কৌশলে অবৈধকে বৈধ করা মারাত্মক অপরাধ
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, শুক্রবারের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করার জন্য বনি ইসরাইল তথা ইয়াহুদিদের জন্য ফরজ করা হয়। কিন্তু তারা শুক্রবারের পরিবর্তে শনিবারকে পছন্দ করে। তাই শনিবারের সম্মানার্থে তাদের জন্য মাছ ধরা হারাম করা হয়। আল্লাহর পরীক্ষা হিসেবে শনিবারেই সমস্ত মাছ নদীর কিনারে চলে আসতো এবং লাফ ঝাঁপ দিতো। অন্য দিনে মাছ তেমন একটা দেখা যেত না। কিছু দিন পযন্ত ঐসব লোক নিরব থাকে এবং শনিবার মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে।
একদিন ওদের মধ্য থেকে এক লোক একটি ফন্দি বা কৌশল বের করে যে, শনিবার দিন মাছ ধরে জালে আটকিয়ে তীরের কোনো জিনিসের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তারপর রোববার দিন মাছগুলো শিকার করে এবং মাছগুলো রান্না করে খায়। মাছ রান্নার সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, আমিতো আজ রোববার মাছ শিকার করেছি। অবশেষে তাদের কাছে এ ফন্দি বা কৌশলের রহস্য বেরিয়ে আসে। লোকেরাও আল্লাহর নির্দেশের অমাণ্য করে এ কৌশল পছন্দ করে এবং মাছ শিকার শুরু করে।
কেউ কেউ শনিবার নদীর তীরে গর্ত করে পানির সংযোগ দিয়ে রাখতো। মাছ গর্তে এসে ভর্তি হলে তারা গর্তের মুখ বন্ধ করে দিতো। পরে রোববার মাছ শিকার করে খেতো। যা ছিল আল্লাহর নির্দেশের সরাসরি লঙ্ঘন।
যার ফলশ্রুতিতে এ সীমা লঙ্ঘনকারীদেরকে আল্লাহ তাআলা বানরে পরিণত করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, যুবকদেরকে বানর আর বুড়োদেরকে শুকরে পরিণত করেছিলেন।
তাই আল্লাহ তাআলা এ ঘটনাকে দৃষ্টান্তস্বরূপ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, ‘অতঃপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৬৬)
এ শাস্তি সে যুগের লোকদের জন্য এবং তাদের পরে আগমনকারীদের জন্যও প্রযোজ্য। এমনকি সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ রাসুল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের জন্যও শিক্ষণীয় বিষয় বটে।
এ জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইয়াহুদিরা যা করেছিল তোমরা তা করো না। ফন্দি করে হারামকে (অবৈধ) হালালরূপে (বৈধ) গ্রহণ করো না। অর্থাৎ শরীয়তের নির্দেশাবলীর (আল্লাহর হুকুমের) ক্ষেত্রে ফন্দি ও কৌশল হতে বেঁচে থাকো।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শরীয়তের নির্দেশাবলীতে কৌশল গ্রহণের মতো মারাত্মক অপরাধ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস