আধ্যাত্মিক কবি ফরীদউদ্দীন আত্তার
ফরীদউদ্দীন আত্তার একজন মুসলিম কবি, সুফি-সাধক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সুফিবাদের উপর ফার্সি কবিতা লিখে সমকালীন বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।
তিনি ৭৪০ হিজরিতে ১১৪৫ মতান্তরে ১১৪৬ খ্রিস্টাব্দে ইরানের নিশাপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন ওষুধ বিক্রেতা। পিতার মৃত্যুর পর তিনি তাঁর পেশাকেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নেন। পেশাগত কারণেই তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করেন।
যুবক বয়সেই সুফিসাধক ফরীদউদ্দীন আত্তার হজ পালন করেন। পাশাপাশি ভারতীয় উপমহাদেশসহ মিশর ভ্রমণ করেন। তাঁর এ সফর ছিল জ্ঞান অন্বেষণের জন্য।
কথিত আছে যে, প্রতিদিন তিনি তাঁর দাওয়াখানায় অন্তত ৫০০ জন রোগী দেখতেন। রোগীদের তিনি তার নিজের তৈরি ওষুধ দিতেন। রোগী দেখার ফাঁকে ফাঁকেই তিনি কাব্য চর্চায় আত্ম-নিয়োগ করতেন।
ফরীদউদ্দীন আত্তার অনেক সাহিত্য ও কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন। তার মধ্যে ৩০টির মতো কাব্য ও সাহিত্যকর্ম আজো টিকে আছে।
তার একটি বিখ্যাত বই হচ্ছে "মানতিক-ই-ত্বাইয়ার" বা "পাখির সমাবেশ"। যার মূলমন্ত্র ছিল এক ঝাঁক পাখি একটি আধ্যাত্মিক পাখির নেতৃত্বে উড়ছে। যার শেষ গন্তব্য আল্লাহর সান্নিধ্য।
তাঁর আধ্যাত্মিকতার কবিতাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছে বিখ্যাত কবি রুমিসহ অসংখ্য কবি-সাহিত্যিকরা।
অনেক আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে তিনি দীর্ঘ দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। তিনি গবেষণার মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জন করেন, তা কবিতার আকারে লিখে গেছেন।
এ ক্ষণজন্মা বিখ্যাত আধ্যাত্মিক কবি ৮১১ হিজরির ১০ জমাদিউস সানি মোতাবেক ১২২১ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গলদের হামলায় শাহাদাত বরণ করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিশাপুর শহরেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন। তাঁর রুহানি ফায়েজ এবং বরকত আমাদেরকে দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর