগ-ব্যাধি অসম্ভবভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাই পরিবেশ দূষণকারীদের অভিশপ্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হাদিস এসেছে, ‘তোমরা তিন অভিশপ্ত ব্যক্তি থেকে বেঁচে থাক, যে পানির ঘাটে, রাস্তার ওপর ও গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে।’ (আবু দাউদ)
১২. সর্বোপরি সকল প্রকার মাদক-দ্রব্য বর্জন এবং নেশাগ্রস্ত জীবন পরিহার করাই হচ্ছে সুস্থতা লাভের অন্যতম উপায়। এ কারণে আল্লাহ তাআলা নেশা ও মাদককে হারাম করেছেন।
আল্লাহ তাআলা উপরোক্ত কাজগুলো নিয়ম মোতাবেক সঠিকভাবে সম্পাদন করার তাওফিক দান করুন। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন লাভ করে রোগমুক্ত জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি