করোনায় মসজিদে নামাজ নিয়ে ফতোয়া
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ। মহামারি করোনার এই প্রাদুর্ভাবের সময় মসজিদে নামাজ আদায়ে যাওয়া- না যাওয়ার বিষয়েও দেশটির মুসলিমদের জন্য সোমবার ফতোয়া দিয়েছেন দেওবন্দ। ফতোয়াটি হলো-
দেওবন্দের ফতোয়া ও আহ্বান পত্রে জানানো হয়, ‘করোনাভাইরাস থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সরকার যে নির্দেশনা জারি করেছে সেগুলো মেনে চলার মাধ্যমে দেশকে মহামারি থেকে বাঁচাতে সহযোগিতা করা আমাদের কর্তব্য। এক্ষেত্রে নিজেদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি অন্যদেরও সতর্ক করা আবশ্যক।
করোনাভাইরাসের এ কঠিন পরিস্থিতিতে মসজিদে নামাজ আদায় প্রসঙ্গে দেওবন্দের ফতোয়া বলা হয়-
‘সরকার যেসব এলাকায় কারফিউ বা লকডাউন জারি করেছে, অথবা যেসব এলাকায় ভিড় জমায়েত থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সেসব এলাকার মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদে নামাজ জারি রাখতে হেকমত অবলম্বন করবে। যেন মসজিদও আবাদ হয় আবার দেশের আইনও লঙ্ঘন না হয়।
এ হেকমত অবলম্বন করা যায় এভাবে-
- যেসব এলাকায় লোকসমাগমে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেসব এলকার মসজিদগুলোতে ইমাম মুয়াজ্জিনসহ আরও কয়েকজন মুসল্লি মিলে আজান ইকামতের সঙ্গে জামাত চালু রাখবে। আর অন্যান্য মুসল্লিগণ তাদের ঘরে নামাজ আদায় করবেন।
- যেসব অঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কিত বিধি-নিষেধ নেই, সেখানের মুসল্লিরা ওজু ও সুন্নাত তদের ঘরে আদায় করে মসজিদে আসবে। মসজিদে নিরাপদ দূরত্বে বসবে। জামাআতে নামাজ আদায় করে আবার ঘরে ফিরে যাবে। আর মসজিদ কর্তৃপক্ষের উচিত, তারা মসজিদ যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে মুসলিমদের আকিদা-বিশ্বাস সম্পর্কে ফতোয়া বল হয়-
মহামারি করোনায় প্রত্যেক মুসলিমের এ বিশ্বাস রাখা চাই যে, কোনো রোগ-ভাইরাস-মহামারি আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কাউকে আক্রমণ করে না। এসব রোগ ও মহামারি মানুষের গোনাহের কারণেই হয়ে থাকে। আবার এ মহামারি থেকে মহান আল্লাহ তাআলাই মুক্তি দিতে পারেন।
সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের করণীয়-
>> প্রত্যেকে নিজ নিজ দ্বীনি অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।
>> গোনাহের কাজ ছেড়ে দেবে।
>> আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
>> (অল্প পরিসরে বাড়িতে হলেও সতর্কতার সঙ্গে) জামাআতে নামাজ আদায় করবে।
>>সব ধরনের গোনাহ থেকে মুক্ত থাকবে।
>> বেশি বেশি আমল করবে।
>> মানুষকে আমল ও তওবার প্রতি আহ্বান করবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম