রমি কি ও কেন?
হজের মাসের শয়তানকে পাথর মারা হচ্ছে হজের ওয়াজিবগুলোর একটি। ইহা একটি গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। রমি কি ও কেন সংক্ষেপে জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-
রমি কি?
রমি হচ্ছে নিক্ষেপ করা বা ছুঁড়ে মারা। হজের পরিভাষায় রমি হচ্ছে, হজের মাসে শয়তানের উদ্দেশ্যে কংকর নিক্ষেপ করা। এটি ১০ই জিলহজ মিনায় প্রথম করণীয় কাজ।
রমি কেন?
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যখন আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে সবচেয়ে প্রাণাপ্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কুরবানি করতে নিয়ে রওয়ানা করেন, তখণ শয়তান মিনার তিন স্থানে তাঁকে কুপ্ররোচনা দিয়ে পিতার কুরবানির মহৎ উদ্দেশ্যকে পণ্ড করে দেয়া চেষ্টা করে। তখন কংকর নিক্ষেপের মাধ্য ঐ তিনটি স্থানেই শয়তানকে তাড়ানো হয়েছিল। হজের রিমর বিধানের মাধ্যমে এ ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত বিষয়কে মুসলিম হৃদয়ে চিরজাগ্রত রাখা হয়েছে।
কোথায় কোথা কংকর নিক্ষেপ করবে হাজি : তিনটি স্থানে কংকর নিক্ষেপ করতে হয়।
১. জামারাতুল আকাবা : মক্কার দিকে মসজিদুল খাইফের সর্ব নিকটবর্তী স্থানে কংকর নিক্ষেপের স্থল। একে জমরাতুল উখরা ও কুবরাও বলা হয়। ১০ই জিলহজ এখানে সাতবার কংকর নিক্ষেপ করে তলবিয়া পাঠ বন্ধ করে দিতে হয়। অন্য দুই জমরায় এ দিন কংকর নিক্ষেপ করতে নেই।
২. জামারাতুল উস্তা বা মধ্যম জামারা ও
৩. জামারাতুল উলা বা প্রথম জামারা।
এ জামারাদ্বয়ে ১১ ও ১২ই জিলহজ তারিখে প্রতিটি জামারায়ই ৭টি করে কংকর মারতে হয়। তারপ মিনা ত্যাগ করা চলে। কিন্তু ১৩ তারিখ পর্যন্ত মিনায় রয়ে গেলে ১৩ তারিখেও তিন জামারায়ই কংকর নিক্ষেপ করতে হয়। ১০ তারিখ মিনায় আসার পর সর্বপ্রথম রমি করাই মুস্তাহাব।
লক্ষ্য রাখতে হবে
জামারার অন্তত পাঁচ হাত দূর থেকে হাত উঁচু করে যতটুকু উঁচু করলে বগল অনাবৃত হয়ে যায়, কংকর নিক্ষেপ করতে হয়। পাঁচ হাতের কম দূরুত্বে দাঁড়িয়ে কংকর নিক্ষেপ করা মাকরুহ। বেশি দূরুত্বে ক্ষতি নেই।
কংকর কেমন হওয়া চাই
কংকর ছোলার মতো বা খেজুরের বিচির মতো হবে। তবে বড় পাথর ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করাও মাকরুহ।
কংকর কিভাবে ধরবেন
বৃদ্ধাঙ্গুলি ও শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা কংকর ধরে মারাই হচ্ছে মুস্তাহাব। একজনের রমি অন্য জন করতে পারে না। তবে শরিয়ত সম্মত ওজর থাকলে অন্য জনে করলে কোনো দোষ নেই। তবে শর্ত হচ্ছে আগে নিজের রমি শেষ করবে পরে অন্যেরটা করবে।
মিনাকে বাম দিকে রেখে কা’বাকে ডানদিকে রেখে কংকর নিক্ষেপ করতে হয় এবং সঙ্গে এরূপ বলা মুস্তাহাব-
উচ্চারণ- বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, রাগমান লিশশায়তানির রিদিয়া লিররহমান, আল্লাহুম্মাঝআ’লহু হজ্জান মাবরুরাও ওয়া দুনইয়াম মাগফুরান ওয়াসিআন মাশকুরা।
আল্লাহ সব হাজিকে সঠিক পদ্ধতিতে রমি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। ওমরা ও হজের ধারাবাহিক আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
# হজ কনিকা
# হজ সফরে মৃত্যুতেও আখিরাতে মহাসফলতা
# হজের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
# হজের প্রস্তুতিই ওমরা পালন
এমএমএস/পিআর