ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

কুরআন তেলাওয়াতের সিজদা

প্রকাশিত: ০৬:১০ এএম, ০৭ জুলাই ২০১৫

পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিছু আয়াত নাযিল করেছেন। যে আয়াতগুলোর তেলাওয়াত করলে তেলাওয়াতকারী ও শ্রবণকারী উভয়ের উপর সিজদা ওয়াজিব হয়। আমরা জানি ওয়াজিব ত্যাগ করলে কবীরা গুনাহ হয়। এই গুনাহগুলো থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উচিত। এখন চলছে পবিত্র রমজান মাস। প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানই চান রমজানে কুরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে পুরো কুরআন কারীম খতম করতে। সুতরাং যারা কুরআন কারীম সম্পূর্ণ তেলাওয়াত করবে; তাদেরকে অবশ্যই সিজদা আদায় করতে হবে। আমরা জেনে নিই সিজদার আদায়ের নিয়ম, শর্তাবলী, সিজদার সূরা ও আয়াতগুলো-

কিভাবে সিজদাহ আদায় করব?
নিয়তের সহিত কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলে সরাসরি সিজদায় চলে যেতে হবে এবং নামাজের সিজদার মতো “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা” তিনবার পড়ে আবার আল্লাহু আকবার বলে সিজদা থেকে উঠে যাবে। যদি একাধিক সিজদার আয়াত পাঠ করে একাধিক সিজদা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ যে কয়টি আয়াত তিলাওয়াত করবে সে কয়টি সিজদা আদায় করতে হবে।

যারা সিজদাহ আদায় করব?
১. যদি নামাজে সিজদার আয়াত তেলওয়াত করে তবে তবে আয়াত তেলাওয়াত করার সাথে সাথেই সিজদায় চলে যেতে হবে। সিজদায় আদায় করে আবার দাঁড়িয়ে পরবর্তী কার্য সম্পাদন করবে।
২. কেউ যদি সিজদার আয়াতের অর্থ পড়ে সে ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি পড়বে তাকে সিজদা আদায় করতে হবে। আর যে ব্যক্তি শ্রবন করবে যদি জানে যে, এ আয়াতটি সিজদার আয়াত তবে তারও সিজদা আদায় করতে হবে।
৩. সিজদার আয়াত অন্য ভাষায় পড়লেও যে ব্যক্তি সিজদার আয়াত পড়বে তার উপর সিজদা আদায় করা ওয়াজিব। শ্রবণকারী বুঝলে সিজদা আদায় করতে হবে।

যারা সিজদাহ আদায় করব না?
১. নাবালক, মস্তিষ্কবিকৃত মানুষ (পাগল), হায়েজ (ঋতু¯্রাব অবস্থায়) নিফাসকালীন (সন্তান প্রবস পরবর্তী সময়) সময়ে, অমুসলিম ব্যক্তি  যদি সিজদার আয়াত শ্রবন করে তবে তার উপর সিজদা আদায় করা হুকুম নেই। পক্ষান্তরে এদের কাছ থেকে যদি কোনো মুসলিম সুস্থ লোক, সাবালক ও পবিত্রাবস্থায় থাকা মহিলারা সিজদার আয়াত শোনেন এবং বুঝতে পারেন যে এটি সিজদার আয়াত তবে তাদেরকে সিজদা আদায় করতে হবে।
২. সিজদার আয়াত তেলাওয়াতের ভঙ্গিতে পড়তে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি বানান করে করে সিজদার আয়াত এক অক্ষর এক অক্ষর করে পড়ে তবে পড়া এবং শোনা ব্যক্তি কাউকেই সিজদা আদায় করতে হবে না।

সিজদাহ আদায়ের শর্ত হচ্ছে-
১. সিজদাকারীকে অবশ্যই পবিত্রতা (অযু-গোসলের মাধ্যমে) অর্জন করতে হবে;
২. সতরে আওরাত অর্থাৎ নামাজের মতোই তার পোশাক পরিচ্ছেদ পরিধান করতে হবে;
৩. কিবলামুখী হতে হবে; নামাজের মতো পবিত্র স্থানে কিবলামুখী হতে হয়ে দাঁড়াতে হবে;
৪. অন্তরে কুরআন কারীমের আয়াত তেলাওয়াতের সিজদা আদায়ের নিয়ত থাকতে হবে;
৫. সিজদাকারীকে দু’হাত উঠিয়ে নামাজের মতো হাত বাঁধতে হবে না;
৬. রুকুর করা লাগবে না সরাসরি সিজদায় চলে যাবে;
৭. সিজদার এক আয়াত তেলাওয়াতে একটি সিজদাই আদায় করতে হবে। নামাজের মতো দুই সিজদা নয়।

সিজদার সূরা ও আয়াতগুলো-
১. সূরা আ’রাফ : আয়াত ২০৬;
২. সূরা রা’দ : আয়াত ১৫;
৩. সূরা নহল : আয়াত ৫০;
৪. সূরা বনী ইসরাঈল : আয়াত ১০৯;
৫. সূরা মারিয়াম : আয়াত ৫৮;
৬. সূরা হাজ : আয়াত ১৮;
৭. সূরা হাজ : আয়াত ৭৭ (শাফী);
৮. সূরা ফুরক্বান : আয়াত ৬০;
৯. সূরা নমল : আয়াত ২৬;
১০. সূরা সাজদাহ : আয়াত ১৫;
১১. সূরা সা’দ : আয়াত ২৪ (হানাফী);
১২. সূরা হামীম সাজদাহ : আয়াত ৩৮;
১৩. সূরা নজম : আয়াত ৬২;
১৪. সূরা ইনশিক্বাক্ব : আয়াত ২১;
১৫. সূরা আলাক্ব : আয়াত ১৯।

উপরোল্লিখিত আয়াতগুলো পড়লে এবং শুনলে আমাদেরকে সিজদা আদায় করতে হবে। আদায় না করলে গুনাহগার হতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সিজদার আয়াতগুলো তেলাওয়াতের সাথে সাথে সিজদাগুলো আদায় করে ওয়াজিব ত্যাগের গুনাহ থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

তথ্যসূত্র : ফতোয়ায়ে আলমগিরী ও সংগৃহীত

জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন

এমএমএস/পিআর