আদম আলাইহিস সালামকে সেজদার নির্দেশ
ফেরেশতা ও জিন জাতির উপর হজরত আদম আলাইহিস সালামের ইলমি ও জ্ঞানগত শ্রেষ্ঠত্ব সাব্যস্ত হওয়ার পর আল্লাহ তাআলা আমলি দিক দিয়েও তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্য ফেরেশতা ও জিনদের মাধ্যমে বিশেষ ধরনের সম্মাণ দেখিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে আদম আলাইহিস সালাম উভয় দিক থেকেই কামিলে মুকাম্মিল বা জ্ঞান-গুণ-আমলে পরিপূর্ণ ছিলেন। তাঁকে আমলি সম্মানে সাব্যস্ত করতে আল্লাহ বলেন-
এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলিস ব্যতিত সবাই সেজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করলো এবং অহংকার প্রদর্শন করলো। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৩৪)
অত্র আয়াতে জ্ঞান দ্বারা সম্মানিত হওয়ার পর তিনি আমলিভাবে দ্বিতীয় সম্মান লাভ করলেন। এখানে সেজদা অর্থ হচ্ছে নম্রতা ও বিনয় প্রকাশ করা। সেজদার চূড়ান্ত পর্যায় হলো মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে দেয়া। (কুরতবি) ইসলামি শরিয়তে আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে সেজদা করা বৈধ নয়। তবে আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা হজরত আদমকে যে সেজদা করেছিলেন, সে সেজদা ছিল তাঁর সম্মান ও ফজিলত প্রকাশ করা, ইবাদাতের ভিত্তিতে নয়। কিন্তু এখন এ সম্মান প্রদর্শনের জন্য কাউকে সেজদা করা যাবে না।
ইবলিস হজরত আদমকে সেজদা করতে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর দরবার থেকে বিতাড়িত হয়। ইবলিস কুরআনের বর্ণনানুযায়ী জিন (জাতিভুক্ত বড় আবেদ) ছিলেন। আল্লাহ তার সম্মানার্থে ফেরেশতাদের মধ্যে শামিল করে রেখেছিলেন। এ জন্য আল্লাহর ব্যাপক নির্দেশে তার পক্ষেও সিজদা করা অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু সে হিংসা ও অহংকারবশত সিজদা করতে অস্বীকার করলো। বলাবাহুল্য যে, মানবতার ইতিহাসে হিংসা ও অহংকার সর্বপ্রথম ইবলিসের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে। যার ফলে আল্লাহর ইলম ও তকদির নির্ধারণে সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
পরিশেষে...
এ নির্দেশনা ছিল আনুগত্য, সম্মান, মর্যাদা, ইবাদাত-বন্দেগি নিয়ম-কানুন প্রদর্শনে আল্লাহর কুদরাত। সুতরাং আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে কুরআনের জ্ঞান অর্জন করে দুনিয়ার জীবনে আমল করে আখিরাতে সফলতা অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস