যে ১০ আমলে অবিরত বরকত নাজিল হয়
বান্দার প্রতি বরকত বা কল্যাণ মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ। আল্লাহর পক্ষ থেকে যার প্রতি কল্যাণ নেমে আসে, তা পরিমাণে কম হলেও অনেক উপকারি। তা হতে পারে সন্তান-সন্তুতি, সম্পদ, আমল ইত্যাদিতে। কিন্ত কী কাজ করলে মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি বরকত বা কল্যাণ দান করবেন?
বরকত মানুষের জন্য জরুরি বিষয়। এমন অনেক ব্যক্তি আছেন, যারা দীর্ঘ হায়াত পেয়েছেন, কিন্তু সে জীবনে ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি কিংবা আমল-ইবাদতে কোনো বরকত নেই। আবার অনেক পরিশ্রম করেন কিন্তু প্রাপ্তি সেভাবে আসে না। তার মানে হলো কাজে কোনো বরকত নেই।
পক্ষান্তরে এমন অনেক লোক আছেন, যারা কম হায়াত পেয়েছেন কিন্তু ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি, আমল-ইবাদতে বরকত লাভ করেছেন। অনেক অল্প পূজিতে ব্যবসা করেন কিংবা অল্প বেতনে চাকরি করেন, কিন্তু তাতে বরকত আছে।
সুতরাং সব কাজে বরকত অনেক জরুরি বিষয়। আর তা বান্দার জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় নেয়ামত। কিন্তু এ বকরত লাভের কার্যকরী উপায় কী?
হ্যাঁ, কুরআন সুন্নাহর আলোকে এমন অনেক আমল আছে, যা করলে মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি বরকত তথা কল্যাণ দান করেন। কুরআন সুন্নাহর এ আমলগুলো হতে পারে জীবনে বরকত লাভে চাবি। তা থেকে জীবনে বরকত লাভের ১০টি আমল তুলে ধরা হলো-
- ঈমান ও তাকওয়া
আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং তাকে ভয় করলে তিনি বান্দার প্রতি বরকত বা কল্যাণ দান করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ وَلَـكِن كَذَّبُواْ فَأَخَذْنَاهُم بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
‘আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন (তাকে ভয়) করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানি ও দুনিয়ার নেয়ামতসমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৯৬)
সুতরাং শিরক, কুফর ও নেফাক থেকে নিজেদের ঈমানকে হেফাজত করতে হবে। সব হারাম থেকে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহকে সব বিষয়ে বেশি বেশি ভয় করতে হবে। তবেই আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার জন্য আসমানি ও জমিনের সব বরকতের দুয়ার খুলে দেবেন।
- যে কোনো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন খাবার খায় আর যদি বিসমিল্লাহ বলে; তবে শয়তান ওই খাবারে অংশ নিতে পারে না। যেটুতু খাবার আছে তা (পরিমাণে কম হলেও) তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে।
অনুরূপভাবে কেউ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় বিসমিল্লাহ বলে তখনও শয়তান তার সঙ্গে বাসায় ঢুকতে পারে না। এভাবে বান্দা যখন সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে, তখন শয়তান সব কাজ থেকে মাহরুম হয়। আর আল্লাহ তাআলা সব কাজেই বরকত দান করেন।
- কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো
কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো খুবই জরুরি। কুরআন তেলাওয়াত, অধ্যয়ন এবং কুরআন অনুযায়ী জীবন গড়া। যে যতবেশি কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াবে তার জন্য ততবেশি বরকত নেমে আসবে।
যে ঘরে কুরআন তেলাওয়াত হবে, কুরআনের চর্চা হবে, কুরআনের ওপর আমল করা হবে, সে ঘরেই নেমে আসবে আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকত ও কল্যাণ। আল্লাহ তাআলা একাধিক আয়াতে বলেন-
- وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ فَاتَّبِعُوهُ وَاتَّقُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
‘এটি এমন একটি কিতাব, যা আমি অবতীর্ণ করেছি, খুব মঙ্গলময়, অতএব, এর অনুসরণ কর এবং ভয় কর; যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৫৫)
- وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ مُّصَدِّقُ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى صَلاَتِهِمْ يُحَافِظُونَ
‘এ কুরআন এমন কিতাব, যা আমি নাজিল করেছি; বরকতময়, আগের গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামাজ সংরক্ষণ করে।’ (সুরা আনআম: আয়াত ৯২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এ কিতাব (কুরআন) দিয়ে বহু মানুষকে (বরকতের মাধ্যমে) ওপরে ওঠাবেন। আবার বহু মানুষকে নিচে নামাবেন।’(মুসলিম)
অর্থাৎ যা কুরআনুল কারিমে অনুসরণ করবেন, তাদের জন্য এ কিতাব হবে বরকতের কারণ। আর যারা এ থেকে দূরে সরে যাবে তা হবে তাদের জন্য অমঙ্গলজনক হওয়ার কারণ।
- দান করা
বেশি বেশি দান করা। দান-সহযোগিতায় বরকত নেমে আসে। অনেক হাদিসে এটি প্রমাণিত যে, দানের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিপদ-মুসিবত দূর করে দেন। কেননা যে কোনো কাজে বিপদ-আপদ হলে তা থেকে বরকত লাভের সুযোগ থাকে না। সে কারণেই সব কাজে বরকত লাভে বেশি বেশি দান করা।
এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দান করার কিছু যদি না থাকে তবে একটি খেজুরের অংশ দিয়ে হলেও দান করার মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।’
সুতরাং দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভে পরিমাণে কম হলেও প্রতিদিন সাধ্যানুযায়ী দান করা। কাউকে দান করতে না পারলে নির্ধারিত একটা অংশ নিজ ঘরে একটি বক্সে জমে করে পরে তা দান করা। আর এভাবেই প্রতিদিন সাদকার সাওয়াব পাওয়া যাবে। দানের এ পদ্ধতির মাধ্যমেই তার ওপর নেমে আসবে বরকত ও কল্যাণ।
- আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা
আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে বরকত ও কল্যাণ নেমে আসে। এটি অনেক পরীক্ষিত একটি আমল। আত্মীয়-স্বজন তথা মা-বাবা, ভাই-বোন তথা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা।
আত্মীয়দের কেউ খারাপ আচরণ করলেও তাদের সঙ্গে নিজ থেকে সুসম্পর্ক রাখা। প্রয়োজনে সাধ্যানুযায়ী তাদের সাহায্য করা। সাহায্য করতে না পারলে তাদের সুন্দর ব্যবহার করা। আর এর মাধ্যমে নেমে আসবে বরকত ও কল্যাণ।
- সকালবেলা কাজ শুরু করা
দিনের শুরুতে কাজ শুরু করা। যদি কারো অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য একটু বেলা করে হয় তাতে কোনো অসুবিধা নেই। বরং নিজ ঘরের কাজ দিয়ে হলেও সকাল সকাল কাজ শুরু করা। কেননা সকালবেলার কাজে আল্লাহ তাআলা বরকত দান করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া করেছেন-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لِأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا
হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতকে সকালবেলা বরকত দান করবেন।
অন্য বর্ণনায় এসেছে- তিনি বলেছেন, আমার উম্মতের জন্য সকালবেলার সময়টাতে বরকত দেয়া হয়েছে।
সুতরাং কেউ যদি সকালের সময়টিতে ঘুমিয়ে থাকে তবে কিভাবে বরকত আসবে। এ কারণেই দিনের শুরুতে মহান আল্লাহর নাম নিয়ে কাজ শুরু করার মাধ্যমে বরকত ও কল্যাণ করা জরুরি।
- নামাজ পড়া
নিজে যেমন প্র্যত্যেক ওয়াক্তর নামাজ পড়তে হবে তেমনি পরিবারের লোকদের নামাজ পড়ানো ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। নামাজের নির্দেশ দিতে হবে। কেননা এমন অনেকেই আছেন যে, নিজে নিয়মিত নামাজ পড়েন ঠিকই কিন্তু পরিবারের সদস্যদের নামাজের ব্যাপারে কোনো খোঁজ রাখেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমি আপনাকে রিজিক দেই এবং আল্লাহকে ভয় করার পরিণাম শুভ তথা কল্যাণকার।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ১৩২)
- আল্লাহর ওপর ভরসা করা
বরকত লাভের অন্যতম চাবি বা আমল হলো আল্লাহর ওপর ভরসা করা। মুমিন যত বেশি আল্লাহর ওপর ভরসা করবে ততবেশি তাকে সাহায্য করবেন। পক্ষান্তরে আল্লাহর প্রতি আস্থা, নির্ভরতা বা ভরসা যতি বেশি কমবে, সে ততবেশি অপমাণিত ও লাঞ্ছিত হবে।
বিপদে অনেকেই আল্লাহর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন। অনেক সময় আল্লাহর প্রতি নানান মন্তব্যও শুরু করেন। না তা কোনোভাবেই ঠিক নয়। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘আল্লাহর প্রতি যেরকম ভরসা বা আস্থা রাখা দরকার, তোমরা যদি সেই মাপের আস্থা রাখতে পার, তাহলে আল্লাহ তাআলা পাখিকে যেভাবে রিজিক দেন তোমাদেরও সেভাবে রিজিক দেবেন।’
সুতরাং জীবনে সব ব্যাপারে কাজের পাশাপাশি বরকত লাভে শুধুমাত্র আল্লাহর ওপরই ভরসা করা জরুরি। সব কাজে যার ভরসা যতবেশি হবে, তার বরকত লাভও ততবেশি হবে।
- বেশি বেশি ইসতেগফার করা
জীবনে বরকত লাভের অন্যতম আমল হলো বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা। এর কোনো হিসাব বা সংখ্যা বা সময় নির্ধারণ করে করা যাবে না। বরং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই ইসতেগফার করা। পুরো ইসতেগফার করতে না পারলে অন্তত এটুকু বলা-
اَسْتَغْفِرُالله – اَسْتَغْفِرُالله
আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ…
যখন এ ইসতেগফার পড়ার সময় এ বিষয়টি মনে অনুভব করা যে, সব অন্যায় অপরাধ থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। কেননা ক্ষমা প্রার্থনা মন-মানসিকতাই থাকে আলাদা। আল্লাহ তাআলা বান্দার সে মানসিকতায় তাকে ক্ষমা করে দেন। বরকত দান করেন।
কেননা আল্লাহ তাআলা নুহ আলাইহিস সালামের ইসতেগফারের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। যে ইসতেগফারের মাধ্যমে পাওয়া যায় অসংখ্য বরকত। আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا - يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا - وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا
‘অতপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসতেগফার ধরে রাখবে, সব কঠিন অবস্থায় আল্লাহ তাআলা বের হওয়ার পথ দেখিয়ে দেবেন। সব পেরেশানি থেকে আল্লাহ তাআলা তার জন্য প্রশস্ততার পথ বের করে দেবেন।’
সুতরাং এক দুইবার পড়া নয়, বরং সব সময় ইসতেগফার পড়ার মাধ্যমে দুনিয়ার বরকত ও কল্যাণ লাভ করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
- সালামের ব্যাপক প্রচলন করা
পরিপূর্ণ, সুস্পষ্ট বিশুদ্ধ সালামের ব্যাপক প্রচলন করা বরকত লাভের অন্যতম মাধ্যম। পরিপূণ সালাম হলো-
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَ رَحْمَةُ اللهِ وَ بَرَكَاتُهُ
উচ্চারণ : ‘আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’
অর্থ : ‘আপনার উপর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।’
এ সালের পুরোটাই শান্তি, রহমত ও বরকতের দোয়া। যারা নিয়মিত বেশি বেশি সালামের ব্যাপক প্রচালন করার চেষ্টা করেন। ঠিক সালামের উত্তরদানকারী ব্যক্তিও ঠিক একই দোয়া করেন-
‘আপনার ওপরও শান্তি, রহমত ও বরকত নাজিল হোক।’
সুতরাং জীবনে বরকত লাভে সহজ ও প্রচলিত এ আমলগুলোর প্রতি একটু খেয়াল রাখলেই বা যত্নবান হলেই জীবনে নেমে আসবে অবিরত রহমত, বরকত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহজ এ আমলগুলোর মাধ্যমে বেশি বেশি বরকত লাভের তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত আমলগুলো নিয়মিত বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ