বিশ্বনবির দাওয়াতে প্রভাবিত মদিনার প্রথম যুবক
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত লাভের পর তিনি মক্কায় দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। নবুয়তের পর হজের মৌসুমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লোকদের সাথে মদিনার লোকজনও হজ উপলক্ষে মক্কায় আসতো। বিশ্বনবির দাওয়াতে মদিনার একজন লোক সর্বপ্রথম প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি হলেন- হজরত সোওয়াইদ ইবনে সালত। ইসলামের প্রতি তার প্রভাবিত হওয়া বর্ণনা মুহাম্মদ হুসাইন হাইকাল মিসরির ‘হায়াতে মুহাম্মাদ’ গ্রন্থে এসেছে। সংক্ষেপে তাঁর কিছু বিবরণ তুলে ধরা হলো-
তিনি ছিলেন ইয়াসরিবের দূস সম্প্রদায়ের লোক। তিনি তার সম্ভ্রান্ততা, জনপ্রিয়তা, কাব্যচর্চা ও সাহসিকতার জন্য তিনি নিজ সম্প্রদায়ে ‘কামেল বা পূর্ণাঙ্গ’ খেতাবে ভূষিত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত লাভের পর হজরত সোওয়াইদ মক্কায় বাইতুল্লাহ যিয়ারাতে আসলে বিশ্বনবি তাঁকে ইসলামের দাওয়াত প্রদান করেন। তখন হজরত সোওয়াইদ বলেন, আপনার কাছে হয়তো সেই জিনিসই আছে যা আমার কাছে পূর্ব থেকেই আছে। তখন বিশ্বনবি তা শুনতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নিকট হজরত লুকমান আলাইহিস সালামের বাণী রয়েছে।
অতপর তিনি তা বিশ্বনবিকে তিলাওয়াত করে শুনান। বিশ্বনবি তিলাওয়াত শ্রবণে বললেন, এতো ভালো কথা। আমার নিকট এরচেয়েও বেশি সুন্দর ও উত্তম জিনিস রয়েছে। যা আল্লাহ তাআলা মানুষের হিদায়াতের জন্য আমার নিকট প্রেরণ করেছেন। অত্যন্ত নুরানি সে বাণী।
অতপর বিশ্বনবি একটি আয়াত তিলাওয়াত করে তাঁকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত পেশ করেন। তা শ্রবণে হজরত সোওয়াইদের অন্তরে এক অভূতপূর্ব ভাবান্তর ও শিহরণ সৃষ্টি হলো। তিনি বললেন, এ বাণী তো অতি উত্তম বাণী।’
অতপর হজরত সোওয়াইদ মদিনায় ফিরে গেলেন বটে, তাঁর চিন্তা-চেতনায় কুরআন ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
তারপর হজরত সোওয়াইদ ইন্তেকাল করলে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা বলল, ‘সোওয়াইদ মুসলমান হয়ে মরল।’ তিনিই মদিনার প্রথম যুবক যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াত দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
আল্লাহ তাআলা সমগ্র বিশ্বের পথহারা মানুষকে কুরআন ও হাদিস অধ্যয়নের মাধ্যমে সঠিক পথে দিশা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি