ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

এখনই হজের প্রস্তুতি নেয়ার সময়

প্রকাশিত: ০৬:০২ এএম, ২৯ জুলাই ২০১৫

মুসলিম হৃদয়ের প্রকম্পিত স্পন্দনের আরেক নাম হজ। পূণ্যভূমি মাক্কাতুল মুকাররামা অপরূপ শোভা লাভ করবে আর ক`দিন পরেই। এখন চলছে তার শেষ প্রস্তুতি। যারা `লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক` নামক স্বর্গীয় সূধার অপূর্ব ছন্দে গাইবে গান, তাদের জন্য সুখবর। তারাই যাবে খোদার প্রেমের সরাব পান করতে পূণ্যভূমি মক্কায়। হাজিরা দিবে মসজিদে হারামে অবস্থিত মু`মিন হৃদয়ের সর্বোচ্চ তীর্থস্থান পবিত্র কা`বায়। যেখানে ফুলের মালা সমেত অভ্যর্থনায় থাকবে ফিরিশতাকূল। একত্রিত হবে মুসলিম মিল্লাত।

হজ হচ্ছে বিশ্ব মুসলমানের আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। যা আল্লাহ তাআলা কর্তৃক ফরজ ইবাদত। যে ব্যক্তি সম্পদশালী এবং শারিরীক সামর্থ্যবান তার ওপর জীবনে একবার হজ্জ ফরজ। যা তরক করলে গুনাহগার হতে হবে। এ হজ্বের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইসলামের নাড়ীর সম্পর্ক। হজের স্থান হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম ইবাদতগৃহ ও বিশ্ব মুসলিমের মিলনমেলার কেন্দ্রস্থল। যা প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)ও প্রথম মানবী হজরত হাওয়া (আ.)পবিত্র স্পর্শে ধন্যভূমি। যে পূণ্যভূমিতে বিচরণ করেছে অগনিত অসংখ্য নবী ও রাসূল। বিশেষ করে মুসলিম জাতীর পিতা হজরত ইবরাহিম(আ.) হজরত ইসমাইল জাবিউল্লাহ (আ.)ও হজরত বিবি হাজিরার অতুলনীয় ত্যাগের মহিমা গাঁথা একত্ববাদের বিচরণক্ষেত্র পবিত্র মাক্কাতুল মুকাররামাহ। যে ভূমিতে সত্যদ্বীনসহ প্রেরিত হয়েছেন সাইয়্যিদুল মুরসালিন ওয়ান নাবিয়্যিন হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)। যেখানে সূচিত হয়েছিল সমগ্র মানবমণ্ডলীর পথ ও পাথেয় ইসলামের। সে তীর্থভূমিতে কাবা-ঘর নামক আল্লাহর ঘরে জীবনে একবার হলেও শির লুটিয়ে দিতেই একত্ববাদের প্রেমিকরা আত্মহারা পাগলপারা। তাইতো আল্লাহ তার সামর্থ্যবান প্রেমিকেদের জন্য বায়তুল্লায় উপস্থিত হয়ে হ্জ করা ফরজ করেছেন।

হজে গমনের আগে আল্লাহ প্রেমিক বান্দাদের নিজেকে তৈরি করে নেয়া হচ্ছে মূল কাজ। কারণ হজ্ব অনেক পরিশ্রমের ইবাদত। যা ইহরামের মাধ্যমে শুরু হয় এবং কুরবানির মাধ্যমে শেষ হয়। এর মাঝে পালন করতে হয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। হজ্ব আল্লাহর দিকে সফরের জন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য সব-মুখী বা অন্য সব ধরনের প্রবণতা ত্যাগ করে শুধুমাত্র আল্লাহর সান্নিধ্য চাওয়াকে বোঝানো হয়। তাই হজ্ব কোনো আনন্দ-ভ্রমণ বা খ্যতি অর্জনের সফর নয়। আল্লাহর দিদার লাভের সফর।

হজে গমণের পূর্বে করণীয়
ক. বৈধ অর্থের উৎস থেকেই হজ্বের সব ধরনের খরচের আঞ্জাম দেয়া
খ. ইহরামের পোশাক ক্রয় করা
গ. পাসপোর্ট ও অর্থ রাখার জন্য কোমরবন্দ সংগ্রহ করা
ঘ. পাড়া-পড়শিসহ নিকটআত্মীয়দের কাছ থেকে দায়-দাবি মুক্ত হওয়া
ঙ. অসিয়ত থাকলে ওসিয়তনামা তৈরি করে রাখা
চ. ঋনগ্রস্ত হলে ঋণ পরিশোধ করা
ছ. দুনিয়াবী সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া
জ. ইবাদত-বন্দেগির পরিমাণ বাড়িয়ে আত্মা বা দিলকে আল্লাহর প্রেমের উপযোগী করে তোলা
ঝ. নামাজ, ইহরাম, বায়তুল্লাহ তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া সায়ীর দুআ’-কালাম শিখে নেয়া
ঞ. গুরুত্বপূর্ণ আমল ও দোয়া এখন থেকেই শিখে নেয়া
ট. হজের তলবিয়া সহিহ শুদ্ধ করে মুখস্ত করে নেয়া। সর্বোপরি হজ্বে গমনের মনে হচ্ছে মৃত্যুর জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বায়তুল্লাহর উদ্দেশ্যে রওয়া হওয়া; হতে পারে এই যাত্রাই একজন আল্লাহ প্রেমিকের জীবনের শেষ যাত্রার প্রস্তুতি।

হজের পূর্বেই যা ত্যাগ করবে
ক. সব ধরনের মোহ, লোভ-লালসা ত্যাগ করা
খ. সব ধরনের পাপ কাজ হতে বিরত থাকা
গ. এ যাত্রা শেষ যাত্রা মনে প্রস্তুতি গ্রহণ করা
ঘ. আভিজাত্য, পদমর্যাদা, গর্ব ও অহংকার ত্যাগ করা
ঙ. তাড়াহুড়া ও উদাসিনতাভাব ত্যাগ করা
চ. দুনিয়াবী সব ধরনের অন্যায় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা

আর এভাবেই হজের মাধ্যমে বিচার-দিবস ও কিয়ামত তথা পুনরুত্থানের মহড়া তথা হাশরের ময়দানের মহড়ার শিক্ষা নেয়ার মানসিকতা তৈরি করা।

হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও হজরত ইসমাইল আলাহিস সালামের আত্ম বিসর্জনের যে শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে তেমনি আমাদেরকেও ইসলামের স্বার্থে চরম আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুতি নেয়া। প্রতি বছর হজে আমাদেরকে সে জন্য প্রস্তুতি নেয়ার, প্রশিক্ষণ নেয়ার এবং যোগ্যতা অর্জনের ডাক দিয়ে যায়। সুতরাং হজে গমনের নিয়্যতকারী প্রত্যেক মুসলমান যাতে হজের প্রস্তুতি নেয়া একান্ত জরুরি। আল্লাহ সবাইকে হজ্বের প্রস্তুতি নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন

জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/পিআর