জড় পদার্থ ও পাহাড়ের বাকশক্তি
সমস্ত প্রাণহীন বস্তু ও জীব-জন্তু আল্লাহ তাআলার দরবারে তাসবিহ ও দোয়া করে এবং তাদের মধ্যে আল্লাহর ভয় বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘বস্তুমাত্রই আল্লাহ তাআলার হামদ ও তাসবিহ পাঠ করে।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৪৪) অন্যত্র বলেন, প্রত্যেকেই তার ইবাদাত ও তাসবিহ সম্পর্কে অবগত।` (সুরা নুর : আয়াত ৪১) এ আয়াত দুটি থেকে বুঝা যায় যে, জড় বস্তু এবং পাহাড়কেও আল্লাহ তাআলা ভয় এবং কথা বলার শক্তি দিয়েছেন।
আল্লামা বগভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, হিজরতের রাতে যখন কাফেররা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিছু নিয়েছিল। তখন বিশ্বনবী একটি পাহাড়ের উপর আরোহন করলেন, সে পাহাড়কে ঐ সময় আল্লাহ পাক বাকশক্তি দান করেছিলেন, সে পাহাড় প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে এভাবে কথা বলেছিল, ‘হে আল্লাহর নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি এখান থেকে অবতরণ করুন। কেননা, আমার ভয় হয় হয়তো কাফেররা আপনার নিকট পৌঁছে আপনাকে কষ্ট দেবে, আর এ জন্য আল্লাহ তাআলা আমাকে শাস্তি দান করবেন।’
পক্ষান্তরে সওর নামক পাহাড় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এ আরজি পেশ করলো, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি এখনে আগমন করুন। আমার নিকট আগমন করুন।
হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, মসজিদে নববির মিম্বার তৈরির পূর্বে বিশ্বনবী একটি খেজুর গাছের খুঁটির সঙ্গে হেলান দিয়ে খুতবা দিতেন, যখন মিম্বার তৈরি হলো এবং বিশ্বনবী তাতে আরোহন করলেন তখন খেজুর গাছের সেই খুটিটি বিলাপ করে কান্না শুরু করলো এবং তার কান্নার আওয়াজ মসজিদে উপস্থিত সবাই শুনেছিল। বিশ্বনবী সে খুটিকে আলিঙ্গন করলে তার কান্না থেমে যায়। (মুসলিম)
সুতরাং বুঝা যায় যে, আল্লাহর ভয় এবং বিশ্বনবীর ভালোবাসা জড় পদার্থ এবং পাহাড়েরর মধ্যেও ছিল। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর অন্তরে তাঁর ভয়-ভালোবাসা এবং বিশ্বনবীর ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিন। আমিন।
এমএমএস/এমএস