যে গুণগুলো মানুষের উত্তম পুরস্কার
আল্লাহর বাণী, ‘তোমাদের জন্য ইহকাল অপেক্ষা পরকাল উত্তম (৯৩/৪)। কেননা পরকালের তুলনায়, ‘ইহকাল তথা দুনিয়ার ভোগ-বিলাস অতি সামান্য, (তাই) যে (মুত্তাকি) সাবধানি তার জন্য পরকালই উত্তম’ (৪/৭৭ ৭৭)। কুরআনে তোমাদের জন্য পরকালের এত কল্যাণের ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও ‘তোমরা তো দুনিয়ার (মোহ) জীবনকে ভালবাস এবং আখিরাতকে (চিরস্থায়ী শান্তির জীবন) উপেক্ষা কর’ (সুরা কিয়ামা : আয়াত ২০-২১)।
যারা আল্লাহ তাআলা ঘোষণা অনুযায়ী জবিন পরিচালনা করে, তাদের জন্য রয়েছে পরকালের সীমাহীন শান্তি আর শান্তি। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক ঘোষিত মুমিন মুসলমানের উত্তম কাজগুলো তাদের জন্য উত্তম প্রতিদানও বটে। যে কথাগুলো তিনি সুরা শুরার ৩৬-৪২নং আয়াতে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন। এ গুণগুলো বাস্তবায়নে একজন মানুষ হতে পারে উভয় জাহানের সফল ব্যক্তি। আল্লাহ বলেন-
>> ‘মূলত (দুনিয়াতে) তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে, তা পার্থিব জীবনের ভোগ; কিন্তু আল্লাহর কাছে যা আছে তা উত্তম এবং চিরস্থায়ী। (আর এ সব) তাদের জন্য, যারা বিশ্বাস করে এবং তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে। (৪২/৩৬)
>> যারা গুরুত্বর পাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধ বা গোস্বা অবস্থায়ও মাফ করে দেয়। (৪৩/৩৭)
>> যারা প্রতিপালকের আহ্বানে সাড়া দেয়; নামাজ প্রতিষ্ঠা করে; নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে কাজ সম্পাদন করা এবং তাদেরকে (জীবিকা স্বরূপ) যে রিজিক দিয়েছি তা হতে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে। (৪২/৩৮)
>> এবং যারা অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে। (৪২/৩৯) অর্থাৎ ‘যারা অত্যারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণে অপারগ নয়; প্রতিশোধ গ্রহণের শক্তি থাকা সত্ত্বেও তারা ক্ষমা করে দেয়াকে প্রাধান্য মনে করে। মক্কা বিজয়ের দিন প্রিয়নবি যেভাবে মক্কাবাসী অত্যাচারীদের ক্ষমা করেছিলেন।’
>> এবং মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ, সুতরাং যে ক্ষা করে দেয় ও আপোষ নিষ্পত্তি করে- তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে সুনির্ধারিত। নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লংঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (৪২/৪০)
মনে রাখতে হবে
(অন্যায়ভাবে) অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা (ন্যায় পথে) প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। (৪২/৪১)
আর (আল্লাহ তাআলা শুধুমাত্র) ওই সব লোকদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করে এবং দুনিয়াতে অহেতুক বিদ্রোহাত্মক আচরণ করে বেড়ায়। (পরকালে) তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। (৪২/৪২)
অবশ্যই যারা (এ সব অত্যাচারে) ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে; নিশ্চয় তা দৃঢ় সংকল্পের (সর্বোত্তম) কাজ। (৪২/৪৩)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ নেয়ামতে ভরপুর উপদেশগুলো নিজেদের জীবনে গ্রহণ করে দুনিয়া ও পরকালের সর্বোত্তম কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি