তাওহিদের গুরুত্ব ও ফজিলত
আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন ভালবেসে। তাই মানুষের কোনো অকল্যাণ আল্লাহ কখনও চান না। মানুষকে মানজিলে মাকছুদে পৌঁছে দিতে আল্লাহ অগণিত অসংখ্য হেকমত শিক্ষা দিয়েছেন। ক্ষমা পেতে রেখেছেন অসংখ্য সুযোগ। আজকের আমল আমরা কখনও আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করব না। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাইতো আল্লাহর ক্ষমার জন্য আমরা সব সময় অল্প হলেও কিছু আমল করব। আজ জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য হাদিসে কুদসি হতে (হাদিসের কথা সরাসরি আল্লাহর। যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের ভাষায় বর্ণনা করেছেন) একটি হাদিস তুলে ধরা হলো-
হযরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যে ব্যক্তি একটি কল্যাণমূলক কাজ করবে; তার জন্য রয়েছে অনুরূপ দশটি কল্যাণমূলক পুরস্কার এবং আমি তা (আরও) বাড়িয়ে দেব। আর যে ব্যক্তি একটি মন্দ কাজ করবে তার জন্য রয়েছে অনরুপ একটি মন্দ প্রতিদান অথবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব (যদি সে আমার নিকট অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চায় এবং ভবিষ্যতে মন্দ কাজ না করার অঙ্গিকার করে)।
আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) প্রতি এক বিঘত (আধা হাত) এগিয়ে আসবে; আমি তার (কল্যাণের) প্রতি এক হাত এগিয়ে আসব। আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) প্রতি এক হাত এগিয়ে আসবে; আমি তার (কল্যাণের) প্রতি এক বাও (প্রসারিত দুই বাহু পরিমাণ) এগিয়ে আসব। আর যে ব্যক্তি আমার (আনুগত্যের) প্রতি হেটে আসবে; আমি তার (কল্যাণের) দিকে দৌড়িয়ে যাব।
আর যদি কেউ আমার সঙ্গে শিরক না করে (অর্থাৎ আমার সঙ্গে শরিক অথবা অংশীদার সাব্যস্ত না করে) পৃথিবী সমান বিশাল গুনাহ (পাপ) নিয়েও আমার সামনে হাজির হয় (অর্থাৎ আমার নিকট ক্ষমা চায় ও তাওবা করে) তবে আমিও তার সামনে অনুরূপ (পৃথিবীসম) বিশাল ক্ষমা নিয়ে হাজির (উপস্থিত) হব (অর্থাৎ তার প্রতি বিশাল ক্ষমা প্রদর্শন করব)। (মুসনাদে আহমদ, মুসলিম, ইবন মাজাহ)
এই হাদিস থেকে শিক্ষা -
ক. বান্দাহকে ভাল কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য একটি নেক আমলের জন্য রয়েছে দশটি কল্যাণমূলক কাজের ঘোষণা;
খ. গুনাহের (পাপ) কারণে বান্দা যেন হতাশ না হয়; গুনাহ (পাপ) করার সঙ্গে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা;
গ. মানুষের মাঝে তাওবার গুরুত্ব ও ফজিলতের সংবাদ পৌঁছে নেক আমলে আগ্রহী করে তোলা। যা মানুষকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে।
ঘ. সর্বোপরি উপরের কথাগুলো স্মরণে রেখে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করে আল্লাহর একত্ববাদের (তাওহিদ) ঘোষণা দেয়া। অর্থাৎ আল্লাহ এক, একক ও অদ্বিতীয়। যার কোনো শরিক নাই। সৃষ্টির একমাত্র সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা। তাই মানুষের প্রতি কাজে আল্লাহকে স্মরণ করত সকল প্রকার অন্যায়, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন থেকে ফিরিয়ে রাখা। পাশাপাশি আল্লাহর আনুগত্যের শুকরিয়ায় সিজদায় মাথা অবনত করে দেয়া।
আমরা যদি এই হাদিস থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রে এ হাদিসের আলোচ্য বিষয় তাওহিদ তথা আল্লাহর একত্ববাদের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে পারি। সব শিরক ও অন্যায়মূলক কাজ থেকে সব মানুষকে বিরত রাখতে পারি এবং কল্যাণের কাজে এগিয়ে আসার উৎসাহ দিতে পারি তবেই আমাদের হাদিসের অধ্যয়ন হবে স্বার্থক। অর্জিত হবে আল্লাহর নৈকট্য ও পুরস্কার লাভের সৌভাগ্য। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমিন।
জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন।
এমএমএস/এসআইএস/এমএস