ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

মাদক যুবসমাজের অভিশাপ

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ | প্রকাশিত: ১২:০৩ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৫

ইসলাম সব ধরনের মাদকদ্রব্য গ্রহণকে হারাম করেছে।  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, `প্রতিটি নেশাকর দ্রব্যই অবৈধ।’ (মুসলিম) মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। মাদককে নেশা হিসেবে নেয়ার কৌশল তারাই তৈরি করে। আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগের ঘোষণার সত্যয়ন করছে সমকালীন বিশ্ব। তাইতো ১৮৯০ সালে শ্রীলংকায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ‘মদ্য সংযম ‍দিবস’ আন্দোলন শুরু করেন। যে আন্দোলনের ফলে সেখানে মাদক ব্যবহার কিছুটা কমে আসে। সে আন্দোলনকে স্মরণীয় করে রাখতেই ৩ অক্টোবর বিশ্ব মদ্য সংযম দিবস হিসেবে ঘোষিত হয়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানিরা একে রোগের পাথেয় হিসাবে আবিস্কার করলেও বর্তমানে তা ব্যবহৃত হচ্ছে মানুষের ধ্বংসের উদ্দেশ্যে। মাদক মানুষের জীবনে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলায়, ইসলামও তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। মাদক মুসলমানদের জন্য শুকরের মাংসের মতোই হারাম।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা করেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالأَنصَابُ وَالأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ অর্থাৎ হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ অন্য কিছু নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। (সূরা মায়িদা : আয়াত ৯০)
মাদক যুবসমাজের জন্য অভিশাপ। প্রতিনিয়ত মাদকাসক্ত হচ্ছে আমাদের যুবসমাজ। মাদক পরিবারে বয়ে আনে অশান্তি। সমাজে আনে বিশৃঙ্খলা। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তি ও পরিবার। সর্বোপরি জাতিকে নিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বেকারত্ব, হতাশা, অবৈধ কাজ তথা নানাবিধ সংকটের দোহাই দিয়ে মাদক গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠছে যুবসমাজ। কারো কারো ক্ষেত্রে অনেকটা আবার কৌতুহলের ফসলও বটে। আকাশ মিডিয়ার ভয়ংকর আক্রমণের অনুকরণেও দিন দিন মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি মাদকের সহজলভ্যতা ও অবাধ বিপণনও কম দায়ি নয়।
মাদক তথা নেশার ভয়াবহতায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। তিনি বলেন সব ধরনের নেশাকারী বস্তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর বিধায় তা সেবন করা হারাম।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,  كل مسكر خمر وكل مسكر حرام অর্থ সমস্ত নেশাকারী বস্তু মদ আর প্রত্যেক নেশাকারী বস্তু হারাম। (মুসলিম)
হাদিস থেকে আরো সুপ্রমাণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- মদ, মদ্যপানকারী, মদ প্রস্তুতকারী, সে ব্যাপারে নির্দেশ প্রদানকারী, বহণকারী, যার নিকট তা বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়, উহার বিক্রেতা, ক্রেতা এবং তার মূল্য ভক্ষণকারী সবাইকে অভিশম্পাত করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, كل شراب أسكر فهو حرام “যে সমস্ত পানীয় নেশাকারী, তা হারাম।” (বুখারি, মুসলিম)
হাদিসের আরো উল্লেখ আছে, ماأسكر كثيره فقليله حرام যে জিনিসের অধিক সেবনে নেশা হয়, তার অল্প সেবনও হারাম।` (আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনু মাজাহ)
মাদকে জড়িয়ে পড়ে তরুণ প্রজন্মের নৈতিক ও মানসিক ক্ষতি  হচ্ছে। অপরাধ প্রবণতাও বেড়ে যাচ্ছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি টাকা না পেলে ছিনতাই, ধর্ষণ, খুনসহ নানাবিধ অপরাধ সংঘটিত করে। তাই সমাজ ও পরিবারে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় মাদক বর্জনের বিকল্প নেই।

ইসলামী অনুশাসন মেনে চলায় রয়েছে তরুণ ও যুবকদের জন্য আলোর পথ। তাই মাদকের ছোবল থেকে যুব ও তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে সর্বধর্মীয় সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য একযোগে সবাইকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির সন্তানকে সুস্থ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে অন্তর্ভূক্ত হতে সহায়তা প্রদান ও উৎসাহিত করা আবশ্যক।

মাদকসেবীদের প্রতি আহবান....
তাই আর হতাশা নয়! নয় কোন গ্লানি। ইসলামি অনুশাসন মেনে মাদক পরিহার করুন, এগিয়ে চলুন সুস্থ জীবনের পথে। মাদক কোন সমাধান নয়। বরং জীবনকে বিষিয়ে তোলে। শরীরে আনে অবসাদ। মস্তিষ্ককে করে বিকৃত। জন্ম দেয় যে কোনো অপরাধের। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে এবং গর্হিত কাজে উদ্বুদ্ধ করে। সে হয়ে ওঠে সমাজের জঘন্যতম ঘৃণ্য ব্যক্তি। বিশ্ব মদ্য সংযম দিবসে মাদকমুক্ত জীবন গড়তে আমরা হয়ে উঠি বদ্ধ পরিকর। ৩ অক্টোবর ‘বিশ্ব মদ্য সংযম বিদসে’-এ হোক আমাদের অঙ্গীকার।

জাগো ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : [email protected]

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/আরআইপি