তাওবা কবুলের জন্য যে শর্তগুলো জরুরি
প্রতিটি গোনাহ থেকেই তাওবা করা আবশ্যক কর্তব্য। কেননা মানুষ নিজেদের অপরাধ তথা গোনাহের কারণে দয়াময় আল্লাহর রহমত ও বরকত থেকে বঞ্চিত হয়।
মানুষ গোনাহমুক্ত জীবন-যাপন করে রহমত ও বরকতের অধিকারী হোক আল্লাহ তাআলা তা-ই চান। গোনাহ বা পাপমুক্ত জীবন লাভে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী। যা পালন করা খুবই জরুরি।
তবে গোনাহ বা পাপ যদি আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার হয় এবং তার সঙ্গে কোনো বান্দার হক সম্পৃক্ত না থাকে তবে তা থেকে তাওবা করার জন্য ৩টি শর্ত পালন করা জরুরি। আর তাহলো-
প্রথম শর্ত
মানুষ নিজেকে যাবতীয় গোনাহ এবং তার নাফরমানি থেকে বিরত রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলা অপরিসীম দয়াবান। যদি কেউ আল্লাহর নাফরমানি ও অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকে তবে তাঁর জন্য তাওবার দরজা বন্ধ থাকবে। তাই ওই ব্যক্তি তওবা বা অনুশোচনার মাধ্যমেই গোনাহ মাফ পেতে পারে।
দ্বিতীয় শর্ত
মানুষ নিজের গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে। আল্লাহর কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করে তাওবা করতে হবে। আর মানুষ তওবা বা অনুশোচনার মাধ্যমেই গোনাহ বা নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে মুক্তি লাভ করতে পারে।
তৃতীয় শর্ত
পুনরায় গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। গোনাহমুক্ত জীবন লাভে তাওবা ও ইসতেগফার ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। তাওবা মানুষকে শুধুমাত্র গোনাহমুক্তই করে না বরং মানুষকে যাবতীয় হতাশা থেকে নিষ্কৃতি দেয় এবং কল্যাণের পথে আশাবাদী করে তোলে।
এ তিনটি শর্তের মধ্যে যদি কোনো একটি অপূর্ণ থাকে; তবে তাওবা কখনো বিশুদ্ধ হবে না। তাওবার ফলাফল লাভ করা যাবে না।
তবে গোনাহ বা পাপ যদি কোনো বান্দার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়; তবে সেক্ষেত্রে উল্লেখিত ৩টি শর্তের সঙ্গে আরো ১টি শর্ত পালন করা জরুরি। আর তাহলো-
চতুর্থ শর্ত
গোনাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবশ্যই হকদার ব্যক্তির হক বা অধিকার আদায় করতে হবে। কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে যদি অন্যায়ভাবে ধন-সম্পদ ছিনিয়ে নেয় তবে তা ফেরত দিতে হবে।
অনুরূপভাবে কেউ যদি কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেয়; তবে অপবাদ আরোপকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে ক্ষমা নিতে হবে।
অথবা মিথ্যা অপবাদ আরোপের অপরাধের হদ বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। এমনকি কারো অগোচরে গীবত বা নিন্দাবাদ করা হলে সে জন্যও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
পরিশেষে...
দুনিয়ায় যাবতীয় গোনাহের কাজ থেকে তাওবা করা আবশ্যক। তওবা বা অনুশোচনার জন্য উল্লেখিত শর্তগুলো যেমন জরুরি তেমনি আল্লাহর সান্নিধ্য ও নৈকট্য লাভে তাওবার বিকল্প নেই।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গোনাহমুক্ত জীবন লাভে উল্লেখিত শর্তগুলো যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সফলতায় জীবনে কখনও আল্লাহর নাফরমানিতে নিজেকে না জড়িয়ে গোনাহমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আইআই