ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

হজরত উম্মে সালমার বিয়ে এবং উত্তম বিনিময়ের দোয়া

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:৫৮ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তাঁর দোয়া অনুযায়ী উত্তম জিনিস দান করেন। হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা দুনিয়াতেই পেয়েছিলেন জীবনের উত্তম বিনিময়। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতদেরকে উত্তম বিনিময় লাভের দোয়া শিখিয়েছিলেন।

হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা সে দোয়ার বরকতে দুনিয়াতেই পেয়েছেন জীবনের সেরা বিনিময়। তিনি তাঁর স্বামীর মৃত্যুতে আল্লাহ তাআলার নিকট উত্তম বিনিময় লাভের দোয়া করেছিলেন; আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করেছিলেন।

হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, একদিন আমার স্বামী আবু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবার থেকে আমার নিকট আসেন এবং অত্যন্ত খুশী মনে বলেন, ‘আজ আমি এমন একটি হাদিস শুনেছি; যা শুনে আমি খুবই খুশী হয়েছি।

হাদিসটি হলো- যখন কোনো মুসলমানের ওপর কোনো কষ্ট বা বিপদ আসে এবং সে পড়ে-

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আঝিরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলুফ লি খাইরাম মিনহা।'
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার এ বিপদে আমাকে প্রতিদান দিন এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।'

এ দোয়ার বরকতে তখন আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাঁর বান্দাকে উত্তম বিনিময় ও প্রতিদান দিয়ে থাকেন।

হজরত উম্মে সালমা বলেন আমি দোয়াটি মুখস্ত করি। অতঃপর হজরত আবু সালমার ইন্তেকাল হলে আমি ‌ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন' পাঠ করি এবং এ দোয়াটিও পড়ি। কিন্তু আমার ধারণা হয় যে, আবু সালমা অপেক্ষা আর ভালো লোক আমি কাকে পাবো?

হজরত উম্মে সালমার দোয়া ও বিয়ে

marry

উচ্চারণ : ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন; আল্লাহুম্মা আঝিরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলুফ লি খাইরাম মিনহা।'

আমার ইদ্দত অতিবাহিত হলে আমি একদিন একটি চামড়া সংস্কার করতে থাকি। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমন করেন এবং ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চান। আমি চামড়াটি রেখে হাত পরিষ্কার করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভিতরে আসার আবেদন করি। তাঁর জন্য নরম আসনে বসার ব্যবস্থা করি।

তিনি আমাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! এটাতো আমার জন্য বড়ই সৌভাগ্যের কথা। কিন্তু প্রথমত আমি একজন লজ্জাবতী নারী। আমি আশংকা করছি, না জানি আমার দ্বারা আপনার মতের বিপরীত কোনো কাজ ঘটে যায় এবং এ কারণে আল্লাহ তাআলা আমাকে কোনো শাস্তি দেন কিনা! দ্বিতীয়ত আমি একজন বয়স্ক নারী। তৃতীয়ত আমার ছেলে মেয়ে আছে।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দেখ!‍ আল্লাহ তাআলা তোমার এ অনর্থক লজ্জা দূর করে দেবেন। আর বয়স আমারওতো কম নয় এবং তোমার ছেলে মেয়ে যেন আমারই ছেলে মেয়ে।

আমি এ কথা শুনে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই। অতঃপর আল্লাহর নবির সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে যায়। আর এ দোয়ার বরকতে আমি আমার পূর্ব স্বামী আবু সালমা অপেক্ষা উত্তম স্বামী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেয়ে যাই। সুতরাং সমুদয় প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার জন্য। (মুসনাদে আহমদ)

পরিশেষে...
কোনো বিপদে হতাশ না হয়ে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য কামনাই হলো মুমিন বান্দার একান্ত কর্তব্য। কেননা আল্লাহর সাহায্যই বান্দাকে দুনিয়া ও পরকালের একমাত্র পাথেয়।

যে বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করে বা সাহায্য প্রার্থনা করে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে সব বিপদাপদ থেকে হেফাজত করেন। ক্ষয়-ক্ষতি থেকে হেফাজত করেন আবার উত্তম প্রতিদানও দান করেন।

আল্লাহ তাআলা এ ভাবেই হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে প্রিয়নবি সঙ্গে বিবাহের ব্যবস্থা করলেন। আর তিনি পেলেন জীবনের সবচেয়ে উত্তম বিনিময় প্রিয়নবিকে।

এমএমএস/আইআই

আরও পড়ুন