প্রিয়নবি যেভাবে খাবার গ্রহণ করতেন
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ এ আয়াতে আলোকে বুঝা যায়; মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি দিক নিয়েই রয়েছে প্রিয়নবি জীবনে অনুকরণীয় আদর্শ।
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আবশ্যকীয় কাজসমূহের মধ্যে একটি হলো খাবার বা পাণীয় গ্রহণ করা। আর এ সব খাবার ও পানীয় গ্রহণে প্রিয়নবি দেখিয়েছেন সঠিক পথনির্দেশনা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে খাবার গ্রহণ করতেন; তাহলো-
>> খাবার গ্রহণের আগে ভালোভাবে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া। (আবু দাউদ)
>> খাবার গ্রহণের আগে দস্তরখানা বিছিয়ে নেয়া এবং খাবার গ্রহণ করা। (বুখারি)
>> খাবার গ্রহণের শুরুতে (উঁচু স্বরে) বিসমিল্লাহ বলা। (বুখারি)
>> ডান হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করা। (বুখারি ও মুসলিম)
>> বয়সে যিনি বড় এবং তাকওয়ার দিক থেকে সম্মানিত; তাঁকে দিয়ে খাবার পরিবেশ ও আহার শুরু করা।’ (মুসলিম)
>> খাবার যদি এক রকমের হয় তবে নিজের সামনে থেকে খাওয়া শুরু করা।’ (বুখারি)
>> খাবার গ্রহণকালে খাদ্যের কোনো অংশ দস্তরখানায় পড়ে গেলে তা উঠিয়ে প্রয়োজনে পরিস্কার করে খাওয়া।’ (মুসলিম)
>> খাবার গ্রহণকালে তিনভাবে বসে খাবার আদব রক্ষা করা। আর তাহলো
- উভয় হাঁটু উঠিয়ে পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে বসা;
- এক হাঁটু উঠিয়ে এবং অপর হাঁটু বিছিয়ে বসা;
- উভয় হাঁটু বিছিয়ে নামাজে ছুরতে বসে সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে খাবার গ্রহণ করা। (মুসলিম, আবু দাউদ)
>> খাবার গ্রহণ শেষে খাবার পাত্র ভালোভাবে আঙ্গুল দ্বারা চেটে খাওয়া। ফলে খাবারের পাত্রসমূ চেটে খাওয়া আহারকারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দোা করে। অতঃপর মধ্যমা, শাহাদাত ও বৃদ্ধাঙ্গুল যথাক্রমে চেটে খাওয়া।’ (তিরমিজি, মুসলিম, তাবারানি)
>> খাবার গ্রহণ শেষে ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আত্বাআমানা ও সাক্বানা ও ঝাআলানা মিনাল মুসলিমিন’- এ ছোট দোয়া পড়া। (আবু দাউদ)
>> অতঃপর খাবার খাওয়া শেষ হলে দস্তরখানা উঠিয়ে নেয়ার পরে খাবারগ্রহণকারীর উঠা। (ইবনে মাজাহ)
>> দস্তরখানা ও অবিশিষ্ট খাবার উঠানো এবং ‘আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাছিরান ত্বাইয়্যিবাম মুবারাকান ফিহি গাইরা মাকফিয়্যিন ওয়া লা মুওয়াদ্দায়িন ওয়া লা মুসতাগনা আনহু রাব্বানা। (বুখারি, মিশকাত)
>> খাবার গ্রহণের পরে ভালোভাবে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া। (তিরমিজি)
>> কেউ যদি মেহমানদারি গ্রহণ করে তবে মেজবানকে শুনিয়ে উচ্চ স্বরে দোয়া করা। (আবু দাউদ)
সর্বোপরি কেউ যদি খাবার গ্রহণের আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে ভুলে যায়; তবে স্মরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘বিসমিল্লাহি আউয়ালিহি ও আখেরিহি’ পড়ে নেবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে খাবার ও পাণীয় গ্রহণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি