ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

সম্পদ নয় জ্ঞানী ও দক্ষতাসম্পন্নরাই বাদশাহ হওয়ার উপযুক্ত

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:১৬ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৭

বনি ইসরাইলের নবি ও রাসুল হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ইন্তেকালে পর কিছুদিন ধরে তাঁর অনুসারীরা সঠিক পথ ও মতের ওপর জীবন-যাপন করছিল। সময় যত অতিবাহিত হচ্ছিল ততই তাদের মাঝে শিরক এবং বিদাআত প্রসার হতে থাকে।

আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলের বাদশা নিযুক্ত করতেন নবি-রাসুলদের মাধ্যমে। রাজা-বাদশাহরা নবি-রাসুলদের আজ্ঞাবাহ থাকতেন এবং তাদের নির্দেশ মোতাবেক বনি ইসরাইলদের সঙ্গে নিয়ে একত্ববাদের পথের ওপর কাজ করতেন।

আর রাজা-বাদশাহ হতে নির্ধারিত একটি বংশ থেকে। হজরত মুসা আলাইহিস সালামের মৃত্যুর অনেক পর হজরত শিমবিল যখন নবুয়ত লাভ করলেন; তখন তারা তাঁকে মেনে নিতে পারছিল না। তার সত্যতা প্রমাণে তাঁকে বাদশাহ নির্বাচনের কথা বলেছিলেন।

তিনি প্রথমে বাদশাহ নির্বাচন থেকে বিরত থাকার কথা বলেছিলেন এই বলে যে, তোমাদের জন্য বাদশাহ নির্বাচন করলে তোমরা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে; যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। তখন তারা বলেছিল, ‘না’ আমরা তাঁর আনুগত্য করব এবং একত্ববাদের পক্ষে জেহাদে অংশগ্রহণ করব।

যখনই হজরত শিমবিল তালুতকে বাদশাহ নির্বাচিত করলেন তখনই তারা তাঁর বিরোধীতা করা শুরু করে। সে ঘটনা আল্লাহ তাআলা কুরআনে মুসলিম উম্মাহর শিক্ষার জন্য তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

Quran

আয়াতের অনুবাদ

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা হজরত শিমবীল কর্তৃক তালুতকে বনি ইসরাইলের জন্য বাদশাহ নির্বাচনের কথা তুলে ধরেছেন। হজরত শিমবিল বাদশাহ নির্বাচনের আগে যে আশংকা করেছিলেন; তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ আয়াতে। বনি ইসরাইল তালুতকে বাদশাহ হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে।

প্রথমত কারণ হলো-
যে বংশ থেকে নিয়মিত বাদশাহ নির্বাচিত হতো। তালুত সে বংশের লোক ছিল না। শাহী খান্দানের লোক ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন সাধারণ সৈনিক। আর ইয়াহুদার বংশধররাই ছিল শাহী খান্দানের।

তাই তাঁর বাদশাহ নিযুক্তির বিষয়টি বনি ইসরাইলরা মেনে নিতে পারেনি। তখন তারা এ প্রশ্ন উত্থাপন করল যে, তালুত বাদশাহ হওয়ার উপযুক্ত নয়; বাদশাহ হওয়ার উপযুক্ত আমরা।’

দ্বিতীয়ত তারা দাবি করল-
বাদশাহ হওয়ার জন্য প্রচুর ধন-সম্পদশালী হতে হয়। তার কাছে প্রচুর অর্থ সম্পদও নেই। সে একজন দরিদ্র ব্যক্তি। তালূতকে বাদশাহ হিসেবে গ্রহণ না করার মাধ্যমে তারা আল্লাহর হুকুম অমান্য করল।

নবি হজরত শিমবিল আলাইহিস সালাম তাদেরকে জবাব দিলেন, ‘তালূতকে বাদশাহ নিযুক্ত করা আমার কাজ নয় যে, আমি এতে কোনো প্রকার পরিবর্তন করতে পারব বরং এটি আল্লাহর হুকুম; যা মেনে নেয়া আমাদের সবার একান্ত কর্তব্য।

তালূত তোমাদের মধ্যে বড় আলেম বা জ্ঞানবান ব্যক্তি এবং শিক্ষিত ব্যক্তি। অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যক্তি। তিনি দেখতে যেমন সুন্দর; তেমনি যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী।

বাদশাহ হওয়ার যোগ্যতা
আর হজরত শিমবিলে এ কথা যা কুরআনে উঠে এসেছে যে, বাদশাহ হতে হলে তাকে জ্ঞানী, শক্তিশালী, দেখা-শুনায় সুন্দর ও আকর্ষণীয় এবং তীক্ষ্ণ মেধাবী ও বুদ্ধিমান হতে হবে।

উল্লেখিত আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, ধন-সম্পদ বাদশাহ হওয়ার যোগ্যতা নয়। বরং জ্ঞান, প্রজ্ঞা, মেধা শারীরিক সক্ষমতাই বাদশাহ হওয়ার উপযুক্ত অনুসঙ্গ। যার দ্বারা একজন ব্যক্তি রাষ্ট্র পরিচালনায় যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের আদেশ ও উপদেশ দৈনন্দিন জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। অন্যান্য নবির উম্মতদের মতো আল্লাহর বিধান লংঘনের মারাত্মক অপরাধ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

আরও পড়ুন