দ্বীনের পথে আহ্বানকারীকে যেমন হতে হবে
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি। আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার প্রতিনিধিত্ব তথা ইবাদত-বন্দেগি করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তার বিধান বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন এবং গোমরাহী থেকে বেঁচে থাকতে সতর্ক করেছেন।
আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। বিশেষ করে যারা দ্বীনের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছাবেন, তাদেরকে দ্বীনের যথাযথ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সব ধরনের অন্যায় কাজ থেকে নিজেদেরকে আগে শোধরাতে হবে।
নিজেকে সৎ কাজের জন্য নিবেদিতপ্রাণ করে গড়ে তুলতে হবে। খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ নিজে সঠিক না চললে অন্যকে সঠিক পথ দেখানো সম্ভব হবে না।
দ্বীনের দায়ীকে যেমন হতে হবে
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে একদিন এক ব্যক্তি এসে বলল, ‘আমি দ্বীনের দাওয়াতি কাজ করতে চাই।’ হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘তুমি যদি নিজেকে কুরআনের ৩টি আয়াতের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে পার; তাতে অপমানিত হওয়ার কোনো আশংকা না থাকে তবে তুমি দ্বীনের দাওয়াতি কাজ করতে পার।’
কুরআনের প্রথম আয়াত
‘তোমরা কি লোকদের উত্তম কাজের নির্দেশ দিচ্ছ আর নিজেদের কথা সম্পূর্ণ ভুলে যাচ্ছ? (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৪)
কুরআনের দ্বিতীয় আয়াত
‘তোমরা কেন এমন কথা বল, যা নিজেরা কর না?’ (সুরা সফ : আয়াত ০২)
কুরআনের তৃতীয় আয়াত
হজরত শোয়াইব আলাইহিস সালাম নিজ জাতির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আমি যে সব মন্দ কাজ করতে তোমাদেরকে নিষেধ করছি; সে সব কাজ আমি নিজে করব এমন উদ্দেশ্য আমার নেই। বরং এমন কাজ থেকে আমি দূরে থাকব এবং তোমরা আমার কথা ও কাজে কোনোরূপ ব্যতিক্রম দেখতে পাবে না।’ (সুরা হুদ : আয়াত ৮৮)
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু উল্লেখিত ৩টি আয়াতের ব্যাপারে দ্বীনের দাওয়াত প্রদানকারী আগ্রহী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এ আয়াতগুলোর ওপর কি তুমি আমল করেছ? ওই ব্যক্তি বলল, ‘না’।
তখন হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘যাও! আগে নিজেকে সৎকাজের আদেশ দাও এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখ।’
পরিশেষে...
দ্বীনের দাওয়াতি কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হলে, আগে নিজেকে তৈরি করতে হবে; আল্লাহর পথে ও মতে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। অন্যায় ও অসত্য থেকে বিরত থাকতে হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের দাওয়াতদানকারী হতে কুরআনের উল্লেখিত ৩টি আয়াতের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম