রমজান পরবর্তী মাস শাওয়াল ও আমাদের করণীয়
রহমত বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান চলে গেল। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের খুশীতে শাওয়াল মাসকে গ্রহণ করল মুসলমান। রমজানের কল্যাণ কামনার পর মুসলিমের অবস্থা ও কর্তব্য কি? রমজানের আমলভরা দিনগুলো বিদায় নেয়ার পর মুমিনের আমল তো এক দিনের জন্যও শেষ হওয়ার কথা নয়। যেহেতু যিনি রমজান মাসের মালিক, তিনি তো রমজান পরবর্তী বাকি মাসগুলোর ও মালিক।
আল্লাহ তাআলা- ‘আসমান জমিন সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে মাসগুলোর সংখ্যা হল বার। তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস।’ (সূরা আত ত্বাওবাহ : আয়াত ৩৬)
মুসলিম মুসলমানের কর্তব্য হল, রমজানে যে সব নেক আমলে অভ্যাস গঠন করেছে মুসলমান, সেই সব আমল বন্ধ না করে একটানা নিয়মিত করে যাওয়া। আল্লাহ বলেন, ‘মৃত্যু আসা অবধি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত করতে থাক।’ (সূরা হিজর : আয়াত ৯৯)
রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল হচ্ছে সেই আমল, যা নিয়মিত করে যাওয়া হয়; যদিও বা তার পরিমাণ কম হয়।’
বিদায় নিল সবরের মাস, সংযমের মাস, ত্যাগের মাস। এই সবর, সংযম, ত্যাগ হচ্ছে মু’মিনের সম্বল। বলাই বাহুল্য, এ মাসে মুসলমান অনেক প্রচেষ্টা ও শ্রম দিয়ে ইবাদত-বন্দেগি করেছে, তেমনি পরের মাসগুলোতেও যেন সেই প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম অব্যাহত থাকে। সমস্ত আমল এমন হওয়া উচিত, যেন সে রমজান মাসই অতিবাহিত করছে।
রোজার মাস বিদায় নেয়ার পর যারা রমজানের প্রতি ওয়াক্ত নামাজ, তারাবিহ, ইফতার, সাহরি ও ই’তিকাফসহ যাবতীয় নেক কাজগুলো যেভাবে আদায় করেছে, এখনও তারা নিয়মিতভাবে প্রতি ওয়াক্ত নামাজসহ রোজা পালন করবে এবং নফল নামাজ আদায় করবে। তবেই আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হবে অফুরন্ত রহমত, বরকত ও মাগফিরাত।
রমজান মাসে সব মুসলিমেরই নামাজের প্রতি থাকে প্রচণ্ড ঝোঁক। তাইতো আমরা অন্তত প্রতি ওয়াক্ত নামাজ জামাআতের সহিত আদায় করব। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের ময়দানে হিসাবের দিন সর্বপ্রথম নামাজেরই হিসাব নেয়া হবে। সুতরাং নামাজ সঠিক হলে তার অন্যান্য আমলও সঠিক বিবেচিত হবে। নচেৎ পরকালের বিপদের সীমা থাকবে না। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)
আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের অবস্থা যেন সেই মহিলার মতো না হয়ে যায়, যে নিজ পরিশ্রমে সূতা কাটে এবং তারপর নিজেই তা ছিঁড়ে কুটি কুটি করে ফেলে।’ (সূরা আন নাহল : আয়াত ৯২)
হে ঈমানদার মুসলমানগণ! এই রমজানের প্রচণ্ড পরিশ্রম ও ত্যাগের মাধ্যমে সিয়াম-সাধনার পর আমরা যেন আবার রমজান পূর্ববর্তী দিনগুলোতে ফিরে না যাই। আমরা উদাসিনতা পরিহার করি। পরকালের সফরের জন্য পথের সম্বল তৈরিতে কিছু সময় আল্লাহর পথে ব্যয় করি। বছরের বাকি ১১ মাস রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগাই। আগামী রমজান প্রাপ্তির আশায় আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানাই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কল্যাণ কাজে নিয়োজিত করুন। আমীন
জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। ইসলাম সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন।
এমএমএস/এমএস