মানুষের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা
আল্লাহ তাআলার শ্রেষ্ঠ ও প্রিয় সৃষ্টি হলো মানুষ। আর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা বেশি থাকাই স্বাভাবিক। সাধারণত যে জিনিস বেশি দরদ দিয়ে তৈরি হয়, সে জিনিসের প্রতি ভালোবাসাও বেশি থাকে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি মানুষের প্রতি স্নেহশীল ও দয়াময়।’ আল্লাহর এ স্নেহ বা দয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা বা প্রকাশ করে দেখানো মানুষের দ্বারা অসম্ভব। আল্লাহর স্নেহ বা মায়া-মমতা মানুষকে বুঝানোর জন্য তাফসিরে ইবনে কাসিরে একটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসটি তুলে ধরা হলো-
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
এক বন্দিনী স্ত্রীলোকের শিশু তার থেকে আলাদা হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বন্দিনী স্ত্রী লোকটিকে দেখেন যে, সে পাগলের মতো তার শিশুটিকে খুঁজছে। মহিলাটি তার শিশুকে খুঁজে না পেয়ে বন্দিখানায় সে যে শিশুকেই দেখতে পায়, তাকেই গলা জড়িয়ে ধরে।
অবশেষে সে তার সন্তানকে পেয়ে যায়। ফলে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে এবং লাফিয়ে গিয়ে তাকে কোলে উঠিয়ে নেয়। অতপর তাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে সোহাগ করতে থাকে এবং মুখে দুধ দেয়।
(বন্দিনী মহিলার) এ অবস্থা দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাগণকে বললেন, আচ্ছা বলতো এই স্ত্রী লোকটি কি তার এই শিশুটিকে আগুনে নিক্ষেপ করতে পারে? তাঁরা (সাহাবাগণ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনোই না!
তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! এই মা তার শিশুর ওপর যতটা স্নেহশীল, আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার ওপর এর চেয়ে বহুগুণে স্নেহশীল ও দয়ালু, অতীব মেহেরবান, অনন্ত অসীম তাঁর দয়ামায়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির)
আল্লাহ তাআলা এ কারণেই কুরআনে বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল ও অতীব দয়াময়।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৪৩)
মুসলিম উম্মাহর উচিত আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা ও স্নেহ-মমতা লাভ করতে তাঁর নাজিলকৃত সব বিধি-বিধান যথাযথ পালন করা। তাঁর অবাধ্য না হওয়া। ইসলামের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর স্নেহ ও মায়া-মমতার উপলব্ধি করে তাঁর অনুগ্রহের শুকরিয়া আদায় করে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক সঠিক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর