১৫ পরিবারের জন্য মসজিদ নির্মাণে জমি দিলো শিখরা
ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের মোগা জেলার মাচিকে গ্রামে ৭ হাজার হিন্দু-শিখ ও মুসলিমের বসবাস। এরমধ্যে মাত্র মুসলিম পরিবার মাত্র ১৫টি। গুটিকয়েক পরিবারের ধর্মীয় প্রার্থনার জন্য মসজিদ নির্মাণে জমি দান করলেন এক শিখ পরিবার। দেশটিতে যখন এনআরসি ও সিএএ বিতর্ক তুঙ্গে তখনি ঘটে এ ঘটনা। যা সত্যিই বিরল।
গ্রামটির রাস্তার পাশে ২০০ বছরের পুরনো একটি মসজিদ ছিল। পাঞ্জাব প্রদেশের মোগা-বরনালা জাতীয় সড়কটির উন্নয়ন ও চওড়া করার ফলে মসজিদটি ভাঙা পড়ে। মসজিদটি ভাঙার এক বছর আগে মুসলিম ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সড়ক বিভাগের কাছে মসজিদটি বাদ দিয়ে প্রকল্পের কাজ করার আবেদন জানিয়েছিল। তাদের সে আবেদনে তেমন লাভ হয়নি।
সে সময় মসজিদটি স্থানান্তরে প্রায় ৮ লাখ টাকার প্রয়োজন ছিল। গ্রামের ১৫ পরিবারের পক্ষে এ টাকা সংগ্রহ করারও কোনো উপায় ছিল না। মুসলিম পরিবারের সদস্যরা মাত্র ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছিল।
মাচিকে গ্রামের ওই মুসলিম পরিবারগুলো স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছেও আবেদন করে যে, ভাঙা পড়া মসজিদটি ছিলো তাদের ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান। তাদের দাবি ছিল যে, যদি গ্রামে মসজিদ নির্মাণে একটু জমি পাওয়া যায় তবে তারা মসজিদ নির্মাণ করবে। পঞ্চায়েতের কাছে করা আবেদনেও সাড়া পায়নি মুসলিম ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
এ পরিস্থিতিতে মাচিকে গ্রামের শিখ সম্প্রদায়ের দর্শন সিং ও তার পরিবার মুসলিমদের মসজিদ নির্মাণে জমি দানে এগিয়ে আসেন। তিনি নিজের ভোগ দখলীয় ১৬ মার্লাস তথা ৪৮৪ বর্গগজ জমি মুসলিমদের মসজিদ নির্মাণে দান করেন। বর্তমানে সে জমিতেই নতুন মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে।
উল্লেখ্য যে, ভারতের পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণে যখন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) ইস্যুতে উত্তাল, ঠিক সে সময়টিতে শিখ দর্শন সিং ও তার পরিবার কর্তৃক মসজিদের জন্য জমি দান সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। যার ফলে মুসলিমরা নিজেদের ধর্মীয় প্রার্থনার জন্য মসজিদ নির্মাণ করার সুযোগ পেয়েছে। তাদের এ কাজে ফুটে উঠেছে সম্প্রতির এক মেলবন্ধন।
এমএমএস/এমকেএইচ