ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

আরাফার দিনে হজ পালনকারীদের করণীয়

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৮:৫৫ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৭

হজ ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। ইসলামের পঞ্চম রোকনও এটি। আর্থিক শারীরিক ও মানসিকভাবে সামর্থবান প্রত্যেকের ওপর হজ ফরজ। আর হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হলো আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে খোতবা শোন এবং দোয়া-ইসতেগফারে ৯ জিলহজ অতিবাহিত করা।

আরাফাতের ময়দানের এক পাশে রয়েছে জাবালে রহমত। যেখানে দাঁড়িয়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সর্বশেষ বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।

জাবালে রহমতে দাঁড়িয়ে দেয়া ভাষণেই তিনি ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ কারণেই এ ময়দানে উপস্থিতির মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিমরে ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় হয় এবং আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে মুসলিম উম্মাহ রহমত বরকত ও মাগফেরাত লাভ করে।

আগামীকাল ৩১ আগস্ট (সৌদিতে ৯ জিলহজ) হজের মূল রোকন অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে। ৯ জিলহজ বাদ ফজর হতেই আরাফার ময়দানের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রত্যেক হাজিকে এ দিন সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ার আগেই অর্থাৎ জোহরের আগেই এসে হাজির হওয়া আবশ্যক।

এ ময়দানে প্রদত্ত খোতবা শ্রবণ করে আল্লাহ তাআলার দরবারে দোয়া ও ইসতেগফারের মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করতে হয়। এ দিনটি আল্লাহ তাআলার নিকট অন্য দিনগুলোর থেকে আলাদা এবং এ দিনের ইবাদাত-বন্দেগির সাওয়াব অন্য দিনের তুলনায় দিগুণ।

আরাফাতের ময়দানে হজ পালনকারীদের জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। যা পালন করা অত্যন্ত সাওয়াবের কাজ।

আরাফাতের ময়দানে করণীয়

>> মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে একনিষ্ঠ তাওবার সঙ্গে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওয়ানা হওয়া।

>> মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে আসার নিয়তে গোসল করা; সম্ভব না হলে ওজু করে আরাফায় প্রবেশ করা।

>> ৯ জিলহজ সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার আগেই অর্থাৎ ১২টার পর থেকে সূর্যাস্ত (সন্ধ্যা) পর্যন্ত অবস্থান করা হজের গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম ফরজ কাজ।

>> নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে নামিরাসহ আরাফাতের ময়দানের যে কোনো জায়গায় অবস্থান করা এবং নিজ নিজ জায়গায় নামাজ আদায় করা। অর্থাৎ জোহরের সময় জোহর এবং আসরের ওয়াক্তে আসর নামাজ আদায় করার এবং দোয়া-ইসতেগফার করা।

উল্লেখ্য যে-
জামাআতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মসজিদে নামিরায় জোহর ও আসরের জামাআত এক আজানে দুই ইকামাতে (জময়ে’ তাক্বদিম) একত্রে আদায় করলে একত্রে দুই ওয়াক্ত আদায় করা করা যাবে। কিন্তু তাবুতে বা অন্য কোনো স্থানে একত্রে আদায় না করে আলাদা আলাদা আদায় করা।

>> আরাফার দিনে দু’হাত উত্তোলন করে বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণ যে দোয়া পাঠ করেছেন, তা পাঠ করা। আরাফার ময়দানের অন্যতম দোয়া হলো-

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আ’লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।’

>> পঞ্চ ইন্দ্রিয় তথা চোখ, কান, নাক, জিহ্বা তথা স্পর্শসহ যাবতীয় হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা। হাদিসের পরিভাষায় যে ব্যক্তি তাঁর কান, চোখ ও জিহ্বাকে সঠিক কাজে ব্যয় করবে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে ক্ষমা করে দিবেন।

>> বিশেষ করে কুরআন তেলাওয়াত ও বিশ্বনবির প্রতি দরূদ প্রেরণ হলো আরাফাতের ময়দানের সর্বোত্তম আমল।
>> সম্ভব হলে আরাফাতের ময়দানে আল্লাহ তাআলার সিজদায় দোয়া ও ইসতেগফারের মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা।
>> সূর্যাস্তের পর সঙ্গে সঙ্গে মাগরিব না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওয়ানা হওয়া;

পরিশেষে…
আরাফার ময়দানে মুসলিম উম্মাহ ‘লাব্বাইক আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা- শারিকা লাক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে। এক স্বর্গীয় আবহ তৈরি হবে পুরো ময়দান জুড়ে।

সকল হজ পালনকারীর পরনে থাকবে সাদা দুই খণ্ড বস্ত্র। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমতপ্রাপ্তি ও নিজের গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহ তাআলার আলিশান দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফরিয়াদ জানাবেন সমবেত মুসলমানরা।

আল্লাহ তাআলা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মুসলিম উম্মাহকে তাঁর দরাবের রহমত, বরকত, কল্যাণ লাভ এবং গোনাহ থেকে পরিত্রাণ দান করুন। নিষ্পাপ হিসেবে কবুল করুন।

হজ্জে মাবরূর কবুল করুন। হজ পরবর্তী বাকি দিনগুলো সঠিক ইসলামের আলোকে নিজেদের জীবন পরিচালনা করে ইসলামের আলোকে আলোকিত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আইআই

আরও পড়ুন